আগস্ট ০৫, ২০২২ ০০:২৫ Asia/Dhaka
  • মহান আশুরা ও শোক প্রকাশের সংস্কৃতির উৎস

শোক প্রকাশ মানুষের প্রকৃতির অংশ। বলা হয়, হাবিলকে যখন তার ভাই কাবিল হত্যা করেছিল তখন হযরত আদম ও হাওয়া (আ.) কেঁদেছিলেন। হযরত নুহ (আ.) কেঁদেছিলেন শত শত বছরের অবিচার ও নিপীড়ন দেখে।

ইউসুফ (আ.)-কে হারানোর শোকে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন হযরত ইয়াকুব (আ.)। ইয়াহিয়া নবী (আ.)’র শাহাদতের ঘটনায় কেঁদেছিলেন বনি ইসরাইলের সৎ ও ধার্মিক ব্যক্তিরা।

“তীব্র ব্যথায় ঢেকে ফেলে মুখ দিনের সূর্য অস্তাচলে

ডোবে ইসলাম –রবি এজিদের আঘাতে অতল তিমির তলে,

কলিজা কাঁপায়ে কারবালা মাঠে ওঠে ক্রন্দন লোহু সফেন

ওঠে আসমান জমিনে মাতম ; কাঁদে মানবতা হায় হোসেন”।। (ফররুখ)

***                         ***                     ***

‘মহররমের চাঁদ এল ওই কাঁদাতে ফের দুনিয়ায়

ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা ওয়া হোসেনা তারই মাতম শোনা যায়’।

***                         ***                     ***

‘কুল মাখলুক কাদিয়ে ওই এল মহররম

হায় হোসেন হায় হোসেন উঠল রে মাতম’

***                         ***                     ***

‘সেই সে কারবালা সেই ফোরাত নদী কুল -মসলিম –হৃদে জাগিছে নিরবধি’

ফোরাতের পানিতে নেমে ফাতেমা দুলাল কাঁদে অঝোর নয়নে রে।

দু'হাতে তুলিয়া পানি ফেলিয়া দিলেন অমনি পড়িল কি মনে রে।।

দুধের ছাওয়াল আসগর এই পানি ছাহিয়ে রে দুষ্মনের তীর খেয়ে বুকে ঘুমাল খুন পিয়ে রে,

শাদীর নওশা কাসেম শহীদ এই পানি বহনে রে।।

এই পানিতে মুছিল রে হাতের মেহেদী সকীনার,

এই পানিরই ঢেউয়ে ওঠে তারি মাতম ... (নজরুল)

২৫ বছরের দাম্পত্য জীবনের সঙ্গী খাদিজা (সা.)’র ইন্তিকালের পর রাসূল (সা.) যখনই তাঁর কথা স্মরণ করতেন তখনই কাঁদতেন। ইসলামের জন্য সব সম্পদ বিলিয়ে দিয়েছিলেন এই মহীয়সী নারী। ইসলাম প্রচারের প্রাথমিক দিনগুলোতে তিনিই ছিলেন রাসূল (সা.)’র একমাত্র ও প্রথম বয়স্ক সমর্থক। প্রিয়তম চাচা ও অভিভাবক আবু তালিব (রা.)’র ইন্তিকালেও কেঁদেছিলেন বিশ্বনবী (সা.)। রাসূল (সা.)’র প্রতি তাঁর সহযোগিতা ছিল ইসলামের প্রাথমিক বিকাশের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। এই চাচার স্ত্রী হযরত ফাতিমা বিনতে আসাদ (সা.) রাসূলকে ইয়াতিম শিশু হিসেবে নিজের সন্তানের মতই লালন করেছিলেন। মদীনায় তাঁর মৃত্যুতেও কেঁদেছিলেন রাসূল (সা.)। তিনি নিজে তাঁকে কবরে শায়িত করেন। পবিত্র কাবা ঘরের ভেতরে আমিরুল মুমিনিন আলী (আ.)-কে জন্মদানের সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন এই মহীয়সী নারী।

বিশ্বনবী (সা.) ওহদের যুদ্ধে তাঁর প্রিয় চাচা ও অন্যতম প্রধান অভিভাবক হযরত হামজা (রা.)’র শাহাদতের ঘটনায়ও কেঁদেছিলেন।[ আবু সুফিয়ানের কুখ্যাত স্ত্রী হিন্দার (ইয়াজিদের দাদী)  নির্দেশে তাঁকে শহীদ করা হয়েছিল, হিন্দা তার লাশ কেটে কলিজা বের করে চিবিয়েছিল।] শুধু তাই নয়, রাসূল (সা.) যখন ওহুদ থেকে মদীনায় ফিরে দেখেন অনেকেই শহীদদের জন্য শোক প্রকাশ করছেন তখন তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, হায়! আমার চাচার জন্য কেউই শোক প্রকাশ করছে না। ফলে মুসলমানরা তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করেন। কারবালার ঘটনার আগ পর্যন্ত হযরত হামজা (রা.)-কে বলা হতো শহীদদের সর্দার। রাসূল (সা.)’র ওই সুন্নাত আজও পালন করা হয় মিশরে। মিশরের মুসলমানরা নিজেদের মৃত ব্যক্তির জন্য শোক প্রকাশের আগে হযরত হামজা (রা.)’র মর্মান্তিক শাহাদতের কথা স্মরণ করে শোকার্ত হন।

হযরত হামজা (রা.) শহীদ হয়েছিলেন রাসূল (সা.)’র চোখের সামনে। কিন্তু বহু দূরের যুদ্ধক্ষেত্রে শহীদ হওয়া সাহাবী ও চাচাত ভাই হযরত জাফর বিন আবু তালিব (রা.)’র জন্যও চোখের পানি ফেলেছেন দয়ার নবী (সা.)। তিনি তার  ইয়াতিম হওয়া শিশু সন্তানদের সান্ত্বনা দেন এবং তাদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন।

হযরত আলী আসগর (আ)’র শাহাদতের স্মরণে বিশেষ শিশু সমাবেশ

রাসূল (সা.) তাঁর পুত্র ইব্রাহিমের স্বাভাবিক মৃত্যুতেও শোকাহত হয়েছিলেন। তিনি নিয়মিত তাঁর কবর জিয়ারত করতেন এবং সেখানে ফাতিহা পাঠ করতেন।  এভাবে রাসূল (সা.) মুসলমানদেরকে শিখিয়ে গেছেন কবর জিয়ারতের পদ্ধতি। রাসূল (সা.) কখনও কোনো মুসলমানের মৃত্যুর খবর বা শাহাদতের খবর শুনে আনন্দিত হননি। শহীদদের জন্য তিনি শুধু চোখের পানি ফেলেননি। বরং মানুষ তাঁর কান্নার আওয়াজও শুনতে পেয়েছে। আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.) রমজান মাসে শহীদ হবেন এই ভবিষ্যদ্বাণীর ঘোষণা দিয়েও  রাসূল (সা.) কেঁদেছেন।

প্রিয় নাতি ইমাম হুসাইন (আ.) শহীদ হবেন জিবরাইলের মাধ্যমে তা জানতে পেরেও বিশ্বনবী (সা.) কেঁদেছেন। সুন্নি হাম্বালি মাজহাবের প্রধান ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল ‘আল মুসনাদ’ বইয়ে একটি বিখ্যাত ঘটনা বা হাদিস উল্লেখ করেছেন। ঘটনাটি হল, মুহাম্মাদ বিন উবাইদ বলেছেন শারহাব বিন মালিক থেকে, তিনি জেনেছেন আবদুল্লাহ বিন নুজাই থেকে, নুজাই জেনেছেন তার বাবার কাছ থেকে যে, তিনি হযরত আলী (আ.)’র সঙ্গে যাচ্ছিলেন সিফফিনের দিকে (বিদ্রোহী মুয়াবিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য)। যখন তাঁরা নেইনাভা বা নিনেভায় পৌঁছলেন তখন তাঁরা উচ্চস্বরে চিতকার করে বললেন: “হে আবা আবদুল্লাহ! ধৈর্য ধর। হে আবা আবদুল্লাহ! ধৈর্য ধর ফোরাত নদীর পাশে।” নুজাইর বাবা তখন বললেন: কেন এ কথা বললেন? হযরত আলী (আ.) বললেন: একদিন আমি রাসূল (সা.)-এর কাছে গিয়ে দেখি তিনি কাঁদছেন। আমি প্রশ্ন করলাম: হে আল্লাহর নবী কেন আপনি ব্যথিত হলেন? রাসূল (সা.) বললেন: কিছুক্ষণ আগে জিবরাইল এসেছিলেন। তিনি আমাকে জানালেন যে হুসাইন (আ.) ফোরাত নদীর পাশে নিহত হবে। তখন তিনি অর্থাত রাসূল (সা.) বললেন: তুমি কি তাঁর নিহত হওয়ার স্থানের মাটির ঘ্রাণ নিতে চাও। আমি বললাম: হ্যাঁ। তিনি তাঁর হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং এক মুঠো মাটি আমাকে দিলেন। ফলে আমার চোখ থেকেও পানি গড়িয়ে পড়তে লাগল অনিয়ন্ত্রিতভাবে।

হযরত ইমাম হাসান মুজতবা (আ.) যখন আমির মুয়াবিয়ার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে বিষপ্রয়োগের মাধ্যমে শাহাদতের সম্মুখীন হন, তখন ছোট ভাই ইমাম হুসাইন কাঁদছিলেন। এ অবস্থায় বড় ভাই তাঁকে বলেছিলেন, “তুমি আমার জন্য কেঁদ না, বরং তোমার শাহাদাতের ঘটনার চেয়ে  বেশি মর্মান্তিক বা নৃশংস ও শোকাবহ কোনো ঘটনা ঘটবে না এ বিশ্বে।”

শৈশব থেকেই কারবালার চেতনা লালন করে ইরানি শিশুরা

শহীদদের সর্দার হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র মর্মান্তিক শাহাদাত নিয়ে যিনি সর্ব প্রথম শোকগাঁথা রচনা করেছেন তিনি হলেন হযরত যেইনাব (সা.)।
“হে মুহাম্মাদ (সা.)! হে মুহাম্মাদ (সা.)! আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতারা তোমার ওপর দরুদ ও সালাম পাঠায়। আর এই তোমার আদরের হুসাইন, কী ভীষণভাবে লাঞ্ছিত, অবহেলিত, রক্তাপ্লুত খণ্ডিত লাশ হয়ে আছে! আল্লাহর কাছে নালিশ জানাচ্ছি।
হে মুহাম্মাদ (সা.)! তোমার কন্যারা আজ বন্দিনী, তোমার জবাই করা পরিবার আজ অপেক্ষা করছে পূবের হাওয়ার জন্য, কখন ধুলো এসে তাঁদের ঢেকে দেবে!”

হযরত যেইনাব (সালামুল্লাহি আলাইহার) মর্মভেদী বিলাপ শত্রু-মিত্র সবাইকে অশ্রু সজল করে তুলেছিল। হযরত যেইনাব (সা.)’র বিলাপ ও বাগ্মীতাপূর্ণ ভাষণ কাঁপিয়ে তুলেছিল কুফায় ইবনে জিয়াদের দরবার এবং দামেস্কে ইয়াজিদের দরবার। তাঁর ভাষণ জনগণের ঘুমিয়ে পড়া চেতনায় বিদ্যুতের প্রবাহ ছড়িয়ে দেয়। ফলে ভীত-সন্ত্রস্ত ইয়াজিদ নবী-(সা.)’র পরিবারকে মুক্তি দেয়ার নির্দেশ দেয়। ফলে হযরত যেইনাব (সা.)ই সর্বপ্রথম কারবালার শহীদদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে শোক-অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে সক্ষম হন। দামেস্কেই একটি বাড়ী শোক-সমাবেশের স্থান হিসেবে ঠিক করা হয়।

দামেস্কের অনেক মহিলা আসলেন সেই শোক অনুষ্ঠানে। কিন্তু তারা ছিল উৎসবের সাজে সজ্জিত। হযরত যেইনাব (সা.) তাদেরকে শোকের পোশাক পরে আসতে বলেন। ফলে তারা অলঙ্কার ও সাজ-সজ্জা ছেড়ে কালো পোশাক পরে ফিরে আসেন। ইতিহাসে সেটাই ছিল নবী (সা.) পরিবারের জন্য প্রথম আনুষ্ঠানিক শোক-পালন। এভাবে চালু হয় আশুরার শোক পালনের প্রথা যা ছড়িয়ে পড়ে গোটা মুসলিম জগতে। 

এভাবে শাহাদাত মুসলিম সমাজের প্রাণশক্তি ও জীবনের সঞ্চার করে। কারবালার বীর শহীদান হয়ে পড়েন আগের চেয়েও জীবন্ত। কারবালায় সংঘটিত মর্মান্তিক ও বীরত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর প্রতিটি মুহূর্তের বর্ণনা এভাবেই ইতিহাসে রেকর্ড হয়ে গেছে শোক-গাঁথা ও বিলাপের সুবাদে।

নিজ নিবাস মদীনায় ফিরে এসে হযরত যেইনাব (সা.) কারবালার ট্র্যাজিক ঘটনা প্রচার ও শোক-প্রকাশ অব্যাহত রাখেন। ফলে জনগণ সচেতন হয়ে উঠতে থাকে এবং হুসাইন (আ.)-কে যথাসময়ে সাহায্য করতে না পারার জন্য তারা বিবেকের দংশনে জ্বলতে থাকে।

কারবালায় নবী (সা.) পরিবারের ওপর হত্যাযজ্ঞের ও চরম নির্যাতনের খবর আগেই মদিনায় পৌঁছে গিয়েছিল। সেখানে রাসূল (সা.)’র স্ত্রী উম্মুল মুমিনিন উম্মে সালমা (সা.) স্মরণ করেন রাসূল (সা.)র সেই ভবিষ্যদ্বাণী যা তিনি তাঁর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে বলেছিলেন ৫০ বছর আগে। মুমিনদের জননী কাঁদলেন ও শোক প্রকাশ করলেন। পুরো মদীনা শহরে ধ্বনিত হতে লাগল শোকের মাতম “ইয়া হুসাইন, ইয়া হুসাইন”।

শোকাহত ইরানি নারীদের একাংশ

হযরত আলী (আ.)’র বিধবা স্ত্রী উম্মুল বানিন (সা.) ছিলেন হযরত আবুল ফজল আব্বাস (রা.)’র মাতা। অর্থাৎ হযরত আব্বাস (রা.) ছিলেন হযরত ইমাম হুসাইন (আ.)’র সৎ ভাই। তিনি কারবালায় ইমাম শিবিরের অন্যতম প্রধান সেনাপতি ও পতাকাধারী ছিলেন। শত্রুদের চরম হামলা প্রতিহত করে তিনি পানি আনার চেষ্টা করেছিলেন। ফোরাতেও নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রায় তিন দিন ধরে তৃষ্ণার্ত থাকা সত্ত্বেও ভাই ইমাম হুসাইনসহ ইমাম শিবিরের সবার তৃষ্ণার্ত অবস্থার কথা ভেবে তিনি পানি পান করেননি। মশক ভরে পানি আনার পথে তাঁর দুই হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল শত্রুদের হামলায়। তা সত্ত্বেও তিনি দাঁত দিয়ে মশক কামড়ে ধরে ইমাম শিবিরের পিপাসার্ত শিশুদের জন্য পানি আনার চেষ্টা করে যান শেষ পর্যন্ত, কিন্তু শত্রুদের প্রচণ্ড হামলার কারণে ব্যর্থ হন। আর এ জন্য তাঁকে শেষ পর্যন্ত শহীদ হতে হয়েছিল। এই মহান শহীদের মা তথা হযরত আলী (আ.)’র বিধবা স্ত্রী উম্মুল বানিন তাঁর ঘরে ইমাম হুসাইন (আ.)সহ কারবালার শহীদানদের জন্য শোক প্রকাশের আয়োজন করেছিলেন। মহিলারা সমবেত হয়েছিল সেই শোকের মজলিসে।

হযরত উম্মুল বানিন (সালামুল্লাহি আলাইহা) নিজের ছেলের চেয়েও ইমাম হুসাইন (আ.)-কে বেশি ভালোবাসতেন। ইমামের শাহাদাতের খবর শুনে তিনি বলেছিলেন: “আমার হৃদয়ের সব ধমনী ছিঁড়ে গেছে। আমার সব সন্তান এবং নীল আকাশের নীচে থাকা সব কিছু ইমাম হুসাইন (আ.)’র জন্য কুরবানি হোক।”

হযরত উম্মুল বানিন ছিলেন একজন বড় কবি। তিনি ছিলেন ইমাম হুসাইন (আ.)’র জন্য শোকগাঁথা আবৃত্তিকারী প্রথম ব্যক্তি। তিনি নিয়মিত জান্নাতুল বাকিতে গিয়ে অত্যন্ত করুণ সুরে শোক-গাঁথা গাইতেন। তার শোকগাথা শুনে উপস্থিত সবাই কেঁদে আকুল হতেন। এভাবে তিনি মদীনার জান্নাতুল বাকি কবরস্থানকে ইমাম হুসাইন (আ.)’র জন্য শোক প্রকাশের কেন্দ্রে পরিণত করেন।

হযরত উম্মুল বানিন (সা.)’র রচিত শোক-গাঁথাগুলো আরবী সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হয়ে আছে। এসব শোকগাথা বা মর্সিয়া ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল জনগণের ওপর। আর এ জন্যই কারবালার ট্র্যাজেডি সৃষ্টিকারী উমাইয়া শাসকরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং এ ধরনের শোক-প্রকাশের প্রথাকে বিলুপ্ত করার জন্য ও এ বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্য নানা প্রচারণা চালাত। #

পার্সটুডে/আমির হুসাইন/আশরাফুর রহমান/১১

ট্যাগ