বাকুতে মার্কিন বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ: একটি পর্যালোচনা
ওয়াশিংটন সরকারের সঙ্গে ইলহাম আলিয়োফ সরকারের সম্পর্ক এবং আমেরিকার সাথে আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের কৌশলগত ঐক্য ঘোষণা সত্ত্বেও ওয়াশিংটন সরকারের সাম্প্রতিক আজারবাইজান বিরোধী অবস্থানের কারণে বাকু সরকার অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
নগরনো-কারাবাখ বিরোধ চলাকালে আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রে অবস্থিত মার্কিন রেস্তোঁরা "ম্যাকডোনাল্ড" এবং "বার্গার কিং" এর অবস্থান ও কর্মকাণ্ডের ঘটনায় সেদেশের জনগণের মাঝে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ম্যাকডোনাল্ডস এবং বার্গার কিং রেস্তোরাঁর সাইটগুলিতে নগরনো-কারাবাখ সংঘাত চলাকালীন আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের সমর্থনে কিছু চিত্র আপলোড করা হয়েছিল। ওইসব ছবি তারা তাদের সাইট থেকে অপসারণ করে ফেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদেই বাকুর জনগণের মাঝে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
তারই পরিপ্রেক্ষিতে বাকুতে সেদেশের জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে আমেরিকা বিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ করে। ইলহাম আলিয়েভ সরকার কিন্তু এর আগে আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রে আমেরিকা এবং ইস্রায়েলি বিরোধী বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছিল। ২ নভেম্বর বাকুতে যে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে তা থেকে প্রমাণ হয় যে ইলহাম আলিয়েভ সরকার ওই বিক্ষোভের বিপক্ষে ছিল না।
সম্প্রতি আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের অবস্থান এমনকি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর আজারবাইজান বিরোধী মন্তব্য আজারি রাজনীতিবিদদের মাঝে মার্কিন সরকারের ব্যাপারে দ্বৈত অবস্থান তৈরি করেছে। আমেরিকা মিনস্ক গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। মিনস্ক হলো কারাবাখ অঞ্চলের মালিকানা সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যাপারে ইউরোপীয় সহযোগিতা পরিষদ এবং নিরাপত্তা সংস্থার একটি গ্রুপ। এতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকার পরও আমেরিকা কিন্তু বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ তো নেয়ই নি, উল্টো বরং এই বিরোধকে নিজেদের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছে। ইতিবাচক পদক্ষেপ বরং প্রতিবেশী দুই দেশ ইরান এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকেই নিতে দেখা গেছে। তাদের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় পম্পেও বলেছেন: কূটনৈতিক উপায়ে এই বিরোধ নিষ্পত্তির চেষ্টা করতে হবে। পম্পেও আরও বলেছে তুরস্কের পদক্ষেপে আর্মেনিয়ার স্বার্থ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং আজারবাইজান লাভবান হয়েছে। তার ওই বক্তব্যের বিরুদ্ধে আজারবাইজানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। পম্পেওর এই মন্তব্যকে নাগরোণো-কারাবাখ বিরোধের বিষয়ে মার্কিন সরকারের পূর্ববর্তী বক্তব্যের বিরোধী বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রের রাজনীতি বিশ্লেষক আলশান মানাফ উফ বলেছেন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতিই আমেরিকার বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভের কারণ। ট্রাম্প প্রশাসনের ভুল নীতি, হস্তক্ষেপকামী পদক্ষেপ ইত্যাদিই আজারবাইজান প্রজাতন্ত্রে মার্কিন বিরোধী বিক্ষোভের প্র্ররণা জুগিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এনএম/৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।