কথাবার্তা
কথাবার্তা: 'আফগানিস্তান -পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পর বৃটেন, কোন পথে বাংলাদেশের রাজনীতি!'
সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১৩ জুলাই বুধবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের শিরোনাম :
- বিএনপি নেতাদের সঙ্গে ইইউ রাষ্ট্রদূতের দেড় ঘণ্টার বৈঠক-কালের কণ্ঠ
- রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট: স্পিকার-প্রথম আলো
- জ্বালানি তেলের সঙ্গে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা আসছে- মানবজমিন
- ১৭ জুলাই থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসছে ইসি- যুগান্তর
- কলম্বোতে বিজয় উদযাপন করছেন বিক্ষোভকারীরা-বাংলাদেশ প্রতিদিন
ভারতের শিরোনাম:
- ফের প্রশ্ন নেতৃত্ব নিয়ে, বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগেই ইউরোপ সফরে রাহুল -আজকাল
- গোতাবায়া পলাতক, শ্রীলঙ্কা জ্বলছে, জরুরি অবস্থা জারি, অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট বিক্রমসিঙ্ঘে–আনন্দবাজার পত্রিকা
- দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের ‘শয়তানি দর্শনের’ প্রতিনিধি, কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে বিতর্ক-সংবাদ প্রতিদিন
এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
শ্রীলঙ্কা পরিস্থিতির খবর আজ বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিকগুলোর প্রধান শিরোনাম হয়েছে। এ সম্পর্কে প্রথম আলোর কয়েকটি খবর তুলে ধরছি। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার।
সংকটে জর্জর শ্রীলঙ্কাজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে আজ দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেন। অনির্দিষ্টকালের জন্য এই জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়।অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গণ–আন্দোলনের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার রাতে দেশ ছেড়ে পালান শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তিনি একটি সামরিক উড়োজাহাজে করে মালদ্বীপে গেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। গোতাবায়ার দেশ ছেড়ে পালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করা হলো।
শ্রীলঙ্কার পরিণতির জন্য আমলাতন্ত্রের দায়ও কম নয়-প্রথম আলোর মতামত কলামে লেখা হয়েছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে জনগণের মধ্যে গভীরভাবে গেড়ে বসা একটি ধারণা হচ্ছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বই সুশাসন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। এখন যেমন শ্রীলঙ্কার বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন, রাজনৈতিক নেতৃত্বের বদল হলেই জাদুর মতোই বর্তমান শাসনব্যবস্থার যে সংকট, সেটার অবসান হবে। এ কারণেই শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে সর্বদলীয় সরকারের দাবি জোরেশোরেই উচ্চারিত হচ্ছে।
এটা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই যে শ্রীলঙ্কার রাজনৈতিক নেতৃত্ব চলমান সংকটের জন্য অনেকাংশে দায়ী। আবার এটাও সত্য যে দ্বীপরাষ্ট্রটির আমলাতন্ত্র তাদের দিক থেকে যে ভূমিকা পালন করার কথা ছিল, সেটা পালন করেনি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব সঠিক পথে যাতে থাকে, সে জন্য যে দিকনির্দেশনা দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা দেয়নি।
এর অনেকগুলো কারণ রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, সামন্তীয় মূল্যবোধ থেকে জন্ম নেওয়া প্রভু–ভৃত্যের সম্পর্ক, অনুপযোগী ও সেকেলে নিয়োগপদ্ধতি, প্রয়োজনীয় দক্ষতার ঘাটতি অথবা
দক্ষতা বাড়ানোর সুযোগ না থাকা। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের কাজের মূল্যায়নের জন্য যথাযথ কোনো পদ্ধতি নেই শ্রীলঙ্কায়। পরিণতি কী হবে—এমন ভয়ে তাঁরা কখনো সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এর বদলে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে চলার কৌশল তাঁরা নেন। ঘটনা পরিক্রমায় আইন হয়তো মন্ত্রীকে ধরতে পারে, কিন্তু এর প্রথম শিকার হন নিচু স্তরের সরকারি কর্মচারী।
মানবজমিনের নির্বাচিত কলাম-নির্বাচিত কলাম
বেহুদা প্যাঁচাল-আফগানিস্তান থেকে পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার পর বৃটেন, কোন পথে বাংলাদেশের রাজনীতি এ শিরোনামে লেখা হয়েছে, বিশ্ব রাজনীতি এখন টালমাটাল। মুহূর্তেই পাল্টে যাচ্ছে দৃশ্যপট। নিকট অতীতে পাকিস্তান আর শ্রীলঙ্কা এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ। গণতন্ত্রের সূতিকাগার বৃটিশ রাজনীতিতেও লেগেছে এর ঢেউ। অবশ্য এ অঞ্চলে শুরুটা হয়েছিল আফগানিস্তানে। গত বছরের আগস্টে আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবানরা। পাশের দেশ পাকিস্তান চলতি বছরের এপ্রিলে উত্তাল হয়ে উঠে। বলা নেই, কওয়া নেই হঠাৎই যেন বাজ পড়ে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মাথায়। বিরোধী দলের অনাস্থা ভোটে হেরে বিদায় নেন প্রধানমন্ত্রিত্ব। বিদায়ের পর ইমরান নানা কর্মসূচি নিয়ে এখনো মাঠে রয়েছেন। ওদিকে আগুন জ্বলে ওঠে শ্রীলঙ্কায়। দেশজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা। বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ রাজাপাকসে আত্মগোপনে চলে যান। পরে পদত্যাগ করেন। ইতিমধ্যে শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কার শাষকদের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই বৃটেনে নিজ দলের মন্ত্রীদের গণপদত্যাগ ও এমপিদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পদত্যাগ করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।এবার আসা যাক বাংলাদেশ প্রসঙ্গে। রাজনীতির ক্ষেত্রে দেশ যেন দিন দিন পিছিয়ে যাচ্ছে। শিষ্টাচার, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সৌজন্যতা সম্পূর্ণভাবে হারিয়ে যাচ্ছে রাজনীতি থেকে। দলের নেতার সঙ্গে আরেক দলের নেতানেত্রীর এখন আর আগের মতো হৃদ্যতা নেই।অথচ এক সময় দেশের রাজনীতিতে শিষ্টাচার উদাহরণ ছিল। নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের পরও বিএনপি আর আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক ছিল।এ মুহূর্তে দুই দলের নেতারা যেন একে অন্যের শত্রু।
নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দেন প্রেসিডেন্ট। কিছুদিন চলে এভাবে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি প্রেসিডেন্টের। বিক্ষোভের মুখে প্রেসিডেন্ট গোটাবাইয়া রাজাপাকসেও পদত্যাগ করেন।থেকে।এক এগারোর পর বৃহত্তম দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র জাতীয় কাউন্সিলে উভয় দলের প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছিলেন। যা জাতির মনে আশার সঞ্চার করেছিল। আমাদের রাজনৈতিক নেতারা তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। তারপরও ঈদ, নববর্ষে এক দল আরেক দলকে দাওয়াত দিতো। এখন সেটাও শোনা যায় না। সার্বিক দিক বিবেচনায় দেখা যায় কোথায় যেন এক বাধা।
জ্বালানি তেলের সঙ্গে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা আসছে-মানবজমিন
নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমুখী ধারার মধ্যেই জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা আসছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম অত্যধিক বাড়ায় দেশের বাজারেও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর ইঙ্গিত দিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।তিনি বলেছেন, আমরা বলে পৃষ্ঠা ৮ কলাম ৪
আসছি প্রথম থেকেই যে তেলের দামে অ্যাডজাস্টমেন্টে যাবো। আমরা নিজেদের অর্থে দিয়ে যাচ্ছি ভর্তুকিটা। অন্যদিকে আগামী মাসে বাড়ানো হতে পারে বিদ্যুতের দামও। তবে কত বাড়বে তা নিয়ে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) পর্যালোচনা চলছে।
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
দ্রৌপদী মুর্মু ভারতের ‘শয়তানি দর্শনের’ প্রতিনিধি, কংগ্রেস নেতার মন্তব্যে বিতর্ক-সংবাদ প্রতিদিন
দ্রৌপদী মুর্মু (Draupadi Murmu) মানুষ হিসেবে ভদ্র। কিন্তু তিনি ভারতের ‘শয়তানি দর্শনের’ প্রতিনিধি। এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য় করলেন কংগ্রেস (Congress) নেতা অজয় কুমার। তাঁর মতে, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদীকে ‘আদিবাসীদের প্রতীক’ হিসেবে দেখা ঠিক নয়। স্বাভাবিক ভাবেই এমন বিতর্ক ঘিরে বিতর্ক ঘনিয়েছে। তাঁর এমন মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি (BJP)।
দৈনিকটির অপর এক খবরের শিরোনাম-জয় ভারত, জয় বাংলা’, দ্রৌপদীর মুখে মমতার স্লোগান, হতবাক রাজ্য বিজেপি নেতারা। এখবরে লেখা হয়েছে, এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুর (Draupadi Murmu) মুখে ‘মমতা দিদি’র স্লোগান। হতভম্ব রাজ্য বিজেপি নেতারা! গেরুয়া বৈঠকে ভারতমাতা কি জয় বলাই সকলের অভ্যাস। কিন্তু দ্রৌপদী মুর্মু তার সঙ্গে মঙ্গলবার যোগ করলেন ‘জয় ভারত, জয় বাংলা’। রাজ্যের দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের কাছে ভোট চাইতে এসে তিনি বলেন, ‘ভারতমাতা কি জয়, জয় ভারত, জয় বাংলা।’ সচরাচর অধিকাংশ সভায় ভাষণ শেষে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এই ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেন। সূত্রের খবর, এদিন পশ্চিমবঙ্গ সফরে এসে মমতার সেই জনপ্রিয় স্লোগান এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর মুখে শুনে প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে গেলেন বিজেপি (BJP) নেতারা। শুধু তাই নয়, দৌপদীর গলায় মমতার স্লোগান নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও এদিন জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
ফের প্রশ্ন নেতৃত্ব নিয়ে, বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগেই ইউরোপ সফরে রাহুল-আজকাল
সমালোচনা আগেও হয়েছে। এবারও শুরু হল বলে। কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগে ইউরোপ সফরে চলে গেলেন রাহুল গান্ধী।
এবারেও ব্যক্তিগত সফরেই গেলেন রাহুল। শোনা যাচ্ছে আগামী রবিরার তিনি ফিরবেন। আগামী সোমবারই আবার রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক রয়েছে। সেই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হবে। আর সেই বৈঠকে অনুপস্থিত থাকবেন রাহুল। ওই বৈঠকে কংগ্রেসের প্রস্তাবিত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’–র পরিকল্পনা নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা। যা ২ অক্টোবর শুরু হবে। আর তাই দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগেই এই বিদেশ সফর রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলে দিল।#
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩