আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের উপ প্রধানের দৃষ্টিতে ইরানের অর্থনৈতিক ভবিষ্যত
https://parstoday.ir/bn/news/world-i9676
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফের উপ প্রধান ডেভিড লিপ্টন তেহরান সফর শেষ করে এক বিবৃতিতে ইরানের অর্থনীতিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময়ী হিসেবে অভিহিত করেছেন। পরমাণু সমঝোতার পর ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা এবং শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য ইরান মৌলিক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
মে ১৮, ২০১৬ ১৭:৪৬ Asia/Dhaka

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল বা আইএমএফের উপ প্রধান ডেভিড লিপ্টন তেহরান সফর শেষ করে এক বিবৃতিতে ইরানের অর্থনীতিকে অত্যন্ত উজ্জ্বল ও সম্ভাবনাময়ী হিসেবে অভিহিত করেছেন। পরমাণু সমঝোতার পর ইরানের অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে পরিবর্তন এসেছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা এবং শক্তিশালী অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য ইরান মৌলিক কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে।

আইএমএফ’র উপ প্রধান ডেভিড লিপ্টন ইরান সরকারের সাফল্যের কিছু দিক তুলে ধরে বলেছেন, আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সত্বেও ইরান বার্ষিক মুদ্রাস্ফীতির ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে সক্ষম হয়েছে। তিনি বলেন, তেল বিক্রির অর্থ কাজে লাগিয়ে ইরানের অর্থনীতির অভাবনীয় উন্নতির বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। আইএমএফ’র উপ প্রধান ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে দেয়া ভাষণে বলেছেন, অতিরিক্ত তেল উৎপাদন এবং বিশ্ব বাজারে তেলের বর্তমান চাহিদা কম থাকার কারণে ইরানসহ তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর আয় সীমিত হয়ে পড়েছে।

তবে ইরান সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা কেবল অপরিশোধিত তেল বিক্রির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে তেল নিষেধাজ্ঞা এবং বিশ্ব বাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়ায় ইরান অর্থনৈতিক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। একই সঙ্গে তারা তেল বহির্ভূত অর্থনীতির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমান রুহানি সরকার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তারা অনেকটাই সফল হয়েছে। কিন্তু দেশটির উৎপাদন খাতে এখনো মন্দা বিরাজ করছে। আইএমএফের উপ প্রধানের বিবৃতিতেও ঠিক এ বিষয়গুলো উঠে এসেছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরানের অর্থনীতি সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং সব ক্ষেত্রেই ইরানের সাফল্য লক্ষণীয়। তবে সংকট কাটিয়ে উঠতে এবং আরো বেশী অগ্রগতির জন্য দরকার সঠিক কর্মপরিকল্পনা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানের অর্থনৈতিক সংকটের বড় কারণ যতটা না আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তারচেয়ে অভ্যন্তরীণ। এ কারণে ব্যাংকিং ও মুদ্রা ব্যবস্থায় সংস্কার এবং বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে উৎপাদন খাতকে আরো শক্তিশালী করা দরকার। এ ছাড়া, ইরানের অর্থনীতির আরেকটি কারণ পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নে আমেরিকা ও ইউরোপের গড়িমসি বা অনীহা ও ষড়যন্ত্র। মার্কিন বাধার কারণেই ইউরোপীয় ব্যাংকগুলো ইরানের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করতে পারছে না।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান জিম ইউঙ্গ কিম সম্প্রতি এ ব্যাপারে বলেছেন, আমরা ইরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার বিষয়টি অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং এখনই ইরানের সঙ্গে ব্যবসা শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই। ওয়াশিংটনে অবস্থিত এ ব্যাংক পরমাণু কর্মসূচির অজুহাতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর ২০০৫ সাল থেকে ইরানের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়। অবশ্য ইরান সহযোগিতার জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে কখনো হাত পাতেনি। অন্যদিকে আইএমএফও জানিয়েছে এখনই ইরানের সঙ্গে তারা ব্যবসা শুরু করছে না তবে ইরানের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহায়তা দেবে এ সংস্থা।

বিশ্লেষকরা ইরানের অর্থনীতির চাকাকে সচল করার জন্য আইএমএফের উপ প্রধানের তেহরান সফরকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। কারণ ইরানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ডেভিড লিপ্টনের আলোচনার ফলে ইরানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা প্রণয়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে এবং আইএমএফও ইরানের শক্তিমত্তার বিষয়টি উপলব্ধি করতে পেরেছে।#

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/১৮