কথাবার্তা
ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতের হুঁশিয়ারি! গুরুতর অসুস্থ পুতিন!
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১৬ মে সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম:
- ভারতসহ ৩ দেশের পাসপোর্ট পি কে হালদারের কাছে-প্রথম আলো
- পাকিস্তানকে দাস বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: ইমরান-প্রথম আলো
- লন্ডন-ইউরোপ এসে হাজারো তরুণের স্বপ্নভঙ্গ-মানবজমিন
- কেউ আমলে নেয় না দুদকের সুপারিশ-যুগান্তর
- যে কারণে শিশু-কিশোররা অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে–ইত্তেফাক
- তদন্ত শেষ হলে বাংলাদেশে হস্তান্তর, জিজ্ঞাসাবাদে বেহাল পিকে-যুগান্তর
- ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতের হুঁশিয়ারি-বাংলাদেশ প্রতিদিন
- ১১০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রির ঘোষণা স্থগিত করল টিসিবি-কালের কণ্ঠ
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:
- জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে কংগ্রেস, স্বীকার রাহুলের, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র ডাক সোনিয়ার-সংবাদ প্রতিদিন
- গুরুতর অসুস্থ পুতিন, ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট!- আজকাল
এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
পশ্চিমবঙ্গে গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) কাছে ভারতীয় পরিচয়পত্রের পাশাপাশি তিন দেশের পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। দেশগুলো হলো বাংলাদেশ, ভারত ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের দেশ গ্রেনাডা। ভারতের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত পি কে হালদারের পশ্চিমবঙ্গে ১১টি বাড়ি, জমি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সন্ধান পেয়েছে ইডি। তাঁর আরও অনেক সম্পদ পশ্চিমবঙ্গে রয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি। তাই পি কে হালদারকে সঙ্গে নিয়ে বাকি সম্পদের সন্ধানে অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে।
জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অন্তত সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছেন পি কে হালদার। এটি জানাজানির পর ২০১৯ সালের শেষ দিকে তিনি দেশ ছেড়ে পালান। আর ভারতে সম্পদ কেনাও শুরু করেছিলেন ২০১৯ সালে। পশ্চিমবঙ্গের ইডির কর্মকর্তারা মনে করছেন, হালদারের অর্থের একটা বড় অংশ এখনো দুবাইয়ে রয়েছে। হাওয়ালা (হুন্ডি) নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দুবাই এবং পশ্চিমবঙ্গ দুই জায়গাতেই অর্থ পাঠানো হয়েছে।
ইডি গত শনিবার পি কে হালদারসহ যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে, গতকাল রোববার তাঁদের নাম প্রকাশ করেছে।
প্রশ্ন ফখরুলের- এ রকম আর কয়জন পি কে হালদার আছে?
১১০ টাকায় সয়াবিন তেল বিক্রির ঘোষণা স্থগিত করল টিসিবি-কালের কণ্ঠ
১১০ টাকা লিটার দরে আজ সোমবার থেকে সয়াবিন তেল বিক্রি শুরু করার কথা ছিল সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি)। একই সঙ্গে ন্যায্য মূল্যে চিনি, মসুর ডাল ও ছোলা বিক্রি শুরুর কথা ছিল সংস্থাটির। কিন্তু গতকাল রবিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে সেই কার্যক্রম স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী মাস অর্থাৎ জুনে টিসিবি এই কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানানো হয়েছে।
লন্ডন-ইউরোপ এসে হাজারো তরুণের স্বপ্নভঙ্গ-মানবজমিন
লন্ডন-ইউরোপ এসে হাজারো তরুণের স্বপ্নভঙ্গ। বাংলাদেশী মধ্যবিত্ত তরুণদের কাছে লন্ডন-ইউরোপ, আমেরিকা যাওয়াটা সবসময়ই এক সোনার হরিণ। আজ-কাল এই সোনার হরিণের পেছনে কম-বেশি ছোটেননি কিংবা আশা করেননি এমন তরুণ বা যুবকদের পাওয়া মুশকিল। লন্ডন-ইউরোপ, আমেরিকা সবার কাছেই এ এক স্বপ্নের সুন্দর ঠিকানা। তরুণদের বদ্ধমূল ধারণা ইউরোপের যে কোন দেশ বা লন্ডন অথবা আমেরিকার কোনো স্টেটসে একবার যেতে পারলে শুধু অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা পূরণই নয় সামাজিক স্ট্যাটাসেরও কয়েকধাপ বেড়ে যায়। বরাবরই তাই লন্ডন-ইউরোপ-আমেরিকাতে যাওয়ার জন্য আমাদের মধ্যবিত্ত তরুণদের দৌড়ঝাঁপ লক্ষণীয়। অভিভাবক মহলেও এ নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার শেষ নেই। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসা এবং হোম কেয়ার ভিসায় প্রচুর তরুণ-তরুণী আসছেন লন্ডনে। সিলেট থেকে আসা একজন ছাত্র ফাহাদ। কথা হয় তার সঙ্গে।
তিনি বলেন, যে স্বপ্ন নিয়ে লন্ডনে এসেছিলাম আসার পর সেটা দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। বিয়ে করে স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল খালাতো বোনকে। কিন্তু এখানে এসে এখানের কালচার অনুযায়ী ২৫ হাজার পাউন্ড খালাতো বোনের ব্যাংক একাউন্টে জমা দিতে হয়। কিন্তু সেই সামর্থ্য তার নেই এবং তিনি বিয়ে করার স্বপ্ন বাদ দিয়ে তিনি এখন রেস্টুরেন্টে কাজ করছেন এবং টাকা উপার্জন করছেন কি করে ইউনিভার্সিটির ফি দিয়ে ভিসা এক্সটেনশন করা যায় বা বৈধ থাকা যায় সেই পথেই হাঁটছেন। মৌলভীবাজার থেকে আসা আরেকজন ছাত্র রাতুল। তিনি বলেন, লন্ডনে আসার শুধু স্বপ্ন দেখলেই হবে না আসার পর তা বাস্তবের জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। তা না হলে এই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হবে এটাই স্বাভাবিক। রাতুল বলেন, বিয়ের চিন্তা এসব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলেছি লন্ডন আসার পর।
এখন কিভাবে প্রতিষ্ঠিত হবো কিভাবে একটা ভালো জব করবো ইউনিভার্সিটি কমপ্লিট করে সেই রাস্তায় হাঁটছি। কথা হয় ঢাকা থেকে আসা আরেকজন ছাত্রী অনন্যার সাথে। তিনি বলেন, এখানে আসার পর যে স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন। কাজ করে ইউনিভার্সিটির ফ্রি দেয়া অসম্ভব তার পক্ষে। তাই ভাবছেন একটা ভালো সিটিজেনশিপ ছেলে পেলে তিনি বিয়ে করে এখানে স্থায়ী হবেন। বৃটেনের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮-২০১৯ সাল থেকে ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৪৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী বৃটেনে অধ্যয়নে এসেছেন। এর মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বহির্ভূত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৩ হাজার ২৫ জন। ২০২০ সালের ‘টিয়ার ফোর স্টুডেন্ট’ ভিসায় কিছু পরিবর্তন আনার পর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বৃটেন গমন বেড়েছে।
করোনাকালেও বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এসেছেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশেই এখন বেশ বড় সংখ্যায় বাংলাদেশি অভিবাসী বসবাস করছেন। গত দু দশকে ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স, গ্রিস, অস্ট্রিয়া, স্পেন বা পর্তুগালে বেশ বড় বাংলাদেশি কমিউনিটি গড়ে উঠেছে। মৌলভীবাজারের ছেলে সাইমন। তিনি আজ থেকে ১০ বছর আগের লন্ডন এসেছিলেন। কিন্তু তার স্বপ্ন পূরণ করা অনেকটা তার সাধ্যের বাইরে ছিল। তাই তিনি লন্ডন থেকে ফ্রান্সে চলে এসেছিলেন এবং এখানে আসার পর তিনি বৈধ হন এবং ফ্রান্স-সিটিজেনশিপ নিয়ে আবারও তিনি লন্ডনে ফিরে এসেছেন এবং এখন তার স্বপ্ন পূরণ করতে তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন।
সাইমন জানান, তাঁর দীর্ঘ ১২ বৎসরের ইউরোপ জীবনে যে কষ্টে তিনি সফলতা অর্জন করেছেন বা স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করেছেন সেই স্বপ্ন পূরণ করতে তিনি লন্ডনে বিয়ে না করে দেশি একটি মেয়েকে বিয়ে করতে দেশে যাচ্ছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিলেটের আরেক যুবকের সাথে কথা হয়। তিনি লন্ডন ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় এসেছিলেন। কিন্তু ভিসা এক্সটেনশন করতে ব্যর্থ হলে তিনি লন্ডনে বিয়ে করতে বাধ্য হন। কিন্তু তার বিয়ে করে এই লন্ডনে স্থায়ী হবার স্বপ্নটি দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। জীবনসঙ্গী হিসেবে যাকে তিনি পছন্দ করেছিলেন তার চাহিদা মেটাতে তার গত ১২ বছরের সব উপার্জন প্রিয়তমার হাতে তুলে দিলেও তার মন জয় করতে পারেননি। শেষমেশ তিনি তাকে ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হন। ছন্দ নাম (আসু) জানান, তিনি প্রতি শনিবার বেতন পেতেন একটা রেস্টুরেন্টে কাজ করে। বেতন পাওয়ার পর পুরো বেতনটি তার স্ত্রীর হাতে তুলে দিতে হতো।
কিন্তু একটা সপ্তাহ তার বেতন পেতে দেরি হয়েছিল। কিন্তু তার স্ত্রী তার বসকে ফোন করে তার বেতন চান এবং এটা নিয়ে তাকে অনেকটা লজ্জায় পড়তে হয়। সেদিন থেকে লন্ডনে স্থায়ীভাবে বসবাস করার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এখনও তিনি বেঁচে আছেন জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য। লন্ডনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এখানে থাকার জায়গা খুবই অভাব। আত্মীয়-স্বজন দেশ থেকে এলে তাকে বাসায় তুলতে অনেকেরই স্ত্রী অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে করে অনেক লন্ডনপ্রবাসীকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে লন্ডনে এসে রঙিন স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বেশকিছু প্রবাসী নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, যে প্রতি শনিবার তারা রেস্টুরেন্টে কাজ করেন এবং বেতন পাওয়ার পর স্ত্রীর হাতে সেই পুরো সপ্তার বেতনটা তুলে দিতে হয়।
নিজের পকেট খরচের টাকাটা পর্যন্ত সাথে থাকে না। কারণ স্বপ্ন একটাই সেই স্ত্রী তাকে বৈধ করে দেবে সিটিজেনশিপ পাবে এবং স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করবে এবং তার স্বপ্নটা পূরণ হবে একদিন। একটা সময় এই তরুণ এবং যুবকরা যখন স্ত্রীদের এবং তাদের শাশুড়িদের চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হন তখন তাদেরকে ডিভোর্সের পথে আগাতে হয়। এরকমই তাদের স্বপ্নগুলো দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়ে যায়। আবারো তাদের জীবন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে হয় জীবিকার তাগিদে এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য। নোয়াখালী থেকে সুমন আসছেন ফ্রান্সে বৈধ হওয়ার জন্য। কিন্তু এখানে যে বৈধ হওয়ার প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়ায় তিনি বৈধ হতে পারেননি।
তারপর শরণাপন্ন হন একটি মেয়েকে বিয়ে করে বৈধ হবেন। কিছুদিন পর সেই মেয়েটির সাথে সম্পর্ক ঠিক থাকলেও একটা সময় ভেঙে যায়। এতে করে তার বৈধ হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে খান খান হয়ে যায়। শেষমেশ অনেক কষ্ট করে কিছু টাকা জোগাড় করেছেন। এখন পর্তুগালে গিয়ে বৈধ হওয়ার জন্য চেষ্টা করবেন। ফ্রান্স, গ্রিস, ইতালি, পোল্যান্ড, পর্তুগালে অনেক তরুণ যুবক আছে যারা স্বপ্ন নিয়ে এসেছে কিন্তু এই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তাদের প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়। যুদ্ধ করে যখন সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে তখন তাদের বাংলাদেশি একটা পাসপোর্টের প্রয়োজন হয়। কিন্তু সেই পাসপোর্টটি সময়মতো না পাওয়ায় আবারো তাদের বৈধ হওয়ার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুখতে হবে
স্বপ্ন মানুষকে বাঁচতে শেখায়। এগিয়ে নেয়। সুন্দর জীবন গড়তে অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু কখনো কখনো সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়। ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। শুধু তা-ই নয়; একটি জীবনের নির্মম পরিণতি গোটা পরিবারকে বয়ে বেড়াতে হয়। তার পরও লোভের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না তরুণ-যুবকরা। বারবার নানা ঘাত-প্রতিঘাত ও মূল্যবান জীবনহানির পরও তাদের বোধোদয় হচ্ছে না। পশ্চিমা জগতের তথাকথিত উন্নত জীবন তাদের প্রলুব্ধ করছে। ছাড়ছে পরিবার-পরিজন ও দেশের মায়া। অকাতরে হারাচ্ছে জীবন। সঙ্গে বিপুল অর্থ। যা দিয়ে দেশেই নিজেকে গড়ে তুলতে পারতেন। হতে পারতেন একজন সফল উদ্যোক্তা। তা না করে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে তারা যেভাবে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছেন, এতে জীবন যেমন বিপন্ন হচ্ছে, তেমনি সম্ভ্রমহানি হচ্ছে দেশের। অথচ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত আমাদের দেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে।
বলা সঙ্গত, অনেকে অসাধুদের খপ্পরে পড়ে বিপজ্জনক পথে পা বাড়ান। মানুষের সরল স্বপ্নকে পুঁজি করেই নিজেদের স্বার্থে অন্ধ হয়ে উঠে দালাল ও পাচারকারীরা। স্বপ্ন পূরণের প্রলোভন দেখিয়ে হত্যাকারীর মতো মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়। এ রকম কত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। অবৈধভাবে ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে গিয়ে সাগরে নৌকাডুবিতে মৃত্যু কিংবা সাগরে দিনের পর দিন ভেসে বেড়ানোর খবর প্রায়ই গণমাধ্যমে আসে। তাদের অনেকেই বাংলাদেশি। খাবার আর নিরাপদ পানির অভাবে তাদের সাগর কিংবা বিদেশের জঙ্গলে অবর্ণনীয় কষ্টে দিন কাটানোর খবরও পাওয়া যায়। কারো ঠাঁই হয় বিদেশের অভিবাসী কেন্দ্র বা কারাগারে।
ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ নিয়ে যুগান্তরের খবর- আরও দুটি ইউক্রেনীয় এস-৩০০ ধ্বংসের দাবি রাশিয়ার। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, ইউক্রেনের আরও দুটি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এস-৩০০ ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়া।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রোববার এ তথ্য জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কনাশেনকভ বলেছেন, সুমি অঞ্চলের স্ফিলেভকা এলাকার কাছে ইউক্রেনের ওই দুটি এস-৩০০ ধবংস করা হয়েছে। খবর আনাদোলুর।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাশিয়ার বিমানবাহিনী রোববার ইউক্রেনের আরও ৩২টি সামরিক অবস্থানে হামলা চালিয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও জানান, এ পর্যন্ত ইউক্রেনের ১৬৫টি যুদ্ধবিমান, ১২৫টি হেলিকপ্টার, ৮৭৯টি সামরিক যান, ৩০৬টি আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, ৩ হাজার ৯৮টি ট্যাংক, ৩৮১টি মাল্টি ব্যারেল রকেট ল্যাঞ্চার, ১ হাজার ৫২৫টি মর্টার এবং ২ হাজার ৯৩৪টি অত্যাধুনিক সামরিক যান ধ্বংস হয়েছে রাশিয়ার হামলায়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৭৩ জন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৩ হাজার ৮১৬ জন আহত হয়েছেন বলে জাতিসংঘের পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে।
তবে হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে সংশ্লিষ্টদের দাবি। এ পর্যন্ত ৬১ লাখ মানুষ ইউক্রেন থেকে পালিয়েছেন। এ ছাড়া দেশটির ৭৭ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে জিততে পারে ইউক্রেন: ন্যাটোপ্রধান-যুগান্তরের এ খবরে লেখা হয়েছে, রাশিয়া তার আক্রমণের মূল পরিকল্পনা থেকে সরে গেছে দাবি করে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন রাশিয়ার বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে জিততে পারে ইউক্রেন।
রোববার জার্মানির বার্লিনে অনুষ্ঠিত ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিয়ে এ কথা বলেন ন্যাটো মহাসচিব। খবর আলজাজিরার।
স্টোলটেনবার্গ বলেন, ইউক্রেনে মস্কোর পরিকল্পনা অনুযায়ী যুদ্ধ চলেনি। দোনবাস অঞ্চলে মস্কোর আক্রমণ প্রতিরোধের মুখে পড়েছে এবং খারকিভের চারপাশ থেকে রাশিয়ান সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে। তিনি বলেন, রাশিয়া তার কৌশলগত লক্ষ্য অর্জন করতে পারেনি। ইউক্রেন টিকে আছে। যে কোনো সময়ের চেয়ে ন্যাটো এখন শক্তিশালী।
ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তা, ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূতের হুঁশিয়ারি-বাংলাদেশ প্রতিদিন
আবারও আমেরিকার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করল রাশিয়া। ইউক্রেনে চলমান রাশিয়ার বিশেষ অভিযান প্রতিহত করতে কিয়েভকে অত্যাধুনিক অস্ত্রসস্ত্র দেওয়ার ব্যাপারে ওয়াশিংটনকে এই হুঁশিয়ারি দেয় মস্কো। আমেরিকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আনাতোলি অ্যান্তোনভ বলেছেন, কিয়েভের প্রতি ওয়াশিংটনের চলমান অস্ত্র সাহায্য দুই পারমাণবিক পরাশক্তির মধ্যে অকল্পনীয় সংঘাত বাধিয়ে দিতে পারে।
পাকিস্তানকে দাস বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র: ইমরান-প্রথম আলো
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, আক্রমণ না করেই তাঁর দেশকে দাস বানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর এএনআইয়ের। গতকাল রোববার পাকিস্তানের ফয়সালাবাদ শহরে এক জনসভায় পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা ইমরান এ কথা বলেন। পাকিস্তানের বর্তমান সরকারকে ‘আমদানি’ করা সরকার হিসেবে অভিহিত করেন ইমরান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জনগণ কখনোই এমন সরকার মেনে নেবে না। ইমরান দাবি করেন, তিনি যাতে ক্ষমতায় ফিরে আসতে না পারেন সে জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অর্থ ভিক্ষা চাইবেন পাকিস্তানের বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো।
ইমরান দাবি করেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হতাশ করার সাহস দেখাবেন না বিলাওয়াল। কারণ, বিলাওয়াল ও তাঁর বাবা আসিফ আলি জারদারি বিশ্বের কোথায় কোথায় তাঁদের অর্থ কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন, তা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন।
যে কারণে শিশু-কিশোররা অপরাধপ্রবণ হয়ে ওঠে-ইত্তেফাক
শিশু হলো রাষ্ট্রীয় পোষ্য এবং রাষ্ট্র তার সর্বোত্তম স্বার্থরক্ষাকারী অভিভাবক। রাষ্ট্রের পিতৃসম অভিভাবকত্বকে ‘প্যারেনস পেট্রি’ বলা হয়। শিশু-বয়স্কের মধ্যে পৃথক বিচার ব্যবস্থাও এ কারণে। যে শিশুটি গৃহে যথাযথ যত্ন ও তত্ত্বাবধান এবং পরিবেশ পায়নি, সে শিশুটি অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণে জড়িত হয়ে পড়লে অভিভাবক হিসেবে তাকে শাস্তি দিয়েই তার দায়িত্ব শেষ করতে পারে না রাষ্ট্র। আধুনিক রাষ্ট্র শিশু-কিশোরদের অভিভাবকের দায়িত্বপালন করে থাকে।
বাংলাদেশে কোনো পরিসংখ্যান না থাকায় শিশুর বিভিন্ন শারীরিক উৎপীড়নের চিত্র তুলে ধরা সম্ভব হচ্ছে না। তবে দেশে উৎত্যক্ত, উৎপীড়ন সম্প্রতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এমনকি পরিবারের কাছের আত্মীয় ও পরিচিতরাও বহু ক্ষেত্রে শিশুদের উৎত্যক্ত করে থাকে। ফলে শিশুর মানসিক বিকাশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে এবং শিশুটি এক অস্বাভাবিক মানুষ হিসেবে বেড়ে ওঠে। শিশু-কিশোর অপরাধের সুনির্দিষ্ট কিছু কারণ চিহ্নিত করেছেন অপরাধ বিজ্ঞানীরা। যেমন : শহর জীবনের নিঃসঙ্গতা, পিতা-মাতার উভয়ের কর্মজগতে তৎপরতায় পিতা-মাতার অপর্যাপ্ত তদারকি, পরকীয়া, মানসিক অসুস্থতা, অসংগত মূল্যবোধ ও লক্ষ্য, অবৈধ উপায়ে অভিভাবকের উপার্জন, কুরুচিপূর্ণ সিনেমা, টিভিসহ সামাজিক গণমাধ্যমে অশ্লীল, নীল ছবি, অসামাজিক সঙ্গ ইত্যাদির কারণে শিশু-কিশোর অপরাধ বাড়ছে।
আমরা যেন ভুলে না যাই, বরিশালের সেই চার শিশুর বিরুদ্ধে রুজুকৃত চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলা। আসল ঘটনা উন্মোচনে মহামান্য হাইকোর্টের আদেশ ও নির্দেশনা ছিল এক ঐতিহাসিক ঘটনা। শিশু-কিশোর যে রাষ্ট্রের পোষ্য এবং রাষ্ট্রই যে অভিভাবক, তা হাইকোর্টের আদেশ প্রমাণ করেছে। উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রে্রটের প্রতি যে ভর্ত্সনামূলক আদেশ দিয়েছিলেন, তা নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য শিক্ষণীয়। জনমনে সৃষ্ট বিস্ময়ের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক গণমাধ্যমেও লক্ষ করা গেছে। এ ধরনের ঘটনা সংঘটিত হলে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সামাজিক গণমাধ্যমে আসবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে আমরা ভুলে যাই যে, ক্ষোভ-বিক্ষোভের ভাষাও সৃজনশীল হওয়া দরকার। রাষ্ট্রের যে সংবিধান নাগরিকত্বের মর্যাদা দিয়েছে তা আইন দ্বারাই আরোপিত। অতএব মনগড়া কথাবার্তা না লিখে সংক্ষুব্ধ সুনাগরিক হিসাবে আইনের কাছেই প্রতিকার প্রত্যাশা করতে হবে। একজন নাগরিক হিসেবে প্রতিকারের সুযোগ নেই। প্রতিকারের জন্য রাষ্ট্রের ওপর ভরসা রাখতে হবে। দেশকে ভালোবাসলে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে, আদালত বা বিচারালয়ই হচ্ছে শেষ আশ্রয়স্থল এবং আস্থার পবিত্রতম ঠিকানা।
ফিরে আসছি শিশু-কিশোর অপরাধ প্রসঙ্গে। আইনে শিশুদের ক্ষেত্রে অপরাধী মনের অনুপস্থিতিতে কোনো কর্মকাণ্ড ঘটলে তা অনিচ্ছাকৃত বলে ধরে নেওয়া হয়। ইংল্যান্ডের আইনও মনে করে অনিচ্ছাকৃত কর্মের জন্য কোনো ব্যক্তিকে দণ্ডিত করা প্রাকৃতিক ন্যায়বিচার পরিপম্হি। ইংল্যান্ডের আইনে সাত বছরের নিচে কোনো শিশুর কোনো কার্যই অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় না। সাত থেকে চৌদ্দ বছরের শিশুদের আচরণ মানসিক পরিপক্বতার বিবেচনার ওপর নির্ভর করে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। পৃথক বিচারপদ্ধতিরও অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, শিশু-কিশোররা যেন ভবিষ্যতে সমাজ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত না হয়। ‘অভিযুক্ত’, ‘দোষী’ ও ‘দণ্ডিত’ ইত্যাদি শব্দাবলি নিকৃষ্ট প্রকৃতির অপরাধীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বলে শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে এ সব শব্দ আইনে নিষিদ্ধ রয়েছে। যে কারণে শিশু-কিশোরদের বিচার পদ্ধতি ফৌজদারি আদালত থেকে ভিন্ন। একই অপরাধে জড়িত থাকলেও বয়স্ক অপরাধীর সঙ্গে শিশু-কিশোরদের বিচার করা হয় না। এদের বিচার প্রকাশ্যে করা হয় না, তাদের নাম-ঠিকানা, অপরাধ ও বিচারের রায় জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় না।
বাংলাদেশে কার্যকর দণ্ডবিধির ধারা ৮২ ও ৮৩ তে ইংল্যান্ডের ন্যায় বিধান রয়েছে—শিশুকে কোনো অবস্থাতেই মৃতু্যদণ্ড দেওয়া যাবে না। শিশু স্বেচ্ছায় চৌর্যকর্মে জড়িত হতে পারে, এমনকি চুরি যে বেআইনি কাজ—তার পক্ষে জানা অসম্ভব নাও হতে পারে; কিন্তু চৌর্যকর্মের ফলে পরিণতি কী দাঁড়াবে এবং সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা তার নিজের কী পরিমাণ ক্ষতি হবে—তা বোঝার মতো মানসিক পরিপক্বতা শিশুর না থাকাই স্বাভাবিক। এ কারণেই একই আচরণের জন্য পৃথক বিচার পদ্ধতি।
আধুনিক যুগে শিশুদের উৎত্যক্ত, হয়রানি প্রত্যেক দেশেই জাতীয় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সৃষ্টি করেছে। যান্ত্রিক যুগে শিশু-কিশোরদের নিয়ে পরিবারের অস্তিত্ব মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন। গতিশীল ও কর্মমুখর জীবনযাত্রার কারণে পিতা-মাতা উভয় কর্মজগতে তত্পর। শিশুকে নির্জন বাড়িতে একাকী বাস করতে হয় অথবা তার সঙ্গী হয় কাজের মেয়ে বা অনাত্মীয় কেউ। ফলে আচার-আচরণ, শিক্ষা, শৃঙ্খলাবোধ, মূল্যবোধ সৃষ্টিতে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটে। অপরাধ বিজ্ঞানীদের মতে, শিশুর অপরাধপ্রবণতা নিয়ন্ত্রিত হয় প্রথম পরিবার থেকে। পুরুষ অন্ন জোগাবে, আর নারী ঘরনি হিসেবে ঘর সামলাবে—এমনটি আর নেই। তাত্ত্বিক ও বাস্তবিক মতে এটাই স্বাভাবিক, যে শিশু পিতা-মাতার অনাদরে, তাদের এবং নানারকম পারিবারিক উদ্বেগের ভেতর দিন কাটায়, সে শিশু পরবর্তী কালে অপরাধপ্রবণ হবে। অপরাধপ্রবণ এলাকায় বসবাস করেও যে শিশু পিতা-মাতার স্নেহ-মমতা ও শৃঙ্খলার ভেতর বেড়ে ওঠে, ভবিষ্যতে সে শিশু অপরাধী হয়ে ওঠে না। শিশু-কিশোরদের ভবিষ্যত্ জীবনধারা কী প্রকৃতির হবে তা অনেকাংশে নির্ধারণ করে তার পরিবার। মানসিক হীনম্মন্যতা, মনোবৈকল্য, স্কুল পালানো ও জৈবিক ত্রুটির যে কোনো একটি অবস্থা শিশু-কিশোরকে অপরাধের পথে ঠেলে দেয়। পিতা-মাতার দ্বন্দ্বকলহ শিশু-কিশোরদের মধ্যে মানসিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি করে।
ভীতসন্ত্রস্ত জীবনযাপন শিশুর মনে নিরাপত্তাবোধের অভাব তীব্র হয়ে ওঠে। পিতা-মাতার নিষ্ঠুর আচরণ ও অবহেলা সহজেই শিশুকে বিপথগামী করে তোলে। শিশু-কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ভূমিকা রয়েছে। শিশু আইন ১৯৭৪ কিশোর অপরাধীদের প্রতি পুলিশের ভূমিকা নির্ধারণ করা হলেও তা যে যথাযথভাবে পালন করা হয় না, তার প্রমাণ হাইকোর্টের আদেশ। এ সম্পর্কিত আইনের ৭২ ধারায় স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, আটককৃত শিশুর প্রতি প্রহরারত পুলিশ পিতৃসুলভ ব্যবহার করবেন এবং তার প্রতি যত্নশীল হবেন। ৫০ ধারা অনুযায়ী শিশু বা কিশোর অপরাধীকে আটকের পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবশ্যই জেলা প্রবেশন কর্মকর্তাকে তা অবহিত করবেন। ৪৮ ও ৪৯ ধারা অনুযায়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিশোর অপরাধীকে মুক্তি দিতে পারবেন। তবে যেক্ষেত্রে তা সম্ভব না হবে , সেক্ষেত্রে শিশুকে নিরাপদ স্থানে হেফাজতে রাখবেন।
৪৬ ধারা অনুযায়ী শিশু আইনের ধর্তব্য অপরাধগুলোর সংবাদ থানায় পৌঁছলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা রুজু করবেন এবং প্রয়োজনীয় তদন্েতর ব্যবস্থা নেবেন। ১৩ ধারা অনুযায়ী কোনো শিশুকে আদালতে সোপর্দ করা হলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বে শিশুর অভিভাবককে লিখিতভাবে তা অবহিত করা এবং নির্ধারিত তারিখে অভিভাবক যাতে আদালতে উপস্থিত থাকতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩ ও ৪ ধারা অনুযায়ী শিশু অপরাধীদের সর্বদা কিশোর আদালতে সোপর্দ করতে হবে। ২ ধারা অনুযায়ী অনূর্ধ্ব ১৬ বছরের শিশু-কিশোরকে আইনমোতাবেক শিশু বলা হয়েছে। এ ছাড়াও পি আর বি রোল ৫২১-এর নির্দেশ মোতাবেক কিশোর অপরাধীর মুক্তির পর পুলিশ কর্মকর্তা তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেবেন, দুই জন গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে শিশুটিকে তার অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করবেন।
শিশু অপরাধীদের জন্য টঙ্গী ও যশোরে সংশোধনাগার রয়েছে। পরিকল্পিত কর্মসূচির অধীনে তাদের প্রশিক্ষণ, শিক্ষা ও হাতে-কলমে কাজের মাধ্যমে সংশোধন করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে; কিন্তু পুলিশ বয়স্ক অপরাধীদের সঙ্গে যে আচরণ করেন, সেই একই আচরণ শিশু অপরাধীদের সঙ্গেও করেন। ফলে উদ্রেক করে নানা প্রশ্নের। সংশ্লিষ্ট সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের জন্য মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা হওয়া উচিত কেবল শিক্ষণীয় নয়, পালনীয়। তাহলেই কেবল শিশু-কিশোর অপরাধ ক্রমে কমে আসবে।
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত
জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে কংগ্রেস, স্বীকার রাহুলের, ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র ডাক সোনিয়ার-সংবাদ প্রতিদিন
মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছে কংগ্রেস। অবশেষে স্বীকার করে নিলেন রাহুল গান্ধী। একের পর এক রাজ্যে হারের পর আত্মসমালোচনার পথেই হাঁটলেন রাহুল গান্ধী তথা কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। জনবিচ্ছিন্নতার কথা স্বীকার করে নিয়েও রাহুলের দাবি, বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র কংরেসই। আঞ্চলিক দলগুলোর কোনও আদর্শ নেই। একমাত্র আদর্শগত লড়াইয়েই বিজেপির মতো দলকে হারানো সম্ভব। তাই কর্মীদের উদ্দেশে নতুন করে লড়াই শুরু ডাক দেন দিন। বার্তা দেন মানুষের কাছে ফেরার। এর আগে কংগ্রেসের রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে নানা জল্পনা ছড়িয়েছে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন রাজ্যে আঞ্চলিক দলের সঙ্গে জোট করে লড়াই করা উচিত কংগ্রেসের, দিন কয়েক আগেই প্রশান্ত কিশোর কংগ্রেস হাই কম্যান্ডকে এই পরামর্শই দিয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল এদিন সেই পরামর্শ কার্যত উড়িয়ে দিয়েছেন।
ত্রিপুরার নয়া মুখ্যমন্ত্রীর শপথেও গোষ্ঠীকোন্দলের ছাপ। গরহাজির উপমুখ্যমন্ত্রী এবং কারামন্ত্রী। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে বড়সড় ফাটল ত্রিপুরা বিজেপিতে।–সংবাদ প্রতিদিনের এ খবরে লেখা হয়েছে, ত্রিপুরায় নয়া মুখ্যমন্ত্রীর শপথগ্রহণেও পড়ল গোষ্ঠীকোন্দলের ছাপ। বিপ্লব জমানায় ইতি টেনে নয়া মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মানিক সাহার নাম ঘোষণা করতেই ত্রিপুরাতে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রকাশ হয়ে পড়ে। নতুন মুখ্যমন্ত্রীকে খুশি নয় মন্ত্রিসভার একাংশ। এদিন শপথগ্রহণ পর্বেও সেই ছায়া দেখা গেল। শপথগ্রহণে হাজির ছিলেন না উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মন, কারামন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল-সহ বিধায়কদের একাংশ। যদিও শপথগ্রহণের পর রাজভবনে গিয়েছিলেন দুই মন্ত্রী। বিক্ষুব্ধদের অভিযোগ, বিপ্লব দেবের একনায়কতন্ত্রে অতিষ্ঠ ছিলেন বিধায়ক এবং দলীয় কর্মীদের একাংশ। তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছিলেন বিক্ষুব্ধদের অনেকেই। ক্ষোভে দলত্যাগ করেছিলেন কেউ কেউ। এমন পরিস্থিতিতে বিপ্লব পদ ছাড়লেও তাঁর ঘনিষ্ঠ মানিককে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানোর সিদ্ধান্তে খুশি নন তাঁরা। আদি কংরেসি মানিককে কিছুতেই মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মেনে নিতে পারছেন না দলের দীর্ঘদিনের কর্মী ও বিধায়করা। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের জেরে বড়সড় ভাঙন ঘটতে পারে ত্রিপুরার বিজেপিতে।
গুরুতর অসুস্থ পুতিন, ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট!-আজকাল
গত কয়েকদিন ধরেই রুশ প্রেসিডেন্টের অসুস্থতা নজর কেড়ে নিয়েছিল বিশ্ববাসীর। বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজে হালকা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটা, কম্বলে, মোটা জ্যাকেটে নিজেকে মুড়ে রাখা, কখনও বা ঘনঘন কাশি, এইসব চোখে পড়েছিল সকলের। সেই জল্পনাই কি সত্যি? বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম মারফত জানা গিয়েছে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক। ব্লাড ক্যানসারে আক্রান্ত তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই মৃত্যু পথযাত্রী পুতিন। প্রেসিডেন্টের শারীরিক অবস্থার চাঞ্চল্যকর তথ্য ফাঁস করেছেন সেই দেশের এক ধনকুবের।
ধনকুবেরের সঙ্গে কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ডিং প্রকাশ করেছে ‘নিউ লাইনস ম্যাগাজিন’। যেখানে রাশিয়ার অর্থনৈতিক অবস্থা এবং পুতিনের শারীরিক ও মানসিক অসুস্থতা নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। তবে তাঁর কথা যে রেকর্ড করা হচ্ছে, সেটি সম্পর্কে তিনি জানতেন না। ১১ মিনিটের সেই কথোপকথনের রেকর্ডিং সম্প্রতি প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম। নাম না প্রকাশের শর্তে ওই ধনকুবের জানান, 'রাশিয়ার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন পুতিন। শুধু রাশিয়াই নয়, ইউক্রেন-সহ আরও একাধিক দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছেন তিনি। আসলে ওঁর মস্তিষ্কের বিকৃতিই গোটা পৃথিবী উল্টে দিতে পারে।'
এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও বলেন, 'আমরা চাইছি, পুতিনের মৃত্যু হোক। ওঁর ক্যানসার ওঁকে খেয়ে নিক। নইলে অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ওঁকে ক্ষমতা দেখে সরানো হোক।' তাছাড়াও ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান দাবি করেছেন, পুতিন ক্যানসারে আক্রান্ত। দ্য টাইমস অফ লন্ডনে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনেও উল্লেখ করা হয়েছে এ কথা। জানানো হয়েছে, পুতিন যেখানেই যাচ্ছেন, তাঁর সঙ্গে তিনজন করে চিকিৎসক থাকছেন। সেই তালিকায় রয়েছেন একজন ক্যানসার স্পেশালিস্টও।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৬