মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে জার্মান চ্যান্সেলরের অভিমত
(last modified Wed, 18 Sep 2019 13:11:54 GMT )
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০১৯ ১৯:১১ Asia/Dhaka
  • অ্যাঙ্গেলা মার্কেল
    অ্যাঙ্গেলা মার্কেল

জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে পশ্চিম এশিয়াসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার ক্ষেত্রে পরমাণু সমঝোতার বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাদের মতে, পরমাণু সমঝোতা থেকে আমেরিকার বেরিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে পারস্য উপসাগরসহ সমগ্র পশ্চিম এশিয়ায় উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা শুরু হয়েছে।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেছেন, এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও উত্তেজনা কমিয়ে আনার একমাত্র উপায় হচ্ছে, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান ও ছয় জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে সই হওয়া পরমাণু সমঝোতায় ফিরে আসা। গতকাল (মঙ্গলবার) রাজধানী বার্লিনে জার্মান সফররত জর্দানের রাজা দ্বিতীয় আব্দুল্লাহর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন অ্যাঙ্গেলা মার্কেল। তিনি বলেন, ইউরোপের লোকজন বিশ্বাস করে- ইরানকে পরমাণু অস্ত্র বানানো থেকে বিরত রাখার একমাত্র পথ হচ্ছে পরমাণু সমঝোতায় ফিরে যাওয়া।

জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন হামলার পর সৃষ্ট উত্তেজনার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, "আমরা মনে করি কেবল রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমেই দীর্ঘ মেয়াদি সমস্যার সমাধান হবে।" অথচ সৌদি আরবে ইয়েমেনিদের ড্রোন হামলার পর আমেরিকা এর জন্য বারবার ইরানকে অভিযুক্ত করছে এবং তেহরানকে হুমকি দিচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বোকার মতো পরমাণু সমঝোতা থেকে সরে গিয়ে এ অঞ্চলকে চরম উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতার মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন।

জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তা ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। তাদের মতে, পরমাণু সমঝোতা এমন একটি বহুপক্ষীয় চুক্তি যা কিনা বিশ্বের অন্যান্য সংকট নিরসনে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকতে পারে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের বক্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নীতির ঠিক বিপরীত। ট্রাম্প বহুবার দাবি করেছেন, "পরমাণু সমঝোতা আমেরিকার স্বার্থ রক্ষা করেনি।" প্রকৃতপক্ষে ইহুদিবাদী ইসরাইলের মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত বছর মে মাসে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে আসেন এবং ইরানের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির নীতি গ্রহণ করেন। নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় তিনি ইরানের তেল বিক্রি শূন্যে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন।

ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপের ফলে আমেরিকার সঙ্গে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এরই পরিণতিতে সম্প্রতি হরমুজ প্রণালী এবং পারস্য উপসাগর অঞ্চলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। এর ফলে ইউরোপও চিন্তিত হয়ে পড়েছে এবং তারা উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান জানিয়েছে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভস লা দ্রিয়াঁ বলেছেন, "উত্তেজনা নিরসনে অবশ্যই উপায় খুঁজে বের করতে হবে। এর অন্যথায় সবার জন্যই দুঃখজনক পরিণতি ডেকে আনবে।"

তবে ইউরোপের এ আহ্বান সত্বেও আমেরিকা তার আগের নীতিতেই অটল রয়েছে। আমেরিকা এ অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়ানোর পাশাপাশি সমুদ্রে নিরাপত্তা রক্ষার নামে ইরান বিরোধী জোট গঠনের চেষ্টা করছে। তবে ইরানও সামরিক হামলাসহ যে কোনো হুমকি মোকাবেলায় প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৮

 

ট্যাগ