করোনা মোকাবেলায় ইউরোপের শীর্ষ সম্মেলন: সাফল্য নিয়ে সন্দেহ জোরদার
https://parstoday.ir/bn/news/world-i81545-করোনা_মোকাবেলায়_ইউরোপের_শীর্ষ_সম্মেলন_সাফল্য_নিয়ে_সন্দেহ_জোরদার
মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্যাপক ভাঙন ও সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের বিষয়টি খুব ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন। এ কারণে তারা ইউরোপজুড়ে নজিরবিহীন এ সংকট মোকাবেলার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
জুলাই ১৮, ২০২০ ১৭:০৯ Asia/Dhaka

মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে ব্যাপক ভাঙন ও সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে করোনা ভাইরাসের ধ্বংসাত্মক প্রভাবের বিষয়টি খুব ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারছেন। এ কারণে তারা ইউরোপজুড়ে নজিরবিহীন এ সংকট মোকাবেলার উপায় খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

এ কারণে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর শীর্ষ নেতারা ব্রাসেলসে বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকে তারা করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে করোনা মোকাবেলায় বাজেট নির্ধারণ এবং ইউরোপের পিছিয়ে পড়া দেশগুলোকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গতকাল বৈঠক শুরু হয় এবং আজ তা শেষ হয়েছে। ইউরোপের ২৭টি দেশের শীর্ষ নেতারা এবং ইউরোপীয় পরিষদ ও ইউরোপীয় কমিশনের কর্মকর্তারা এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলনে সিদ্ধান্ত হয়েছে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় ইউরোপের দেশগুলোর জন্য ৭৫ হাজার কোটি ডলার বরাদ্দ  দেয়া হবে। করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এই প্রথম ইউরোপীয় নেতারা সশরীরে উপস্থিত হয়ে বৈঠক করলেন। তারা সবাই করোনা সংকট মোকাবেলা করা এবং অর্থনৈতিক সংকট থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এই সম্মেলন এমন সময় অনুষ্ঠিত হল যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রভাবশালী ও এই ইউনিয়নের বর্তমান সভাপতি দেশ জার্মানির দায়িত্ব কয়েকগুণ বেড়ে গেল। বিশেষ করে ব্রাসেলসের এই শীর্ষ সম্মেলনে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। ব্রাসেলসে পৌঁছার সাথে সাথে জার্মানির চ্যান্সেলর যদিও বলেছেন, সবার সহযোগিতায় চলমান সংকট মোকাবেলায় তার দেশ সব ক্ষেত্রে ইউরোপীয় দেশগুলোকে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু তারপরও এই সম্মেলন থেকে ভাল কিছু প্রত্যাশা করা কঠিন হবে বলে অনেকে মনে করছেন। মার্কেল বলেছেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনো ব্যাপক মতপার্থক্য রয়েছে। এ অবস্থায় একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে গেলে অনেক বড় প্রস্তুতির দরকার। তিনি বলেন, করোনা মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে ইউরোপ আদৌ সফল হবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না’।

জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইউরোপীয় দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কোটি কোটি ইউরো ঋণ ফেরত দেয়ার পদ্ধতি বা ধরনের ব্যাপারে ব্যাপক মতপার্থক্য রয়ে গেছে।

ইউরোপীয় কমিশন করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জন্য মোট ৭৫ হাজার কোটি ইউরো বরাদ্দের যে পরিকল্পনা তুলে ধরেছে তার মধ্যে ৫০ হাজার কোটি ইউরো করোনা পরিস্থিতিতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দেয়া হচ্ছে। এই পরিকল্পনা নিয়ে ইউরোপের ধনী ও তুলনামূলক দরিদ্র দেশগুলো এবং এই ইউনিয়নে সদ্য যোগ দেয়া দেশগুলোর মধ্যে মতবিরোধ শুরু হয়েছে। দক্ষিণ ইউরোপ অর্থাৎ ইতালি, স্পেনের মতো দেশগুলো দীর্ঘ মেয়াদে ফেরতযোগ্য ঋণ চাচ্ছে যাতে তারা সঠিকভাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে পারে। অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, সুইডেন ও হল্যান্ডের মতো দেশগুলো করোনা আক্রান্ত দেশগুলোকে অফেরতযোগ্য ঋণ দেয়ার বিরোধিতা করেছে এবং তারা স্বল্প মেয়াদি ঋণ দেয়ার দাবি জানিয়েছে। এ অবস্থায় ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনের সফলতা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৮