সন্তান গ্রহণের বা ধারণের প্রাথমিক পর্যায় থেকেই বাবা-মাকে হতে হবে খুব সতর্ক
আদর্শ মানুষ গড়ার কৌশল (পর্ব-২৭)
প্রাচীনকাল থেকেই মানুষের চিন্তাশক্তির অনুশীলন, প্রতিভার বিকাশ, পূর্ণতা ও সার্বিক উন্নয়নের অন্যতম বড় মাধ্যম হল বই।
বইপুস্তকের সেই অপরিসীম ও অপরিহার্য গুরুত্ব এই আধুনিক ডিজিটাল যুগেও বজায় রয়েছে। আর এই অবস্থা ভবিষ্যতেও বজায় থাকবে। তাই শিক্ষিত সমাজের ও সংস্কৃতি-সেবীদের উচিত বই-পড়ার সংস্কৃতিকে ছড়িয়ে দেয়া! শৈশব থেকে শুরু করে সব বয়সেই জরুরি ও পছন্দের বই পড়ার মাধ্যমে মানুষ তার নানা ধরনের চাহিদা মেটানো ছাড়াও এক অনাবিল আনন্দের জগতকে অনুভব করে এবং নিজ লক্ষ্যগুলোতে পৌঁছার ক্ষেত্রে পেতে পারে দিক-নির্দেশনা ও চিন্তার জগত হয় শানিত! শিশু ও কিশোরদেরও তাই নিয়ে যেতে হবে বইয়ের বিশাল ও বিচিত্রময় জগতের দ্বারপ্রান্তে!
বিশ্বজনীন ধর্ম ইসলামও বই পড়া ও পাঠাগার গড়ার সংস্কৃতিকে যথেষ্ট মাত্রায় গুরুত্ব দিয়েছে। ইসলামের সবচেয়ে বড় বিস্ময় হল পবিত্র কুরআন যা হল একটি আসমানী বই। লেখার ওপর গুরুত্ব দেয়ার কারণেই মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে কলমের শপথ নিয়েছেন। সমাজের উন্নয়ন ও অগ্রগতির জন্য ইসলাম জ্ঞান-চর্চাকে অশেষ গুরুত্ব দিয়ে এসেছে।
মহানবী (সা) বলেছেন: যে দুনিয়া পেতে চায় তাকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং যে পরকালের প্রতি আকৃষ্ট তাকেও জ্ঞান অর্জন করতে হবে এবং আর যে এ দুই-ই চায় তার জন্যও জ্ঞান অর্জনের পথ থেকে দূরে থাকার কোনো সুযোগ নেই।
বর্তমান যুগ তথ্যের বিস্ফোরণের যুগ। মানুষ প্রতিদিন বিপুল মাত্রায় তথ্য পাচ্ছে যদিও সব তথ্য দেখার বা পড়া-শোনার সময় পাচ্ছেন না তারা। শিশু-কিশোররাও তথ্য যাচাই ও বাছাইয়ের সুযোগ পাচ্ছে না! ফলে স্বাধীনভাবে চিন্তা-ভাবনার সুযোগও পাচ্ছে না তারা। এমনকি প্রকৃতির সঙ্গে তাদের অনুভূতিগত যোগাযোগের সুযোগ ঘটছে না বা ঘটলেও তা খুবই কম! শিশুদের যোগাযোগের ক্ষেত্রও আর অতীত দিনের মত নয় যখন তারা খেলাধুলার মধ্যেই অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতা ও নিয়মানুবর্তিতা, সামাজিকতা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কৌশল শিখতে পারত! বর্তমানে শিশুরা খুব কম সময়ে শিশুদের জগত ছেড়ে নানা মিডিয়া ও কম্পিউটারের সঙ্গী হচ্ছে! ফলে তারা লাভ করছে সব কিছু দ্রুত জেনে ফেলার অনুভূতি! বিস্ময় ও কৌতূহলের যে অনুভূতিগুলো অতীতে তাদেরকে জ্ঞান অর্জন ও সৃষ্টিশীলতার দিকে এগিয়ে দিত সেসবই এখন অনুপস্থিত! -
শিশু-কিশোররা এখন বইয়ের চেয়েও ভিডিও গেম ও ইন্টারনেটে চ্যাট করা নিয়ে বেশি আগ্রহী। এ অবস্থায় বই পড়ার সংস্কৃতির দিকে তাদেরকে আবারও ফিরিয়ে আনা ও নিজেদেরও আবার সে দিকে ফিরে যাওয়া খুব বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/আবুসাঈদ/২৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।