গত আসরে আমরা অনুবাদ আন্দোলন বা অনুবাদ যুগ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আব্বাসীয় শাসনামলে বিশেষ করে খলিফা মানসুরের সময় প্রচুর শিল্পকর্ম অনুবাদের প্রতি ইঙ্গিত করেছিলাম। আসলে আব্বাসীয় শাসনামলে অনুবাদের ধারাটাকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে প্রতি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তোলা হয়েছিল। বাইতুল হিকমাহ স্টাডি সেন্টার তেমনি একটি প্রতিষ্ঠান।

আজ আমরা অনুবাদ আন্দোলন বা যুগের দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির গঠন ও বিকাশে এই অনুবাদ যুগের ব্যাপক ভূমিকা ছিল। কীভাবে অনুবাদের ধারা ইসলামী সভ্যতার গঠনে অবদান রেখেছে তা নিশ্চয়ই একটা প্রশ্ন সাপেক্ষ ব্যাপার।

আজ আমরা অনুবাদ আন্দোলন বা যুগের দিকে নজর দেওয়ার চেষ্টা করবো। ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতির গঠন ও বিকাশে এই অনুবাদ যুগের ব্যাপক ভূমিকা ছিল।

ইসলামের প্রাথমিক যুগে প্রচলিত ভাষার শ্রুতি ও লেখ্য রূপ নিয়ে আলোচনা করেছি। আমরা বলেছি, মুসলমানরা কোরানের আয়াত লিখে রাখতে এবং নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গী ও চিন্তা-চেতনা অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে ভাষার লেখ্য রূপকে গুরুত্ব দিতে শুরু করে ও একই লক্ষ্যে কাগজ শিল্পের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধন করে।

মুসলিম সভ্যতা বিকাশের প্রসঙ্গ এলেই ভাষা লিপিবদ্ধ করার ইতিহাস এবং লেখ্য রূপের সাথে মুসলমানদের পরিচিত হওয়ার বিষয়টিও সামনে চলে আসে। কাগজ আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে কোন কিছু লিখে রাখার বিষয়টি অনেক সহজসাধ্য হয়।

পাঠক! গত আসরে আমরা বলেছিলাম পয়গাম্বর (সা) মদিনায় ইসলামী শাসন ব্যবস্থা পরিচালনায় কীভাবে প্রশাসনিক, সামরিক, বিচারিক প্রভৃতি বিভাগ চালু করেছেন এবং ধীরে ধীরে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি কীভাবে বিকাশ লাভ করে। আজকের আসরে আমরা তারই ধারাবাহিকতায় আরো কিছু কথা বলার চেষ্টা করবো।

ইসলামের নবী (সা) এর মৌলিক পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি ছিল মসজিদ নির্মাণ করা। ইসলামী হুকুমাতের প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে মসিজদ প্রতিষ্ঠা করতেন তিনি।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সর্বশেষ ঐশী ধর্ম তথা ইসলাম ধর্ম প্রচারের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছিলেন। তিনি ১৩ বছর ধরে মক্কা অঞ্চলে ইসলামের বাণী জনগণের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা চালান।

গত আসরে আমরা ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে সভ্যতার পতনের নানা কারণ এবং বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতার অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। এছাড়া, মুসলিম সভ্যতা নানা প্রতিকূলতার মাঝেও কীভাবে টিকে থাকলো সে বিষয়টিও আমরা তুলে ধরেছি। আমরা বলেছি, বর্তমান পশ্চিমা সভ্যতা হিউম্যানিজম, লিবারেলিজম ও সেক্যুলারিজম এই তিন মতবাদের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে এবং এসব মতবাদে ধর্ম ও আধ্যাত্মিকতাকে গুরুত্ব দেয়া হয়না।

গত আসরে আমরা বলেছি, মানব সভ্যতায় ইসলাম ধর্মের অনস্বীকার্য ভূমিকা রয়েছে। তবে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে বিজাতীয়রা মুসলিম সভ্যতার অর্জনগুলোকে উপেক্ষা করে মুসলমানদের নানা আবিস্কার ও অর্জনকে নিজেদের বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।