নির্বাচনী প্রচারণাকালে ট্রাম্পের দেওয়া প্রতিশ্রুতিতে ইসরাইলের উল্লাস
(last modified Sun, 20 Nov 2016 11:58:39 GMT )
নভেম্বর ২০, ২০১৬ ১৭:৫৮ Asia/Dhaka

ট্রাম্প ২০১৭’র জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবে। শপথের পর ইহুদিবাদী ইসরাইল চাচ্ছে বায়তুল মোকাদ্দাসে আরও ত্রিশ হাজার বসতি নির্মাণ কাজে হাত দিতে।

ইহুদিবাদী গণমাধ্যমগুলোতে এসেছে নতুন এই ইহুদি বসতি নির্মাণ প্রক্রিয়া ট্রাম্পের শাসনামলেই শুরু করা হবে। কেননা নিউইয়র্কের এই ধনকুবের ফিলিস্তিনী জনগণের ভিটেমাটি দখল করে ইহুদি বসতি নির্মাণকে অবৈধ মনে করে না। ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রচারণাকালে বলেছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলে বায়তুল মোকাদ্দাসকে ইসরাইলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিনকে ট্রাম্প আরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তেলআবিবের মার্কিন দূতাবাস কুদসে স্থানান্তর করা হবে।

সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে ইসরাইলি আধিপত্যকামী নীতির প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান ইতিবাচক। কদিন আগে ইসরাইলের মন্ত্রীসভা কমিটি একটি বিলের খসড়া অনুমোদন করেছে। ওই বিল অনুযায়ী তেলআবিব ইহুদি উপশহর নির্মাণের জন্য ফিলিস্তিনীদের আরো বেশি জমি দখল করতে পারবে।

২০১৪ সালের শুরুর দিকেও ইসরাইল বায়তুল মোকাদ্দাসের পূর্ব অংশ ধীরে ধীরে দখল করে নেওয়ার পক্ষে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। এখন আবার ২০২০ সালের মধ্যে বায়তুল মোকাদ্দাসকে পুরোপুরি ইহুদি শহরে পরিণত করার অংশ হিসেবে নতুন এই বিল অনুমোদন করলো তারা। ওই শহরে তাই কড়া নিরাপত্তা ও নজরদারির ব্যবস্থা করেছে ইসরাইল। আগে তারা পরিকল্পনা নিয়েছিল ছয় বছরের মধ্যে বায়তুল মোকাদ্দাস দখলে নিয়ে ইহুদি শহর নির্মাণ করবে। সেই পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে। এখন তারা ধীরে ধীরে সময় নিয়ে ইহুদি শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। এজন্য বাজেট বরাদ্দ দিয়েছে দেড় হাজার কোটি ডলার। মাসজিদুল আকসা বা কুদস নিয়ে এতো বেশি সক্রিয় এর আগে আর হতে দেখা যায় নি ইসরাইলি ক্যাবিনেটকে। তারা সরকারি সর্বোচ্চ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কুদসকে পুরোপুরি দখলে নিতে চায়। তারই প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে তারা বায়তুল মোকাদ্দাসকে তাদের অধিকৃত ভূখণ্ডের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি তুলেছে। অবশ্য তাদের এই টার্গেট ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড দখলের সময় থেকেই ছিল। টার্গেট অনুসারে তারা ১৯৪৮ সালে বায়তুল মোকাদ্দাসের পশ্চিম অংশ দখল করে। দ্বিতীয় পদক্ষেপে ১৯৬৭ সালে তারা বায়তুল মোকাদ্দাসের পূর্ব অংশও দখল করে নেয়। ১৯৮০ সালেও ইসরাইলি পার্লামেন্টে আরও একটি বিল পাস করা হয়। ওই বিল অনুযায়ী তারা বায়তুল মোকাদ্দাসকে অধিকৃত ভূখন্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করে এবং এই শহরকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা করে। সেইসঙ্গে তারা অধিকৃত ফিলিস্তিনে যেসব দেশের দূতাবাস ছিল তাদের দূতাবাসগুলোকে বায়তুল মোকাদ্দাস শহরে স্থানান্তর করার আহ্বানও জানায়। যদিও ইসরাইলি ওই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল।

এইরকম পরিস্থিতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প বায়তুল মোকাদ্দাসে ইহুদি বসতি নির্মাণের আধিপত্যবাদী নীতিকে সমর্থন দিয়েছে। ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ওই সবুজ সংকেত পেয়ে ইহুদিবাদী ইসরাইলি কর্মকর্তারা ব্যাপকভাবে উল্লসিত হয়ে পড়েছে। বৃহৎ ইহুদি শহর নির্মাণের এই চিন্তাটা তাদের মধ্যে এসেছে এ কারণেই। যদিও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন কুদস নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং নেতানিয়াহুর চিন্তা একেবারেই গাঁজাখোরি কল্পনা ছাড়া আর কিছু নয়।#

পার্সটুডে/নাসির মাহমূদ/২০