কথাবার্তা
ইউক্রেনজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ, কিয়েভ ছাড়ছে মানুষ: 'মানবিক দুর্যোগ'
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! কথাবার্তার প্রাত্যহিক আসরে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আজ ১৩ মার্চ রোববারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। তারপর দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।
ঢাকার কয়েকটি খবরের শিরোনাম
- ইউক্রেনজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ, কিয়েভ ছাড়ছে মানুষ-ইত্তেফাক
- ইউক্রেনে ‘মানবিক দুর্যোগ’-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- সিজিএসের গবেষণা-তিন বছরে বিচারবহির্ভূত ৫৯১ হত্যাকাণ্ড-যুগান্তর
- তালিব আত্মগোপনে, হল ছেড়েছেন আরও ৩০ জন-মানবজমিন
- ফেসবুকে কমেন্টের জেরে সংঘাত, ছুরিকাঘাতে তিনজন নিহত-প্রথম আলো
- মেয়ে ধর্ষণের মূল্য কি ৯০ হাজার টাকা, আদালতে মায়ের প্রশ্ন-সমকাল
- আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দ্রব্যমূল্য ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে : রিজভী-কালের কণ্ঠ
কোলকাতার শিরোনাম:
- ক্রমশ স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে এগোবে কংগ্রেস! ৫ রাজ্যের ফলের পর ফের তোপ দাগল তৃণমূল। -সংবাদ প্রতিদিন
- উত্তরপ্রদেশে জিতেই গিফট কার্ড নিয়ে এল বিজেপি! ইপিএফে সুদ হ্রাসে কটাক্ষ মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা
- গান্ধী পরিবারের পদত্যাগের খবর ভুয়ো, সংবাদমাধ্যমকে তোপ কংগ্রেসের!-আজকাল
শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবারে বিশ্লেষণে যাচ্ছি।
বিশ্লেষণের বিষয়:
১. ফেসবুকে কমেন্ট নিয়ে দ্বন্দ্ব, গাজীপুরে ছুরিকাঘাতে তিনজন নিহত। দৈনিক মানবজমিনে খবর দিয়েছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখবেন?
২. মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর বলেছে, ইউক্রেনের চলমান সংকট নিরসনে কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেয়ার জন্য ওয়াশিংটন প্রস্তুত রয়েছে। আপনার কী মনে হয় এই মুহূর্তে যুদ্ধ বন্ধের জন্য আমেরিকা আলোচনার জন্য কোনো পদক্ষেপ নেবে এবং তা সফল হবে?
বিশ্লেষণের বাইরের কয়েকটি খবর:
ইউক্রেন বিষয়ক খবর: ইউক্রেন বিমান বন্দর দখলের ভিডিও প্রকাশ করেছে রাশিয়া। যুগান্তরে খবরটি পরিবেশিত হয়েছে। ম্যাঁক্রো বললেন,যুদ্ধ অবসানে প্রস্তুত নন পুতিন। এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে যে কোনো মুহূর্তে চূড়ান্ত হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। রুশ সেনাদের বিশাল বহর কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে কিয়েভের তিনদিক ঘিরে ফেলেছে। কিয়েভসংলগ্ন বনাঞ্চল ও শহরগুলোয় তারা ছড়িয়ে পড়েছেন।
কিয়েভের কেন্দ্রস্থল হিসাবে পরিচিত প্রেসিডেন্ট ভবনের কাছাকাছি তারা অবস্থান নিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় তারা কিয়েভের আরও তিন মাইল ভেতরে পৌঁছে গেছে। তবে কিয়েভ রক্ষায় ইউক্রেনের সেনারা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে পরিখা খনন ও সুরক্ষাব্যবস্থা স্থাপন করে তারা দুর্গ গড়ে তুলেছেন।
ইত্তেফাকের খবর-ইউক্রেনজুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ, কিয়েভ ছাড়ছে মানুষ। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, খারকিভ, চেহেরনিভ, সুমি ও মারিউপোলের মতো শহরগুলো ঘিরে রেখেছে রুশ বাহিনী। তারা শহরগুলোতে ব্যাপক বোমা হামলা চালাচ্ছে। ইউক্রেনের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে স্থানীয় সময় শনিবার বিমান হামলার সতর্কসংকেত বাজতে শোনা গেছে। এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি।
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের নিকটে দুই পক্ষের ব্যাপক লড়াই চলছে বলে খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলার আশঙ্কাও রয়েছে। অনেক মানুষকেই কিয়েভ ছাড়তে দেখা গেছে সাধারন মানুষকে।
এবার পুতিনের মুখপাত্রের পরিবারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা-ইত্তেফাক
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার প্রতিক্রিয়ায় একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এবার রুশ ধনকুবের ভিক্টর ভেকসেলবার্গ, রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র মিদিত্রি পেসকভের পরিবারের তিন সদস্য এবং একাধিক আইনপ্রণেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রাসায়নিক হামলা হলে চড়া মূল্য দিতে হবে রাশিয়াকে: বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ইউক্রেনে রাসায়নিক অস্ত্রের হামলা হলে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে। শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বাইডেন বলেন, আমার কাছে যে গোয়েন্দা তথ্য আছে, সে বিষয়ে কিছু বলব না। কিন্তু রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহার হলে রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর তিনি এ কথা বলেন।
প্রথম আলোর খবরে লেখা হযেছে,যুদ্ধে ব্যর্থতায় আট জেনারেলকে বরখাস্ত করেছেন পুতিন, দাবি ইউক্রেনের।
বাংলাদেশে মিসাইল রক্ষণাবেক্ষণাগার বানাচ্ছে চীন, উদ্বিগ্ন ভারত-মানবজমিন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের উত্তাপ যখন বিশ্বময়, এই কঠিন সময়ে জাপানি সংবাদ মাধ্যমের চাঞ্চল্যকর একটি খবর নিয়ে কূটনৈতিক অঙ্গনে অন্তহীন কানাঘুষা। দু’দিন ধরে গণমাধ্যমে খবরটি ঘুরপাক খেলেও সেগুনবাগিচা এ নিয়ে এখনই আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিতে নারাজ। টোকিওর প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ‘নিক্কেই এশিয়া’র ওই খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে বিমান বিধ্বংসী মিসাইল (সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল) রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থা প্রস্তুত করছে চীন। কিন্তু দেশের কোথায়, কবে থেকে চীনের মিসাইল মেনটেনেন্স ফ্যাসিলিটি সেট আপের উদ্যোগ? সে সম্পর্কে প্রতিবেদনে কোনো কিছু বলা হয়নি।
ঢাকা বা বেইজিং কোনো পক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে মিসাইল রক্ষণাবেক্ষণাগার প্রতিষ্ঠার কথা স্বীকার না করলেও ‘নিক্কেই এশিয়া’র কন্ট্রিবিউটিং রাইটার নীতা লালের লেখা ওই প্রতিবেদনে এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনের দাবি- এ নিয়ে নয়াদিল্লি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। তাদের উদ্বেগের বড় জায়গা হচ্ছে- বাংলাদেশের মতো ভারতের পুরনো মিত্রদের সঙ্গে খাতির তথা প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করে চীন ওই সব দেশের সঙ্গে বিশেষ ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলছে। চীনের এই তৎপরতাকে ‘বাড়াবাড়ি’ হিসেবেই দেখছে ভারত।
সিজিএসের গবেষণা-তিন বছরে বিচারবহির্ভূত ৫৯১ হত্যাকাণ্ড-যুগান্তর
দেশে গত তিন বছরে ৫৯১ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এসব হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করছে দেশে আইনের শাসন ও জনগণের নিরাপত্তা নেই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ফলে নাগরিকরা চিন্তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত ‘নির্বিচার প্রাণনাশ? বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বিশিষ্টজনেরা এমন মন্তব্য করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সিজিএসের একদল গবেষক একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করেন। যেখানে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সংঘটিত বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন সিজিএসের উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য ড. আলী রীয়াজ।
এছাড়াও ওয়েবিনারে আলোচনায় অংশ নেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড. শাহদীন মালিক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড স্টাডিজের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান, বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ও প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী। সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।
জিল্লুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের প্রধান সংকট গণতন্ত্রের সংকট। ৪টি বিষয় দ্বারা এদেশে মানবাধিকারের সংকটকে উপলব্ধি করা যায়। জনগণের ভোটের সংকট, অর্থাৎ নাগরিকরা স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারছেন না। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, যেটি প্রমাণ করছে যে দেশে আইনের শাসন নেই। গুম, অর্থাৎ জনগণের নিরাপত্তা নেই এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, যেই আইনের কারণে দেশে নাগরিকদের চিন্তা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করে ড. আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটনের বিষয়টি সরকার বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। ২০১৯ সালে জাতিসংঘের একটি কমিটির বৈঠকে আইনমন্ত্রী বলেছেন, দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড হয় না। জার্মানভিত্তিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলের একটি সাক্ষাৎকারে আমির হোসেন আমু বলেছেন, জাতীয় প্রয়োজনে ক্রসফায়ার করা হয়। তিনি বলেন, এসব বক্তব্যের মাধ্যমে এটি প্রতীয়মান হয় যে, সরকার পরিকল্পিতভাবেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আসছে।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সরকার বিভিন্ন সময়ে পুরস্কৃৃত করার মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে এক ধরনের বৈধতা দিয়ে এসেছে। মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার প্রধান আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাসকে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ পুলিশ পদক প্রদান করা হয়। এসব ঘটনা বাংলাদেশে আইনের শাসনের দুর্বলতাকেই প্রমাণ করে।
ড. আলী রীয়াজ গবেষণার জন্য ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন বছরে দৈনিক যুগান্তরসহ সাতটি দৈনিক এবং বিভিন্ন দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন থেকে তথ্য সংগ্রহ করেন। এসব উৎস থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, তিন বছরে দেশে ৫৯১টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গবেষণা প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন এমন দশটি ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোকে ছয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, যেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পদক্ষেপের কারণে ভুক্তভোগী মারা গেছে। এগুলো হলো নির্যাতনে মৃত্যু, বন্দুকযুদ্ধ, হেফাজতে মৃত্যু, ক্রসফায়ার, গোলাগুলি এবং গুলিতে মৃত্যু।
গবেষণার তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে ড. আলী রীয়াজ বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো নির্বাচনের আবহ তৈরি হলেই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা বেড়ে যায়। ২০০১ সালের পর থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে এক ধরনের প্যাটার্ন লক্ষ করা যাচ্ছে। অপারেশন ক্লিনহার্টের পর থেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ৫৯১টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার মধ্যে ‘কথিত বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যুর সংখ্যা ৫১২টি। বন্দুকযুদ্ধের ক্ষেত্রে পুলিশ এবং ডিবি পুলিশের ২৩৫টি এবং র্যাবের ১৫৬টি ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা আছে। গুলিতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা হচ্ছে ৬৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলো এতই বিস্তৃতি লাভ করেছে যে, ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫৬টি জেলাতেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে কক্সবাজার জেলায়।
ড. আলী রীয়াজ আরও বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে কেবল সংখ্যার নিরিখে বিচার করলে হবে না। এটি আইনের শাসন এবং সংবিধানের পরিপন্থি।
ড. শাহদীন মালিক বলেন, দায়মুক্তি আইন সরকার তাদের কাজের বৈধতা দানের জন্যই করেছে। সরকার যদি এই পন্থা অবলম্বন করে, তখন জনগণের হাতে আর কিছু করার থাকে না। তিনি আরও বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড দেশে গণতন্ত্রহীনতারই একটি লক্ষণ।
ব্যারিস্টার মনজুর হাসান বলেন, সারাবিশ্বেই এখন দায়মুক্তির সংস্কৃতি চলছে। আইন রক্ষাকারী সংস্থাগুলো ঠিকভাবে কাজ করতে পারছে কিনা সেটা লক্ষ করা প্রয়োজন। বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে বিচারকার্য যাতে পরিচালনা করতে পারে সেদিকে বিশেষ দৃষ্টিপাত করার কথা বলেন তিনি।
অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ড শুধু ভোটের সময় নয়, বিভিন্ন উৎসবের সময়েও এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাঁদাবাজির উদ্দেশ্যে উৎসবের আগে মানুষকে তুলে নিয়ে যায়। তারপর চাঁদা না পেলে লাশ গুম করে দেয়।
তালিব আত্মগোপনে, হল ছেড়েছেন আরও ৩০ জন-মানবজমিন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে গেস্টরুমের ‘মিনি আদালতে’ প্রতি রাতেই বসে কথিত বিচার। হয় নির্যাতন। এখানে দু’টি পক্ষ। এক পক্ষ যারা ছাত্র সংগঠনের নামে বিচারকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। কখনো
ধোঁয়া না ছেড়ে ধূমপান, দলীয় অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় ঘুম থেকে তুলে এনে রাতভর নির্যাতনসহ অনেক ঘটনার সাক্ষী এই মিনি আদালত। আর এই আদালতের আসামি হচ্ছেন নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা। এই অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গত কয়েক মাসে হল ছেড়েছে প্রায় ৩০ জনের মতো শিক্ষার্থী। এমনটিই জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সূত্র।সম্প্রতি গভীর রাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আবু তালিবকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে একই হলের ২০১৮-১৯ সেশনের চারজন ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে।সূর্যসেন হলের গেস্টরুমে নির্যাতনের শিকার আরেকজন শিক্ষার্থী মানবজমিন-এর সঙ্গে কথা বলেন। তাকেও এক দফা হল ছাড়তে হয়েছিল। নিজের পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, মোবাইলের চার্জার দেয়াকে কেন্দ্র করে আমাকে মারধর করা হয়। ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ সিফাত মারধর করেন। এই শিক্ষার্থী বলেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাথরুম থেকে বেরিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে সিফাত।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আবাসন সংকটের কারণে ছাত্র রাজনীতিতে অনেক নেতিবাচক উপাদান প্রবেশ করেছে। এটা ঠিক। আর আবাসন সংকট তো ছাত্র সংগঠন তৈরি করেনি। এটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দায়।
এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর নির্যাতনের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী মানবজমিনকে বলেন, বঙ্গবন্ধু হলের ঘটনাটির বিষয়ে হল প্রভোস্টকে জানানো হয়েছে। এ বিষয়গুলো সম্পর্কে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, আমার জানা মতে যেখান থেকে অভিযোগগুলো তৈরি হয় অর্থাৎ হল কেন্দ্রিক একাধিক ঘটনার শাস্তি হয়েছে।
মেয়ে ধর্ষণের মূল্য কি ৯০ হাজার টাকা, আদালতে মায়ের প্রশ্ন-সমকাল
কিশোরীকে ‘ধর্ষণের পর’ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে চেয়েছিল গ্রাম্য মাতব্বর। কিন্তু প্রভাবশালীদের চাপ বা হুমকিতে দমে যাননি মা। অপরাধীদের সমুচিত শাস্তির দাবিতে তিনি গেলেন আদালতে।
আসামিদের রক্তচক্ষু বা হুমকি উপেক্ষা করে সাহসী মা আদালত প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে যেকোনো সমঝোতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বিচারককে প্রশ্ন করেছেন ‘মেয়ে ধর্ষণের মূল্য কি ৯০ হাজার টাকা?’
গত ৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী শিশু আদালতে এমন ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে ভাবাচ্ছে।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় সীমান্তবর্তী বড়ঠোটা গ্রামে গত বছর কিশোরীকে ‘অপহরণের পর ধর্ষণের শিকার’ হয় বলে জানান তার মা। সেই ঘটনায় স্থানীয় মাতব্বরদের কথামত আপোষ-মীমাংসায় না গিয়ে কিশোরীর মা কসবা থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, কসবা উপজেলার গোপিনাথপুর ইউনিয়নের নোয়াগাও গ্রামের সাইফুল মিয়া (২২), খোকন মিয়া (৩৫) ও হরিয়াবহ গ্রামের শামিম মিয়া (৩২)। এ ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে যান। পুলিশও তদন্তের পর এই তিনজনের নামে আদালতে চার্জশিট দেয়। মামলার প্রধান আসামি সাইফুল সাত মাস পলাতক থাকার পর গত ৭ মার্চ আদালতে আত্মসমর্পণ করে। সাইফুলের পক্ষ নেওয়া গ্রাম্য মাতব্বররা সেদিন সেই মাকে ‘জোরপূর্বক’ আদালতে নিয়ে যান।
মায়ের অভিযোগ, মাতব্বর মোর্শেদ মিয়া, আবদুল হান্নান তাকে ৯০ হাজার টাকা নিতে বাধ্য করেন। এরপর মামলার বাদী কিশোরীর মাকে আদালতের কাঠগড়ায় আনা হলে তিনি বিচারককে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হুজুর আমার মেয়ের ধর্ষণের মূল্য কি ৯০ হাজার টাকা ? আমার ব্যাগে এই টাকা আছে। আমি ধর্ষনের বিচার চাই, টাকা চাই না ‘
এসময় আসামি পক্ষের ৭-৮ জন আইনজীবী হৈচৈ শুরু করেন। কিশোরীর মা সেই টাকা আসামি পক্ষের আইনজীবীদের দিয়ে দেন। পরে শুনানি শেষে আদালত আসামি সাইফুলকে জেল হাজতে পাঠান। সেই মা পরে সমকালকে বলেন, ‘প্রধান আসামি সাইফুল ইসলাম আমার মেয়ের সর্বনাশ করে পালিয়ে আমাকে নানা ভাবে হয়রানি করেছে। আমি ওদের টাকা ফেরত দিয়েছি। আমি আদালতে বিচার চেয়েছি। ‘এরা কেন টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করতে আসে। আসামি পক্ষের লোকজন ও সর্দাররা আমাকে আদালতেই হুমকি দিয়েছে।’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। ধর্ষণের শিকার সেই কিশোরী সমকালকে বলেন, ‘আমি টাকা চাই না । আমার ইজ্জত নষ্ট করেছে। আমি আদালতের মাধ্যমে এর বিচার চাই।’
এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
উত্তরপ্রদেশে জিতেই গিফট কার্ড নিয়ে এল বিজেপি! ইপিএফে সুদ হ্রাসে কটাক্ষ মমতার-আনন্দবাজার পত্রিকা
এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ড ফান্ড (ইপিএফ)-এ সুদের হার কমানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার মমতা লেখেন, ‘উত্তরপ্রদেশের ভোটে জয়লাভের পরই গিফট কার্ড নিয়ে এল বিজেপি সরকার! গত চার দশকে কর্মচারীদের আমানত তহবিলে সুদের হার সবচেয়ে নিচে নামিয়ে আনা হয়েছে।’ তিনি আরও লেখেন, ‘এর ফলে মহামারির পর দেশের মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত কর্মচারীদের উপর আর্থিক চাপ বাড়বে।’ মমতার সাফ বক্তব্য, ‘জনবিরোধী, শ্রমিক-বিরোধী পদক্ষেপটি বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের আসল রূপ প্রকাশ করেছে। কৃষক, শ্রমিক এবং মধ্যবিত্তদের স্বার্থ দেখার পরিবর্তে এই সরকার বৃহৎ পুঁজির স্বার্থ সমর্থন করে।’
গান্ধী পরিবারের পদত্যাগের খবর ভুয়ো, সংবাদমাধ্যমকে তোপ কংগ্রেসের!-আজকাল
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পর আজকের এই বৈঠক মহা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকী এনডিটিভি সহ কিছু সংবাদমাধ্যম এও বলেছিল, আজ একসঙ্গে পদত্যাগ করতে পারেন গান্ধী পরিবারের তিন সদস্য-- সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা। কিন্তু এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক চটেছে কংগ্রেস। বরিষ্ঠ নেতা রণদীপ সিং সুরযেওয়ালা টুইট করে লিখেছেন, দলের সূত্রের নাম করে পদত্যাগের যে খবর করেছে এনডিটিভি তা সম্পূর্ণ অন্যায়, ক্ষতিকর এবং ভুল। এদিকে, সংবাদ প্রতিদিনে লেখা হয়েছে, ক্রমশ স্বেচ্ছামৃত্যুর দিকে এগোবে কংগ্রেস! ৫ রাজ্যের ফলের পর ফের তোপ দাগল তৃণমূল। রোববার জাগো বাংলার (Jago Bangla) সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, শতাব্দীপ্রাচীন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের মধ্যে চরম বিদ্রোহের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পাঁচ রাজ্যে ভরাডুবি হওয়ার পর পরিস্থিতি বড্ড গোলমেলে।#
- পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।