নভেম্বর ০১, ২০২২ ১৬:৩২ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: ১ নভেম্বর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-ইত্তেফাক 
  • অডিও ভাইরাল-ভোট কেনার টাকা ফেরত চেয়ে নারী ইউপি সদস্যকে হুমকি-ধামকি! ইত্তেফাক
  • অবৈধ ৮৭ মানি চেঞ্জার আইনের জালে-যুগান্তর
  • মতামত ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’ জনপ্রশাসনকে অকার্যকর করছে -প্রথম আলো
  • দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬২% -কালের কণ্ঠ
  • সংকট সমাধানে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে: প্রধানমন্ত্রী-মানবজমিন
  • প্রতি কেজি চাল ৪২, ধান ২৮ টাকায় কিনবে সরকার -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • বস্ত্রশিল্পে GST প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল তেলেঙ্গানা, মোদিকে চিঠি লক্ষ লক্ষ শিল্পীর -সংবাদ প্রতিদিন
  • তৃণমূলের পঞ্চায়েত-যুদ্ধ শুরু ডিসেম্বরেই! প্রথম সভার শহর বাছাইয়ে ‘রণং দেহি’ ইঙ্গিত অভিষেকের –আজকাল
  • সেতু-বিতর্কে তৃণমূলকে আগলালেন শোভন, বললেন, পোস্তা ব্রিজ এই সরকারের দায় নয় -আনন্দবাজার পত্রিকা

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বিএফআইইউ ও সিআইডির গোয়েন্দা অনুসন্ধান-অবৈধ ৮৭ মানি চেঞ্জার আইনের জালে। বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, দেশে ডলার সংকটের পর থেকে অর্থ পাচারের সবগুলো চ্যানেলে তদারকি বাড়ানো হয়েছে। মানি চেঞ্জারগুলোকেও আনা হয়েছে বিশেষ নজরদারির আওতায়। বৈধ ও অবৈধ শতাধিক মানি চেঞ্জারের অনিয়মের বিষয়ে অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর মধ্যে অবৈধ ৮৭টি প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসাবে অবৈধ এসব প্রতিষ্ঠানের জবানবন্দি গ্রহণ, সম্পত্তির তথ্য সংগ্রহ এবং বক্তব্য প্রদানের জন্য নোটিশ দেওয়া হচ্ছে। অবৈধ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইনের আওতায় আনার এটি প্রথম ধাপ। পর্যাপ্ত তথ্য-প্রমাণ সংগ্রহ করে অবৈধ কার্যক্রমের প্রমাণ সাপেক্ষে এদের বিরুদ্ধে মামলা করবে সিআইডি।

অবৈধ মানি চেঞ্জারের তালিকায় যারা : তালিকায় যেসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে প্রায় সবগুলোই ঢাকায় অবস্থিত। ঢাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় ৮০ ভাগই মতিঝিল, গুলশান, ধানমন্ডি, উত্তরা, মোহাম্মদপুর ও পল্টন এলাকার। এর বাইরে যশোরের তিনটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আইনের জালে আসা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ওয়াইএমসি মানি চেঞ্জার, সানশাইন মানি চেঞ্জার, সিএমসি মানি চেঞ্জার, কেএমসি মানি চেঞ্জার, কসমিক মানি চেঞ্জার। তালিকায় আরও আছে-এমবি মানি এক্সচেঞ্জ, আল মদিনা মানি চেঞ্জার কোং লি., মিম মানি চেঞ্জার, ডব্লিউএমএফ মানি চেঞ্জার, এইচএম ট্রাভেলস, নাইটেঙ্গেল মানি চেঞ্জার, এমএম মানি চেঞ্জার। এদের প্রত্যেকে জবানবন্দি প্রদান করেছে। এদের সম্পদের হিসাবও চাওয়া হয়েছে। ইস্টল্যান্ড মানি চেঞ্জার ও আরিয়ান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সম্পদের তথ্য চেয়ে পত্র পাঠানো হয়েছে। নোটিশ প্রদান করা হয়েছে-দোহার মানি এক্সচেঞ্জ, ওয়েলকাম মানি একচেঞ্জ, খান অ্যান্ড চৌধুরী মানি চেঞ্জার, সোনারগাঁও ট্রাভেল ইন্টারন্যাশনাল, এ জে মানি চেঞ্জারস লি. ও গুলশান-২ এর প্লাডিয়াম মার্কেটের নিচতলার নামহীন একটি প্রতিষ্ঠানকে। এখানে উল্লেখিত সবগুলো নাম বিএফআইইউ’র প্রতিবেদনে এসেছে।

এর বাইরে নোটিশ পাঠানো হয়েছে-আনন্দ মানি চেঞ্জার, খান এন্টারপ্রাইজ, তৃষা মানি চেঞ্জার, রাজ মানি এক্সচেঞ্জ, মির্জা মানি এক্সচেঞ্জ, গ্যালাক্সি মানি এক্সচেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল, আবিয়া মানি এক্সচেঞ্জ, জে.এম মানি চেঞ্জার, অ্যাঞ্জেলস মানি চেঞ্জার, এস.কে মানি চেঞ্জার ও মেঘা মানি চেঞ্জার। তালিকায় আরও নাম আছে- কে.টি মানি এক্সচেঞ্জ, কে অ্যান্ড কে এক্সচেঞ্জ ইন্টারন্যাশনাল, আলম অ্যান্ড ব্রাদার্স মানি এক্সচেঞ্জ, প্রাইম ফরেন মানি এক্সচেঞ্জ, গোল্ডেন মানি এক্সচেঞ্জ, আলম মানি এক্সচেঞ্জ ও তানিয়া মানি এক্সচেঞ্জের। তালিকায় থাকা যশোরের তিন প্রতিষ্ঠান হলো-ভাই ভাই স্টোর, রিপন স্টোর ও ওয়াহিদুল স্টোর। স্বর্ণা মানি একচেঞ্জ, তৈমুর মানি চেঞ্জার, রিলায়েবল মানি একচেঞ্জ, ইস্পা মানি চেঞ্জারস, হাসান মানি চেঞ্জার, সোবাহানবাগের নাইটঙ্গেল মানি একচেঞ্জ, হক মানি এক্সচেঞ্জ, এসএস মানি চেঞ্জার, জে এম মানি চেঞ্জার, আইডিয়াল মানি এক্সচেঞ্জ, জে এন্ড জে মানি এক্সচেঞ্জ, এম কে মানি চেঞ্জার, এয়ার ম্যাগন্টে টুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস।

সিআইডির গোয়েন্দা অনুসন্ধানে অবৈধ প্রতিষ্ঠানের তালিকার আরও নাম আছে-টাইম মানি এক্সচেঞ্জ, নবারুন মানি এক্সচেঞ্জ, আশাহি মানি এক্সচেঞ্জ, তাহসিনা মানি এক্সচেঞ্জ, গুলশান-১ এর এমবি মানি এক্সচেঞ্জ, সন্তু মানি চেঞ্জার, তোন্না মানি এক্সচেঞ্জ, রহমান মানি চেঞ্জার, শাপশা মানি এক্সচেঞ্জ, গুলশান-১ এর গুলশান শপিং সেন্টারের দ্বিতীয়তলার একটি প্রতিষ্ঠান (মালিক : সিহাব)। বি.এন.কে, টিপু মানি চেঞ্জার, কর্নিকা মানি চেঞ্জার, ময়মনসিংহ মানি চেঞ্জার, রিয়েল মানি চেঞ্জার, সিয়াম মানি চেঞ্জার, খাদিজা মানি চেঞ্জার, সানজিদ মানি চেঞ্জার, রিলাইস মানি চেঞ্জার, সানসিটি মানি চেঞ্জার, সারা মানি চেঞ্জার রয়েছে তালিকায়। অবৈধ মানি চেঞ্জারের মধ্যে আরও আছে-ভৈরব মানি চেঞ্জার, কপোতাক্ষ মানি চেঞ্জার, মিরপুর-১০ এর এমবি মানি চেঞ্জার, ই.পি মানি এক্সচেঞ্জ, আমির মানি এক্সচেঞ্জ, মানি মাস্টার এক্সচেঞ্জ, রিলায়েন্স মানি এক্সচেঞ্জ, লিগ্যাল মানি এক্সচেঞ্জ, এস.এম.টি মানি এক্সচেঞ্জ ও টাইম মানি এক্সচেঞ্জ।

সংকট সমাধানে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে: প্রধানমন্ত্রী-মানবজমিন/যুগান্তর

দেশকে উন্নত করতে ‘যে কোনো কাজ’ করার জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখতে যুবসমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 

তিনি বলেছেন, যে কোনো কাজ, কোনো কাজ করে নিজের অর্থ নিজে উপার্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো– এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কারণ কোনো কাজকে আমরা ছোট করে দেখি না। আজ ‘জাতীয় যুব দিবস’-এর উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার’ বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান আসে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো সংকট সমাধানে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল সমগ্র বাংলাদেশে গড়ে তুলছি।

তারেক-জোবায়দার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা-ইত্তেফাক

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়দা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালত এ পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।  দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এসব তথ্য জানান।এর আগে চলতি বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক রহমান ও জোবায়দা রহমানকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা দায়ের ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন।

বিএনপির আন্দোলনের নেতা কে: কাদের-যুগান্তর

বিএনপির আন্দোলনের হুমকির সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপি প্রতিদিন আন্দোলনের হুমকি দেয়। কিন্তু তাদের আন্দোলনের নেতা কে সেটিই তারা জানে না। বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দুজনই দণ্ডিত। একজন এতিমের টাকা আত্মসাৎ করায় দণ্ডিত। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার মহানুভবতায় ঘরে বসে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

মতামত ‘গুরু পাপে লঘু দণ্ড’ জনপ্রশাসনকে অকার্যকর করছে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারের লেখা মতামত কলাম প্রকাশিত হয়েছে -প্রথম আলোতে। সেখানে লেখা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময় প্রশাসনের বিভিন্ন অঙ্গে বাড়াবাড়ি প্রকটভাবে লক্ষণীয় হচ্ছে। পক্ষান্তরে দেখা যাচ্ছে না এর যথার্থ কার্যকারিতা। তাই জনমনে আস্থার সংকটে আছে প্রতিষ্ঠানগুলো। অথচ রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একে টিকিয়ে রাখা অপরিহার্য। যেকোনো ধরনের সরকারব্যবস্থায় জনপ্রশাসনের বিকল্প নেই।

ঠিক তেমনি সে প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া আইনি ক্ষমতার মধ্যে এর কর্মকর্তারা সীমিত না থাকলে বিপত্তি ঘটে বিভিন্ন পর্যায়ে। তাঁদের সীমিত রাখতে রয়েছে নানা ধরনের আইন ও বিধিবিধান। পাশাপাশি এসব কার্যকর করার জন্য আছে প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যায়, কোনো কোনো কর্মকর্তা ক্ষেত্রবিশেষে সীমা লঙ্ঘন করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা নিজের আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে যাচ্ছেন সময়ে সময়ে।

এসব যাঁদের দেখার কথা, তাঁরা একেবারেই কিছু দেখছেন না বা করছেন না, এমনটা বলা যাবে না। আবার আলোচিত কোনো কোনো বেপরোয়া আচরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে যথোপযুক্ত সাজার আওতায় আনা যাচ্ছে না, এমনটাও দেখা যাচ্ছে। অথচ এ ধরনের আচরণ থেকে সবাইকে বিরত রাখতে সে সাজা হওয়া উচিত দৃষ্টান্তমূলক, বিধানও রয়েছে। কিন্তু যাঁরা প্রয়োগ করবেন, মনে হচ্ছে তাঁরা তা করছেন কম্পিত হাতে। এতে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার গ্লানিবোধ থাকে না সেই কর্মকর্তার।

বরং উত্তরোত্তর বেপরোয়া হওয়ার আশকারা পেয়ে যান তাঁরা। আর এর দেখাদেখি নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা গোটা জনপ্রশাসনে। হাল আমলে কয়েকটি ক্ষেত্রে আমরা এ অবস্থা দেখে শঙ্কিত। জনপ্রশাসন সরকারব্যবস্থা পরিচালনার মৌলিক দায়িত্বে রয়েছে। সে দায়িত্ব থেকে তাঁদের কেউ কেউ অন্যায্য আচরণ করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। আবার তাঁদের কেউ কেউ নিজেরাই নিরাপদ নন তাঁদের কোনো জ্যেষ্ঠ সহকর্মীর কাছে। সুস্পষ্ট অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁদেরও হয় না তেমন কোনো শাস্তি। এতে প্রতিষ্ঠানটির কার্যকারিতার পাশাপাশি প্রাসঙ্গিকতার বিষয়টিও চলে আসছে সামনে।

সংবাদমাধ্যমের খবরে এসেছে, নিকট অতীতে একজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাঁর এক জুনিয়র নারী সহকারী কমিশনার ভূমির (এসি ল্যান্ড) সঙ্গে মোটামুটি লম্বা সময় ধরে হয়রানিমূলক অশালীন আচরণ করে আসছিলেন। আর তা করছিলেন কখনো তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে, আবার কখনো অফিসে বসিয়ে রেখে, বিভিন্ন বাক্যবাণে। নালিশ হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে তদন্তে। শাস্তি হয়েছে অভিযুক্ত কর্মকর্তার। তাঁকে তিরস্কার করা হয়েছে। যেখানে আমরা নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলে চলেছি, সেখানে এ জনপ্রশাসন অন্য দুর্বৃত্তদের হাতে নারী হয়রানি বন্ধ করার দায়িত্বে রয়েছে, সেখানে তাঁদেরই একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হয়রানি করছেন তাঁর কনিষ্ঠ সহকর্মীকে। প্রমাণিত হওয়ার পরও শাস্তির মাত্রা নামমাত্র। এটাকে তাৎপর্যহীন বললেও ভুল হবে না।

এই নামমাত্র শাস্তি সেই উৎপীড়ক কর্মকর্তার ওপর কি প্রভাব ফেলল? তিনি কি এ ধরনের অন্যায় করা থেকে বিরত হবেন? তাঁর মতো অন্য যাঁরা, তাঁরা এ থেকে কী শিক্ষা পেলেন? যিনি শাস্তির আদেশ দিলেন, তিনি কিন্তু এই নারী কর্মকর্তাকে তাঁর কনিষ্ঠ সহোদরা বা তনয়ার বিবেচনায় নেননি, এটা বলতেই পারি। অথচ পদমর্যাদার পার্থক্য, বয়স ও জনপ্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তা হিসেবে তাঁর কাছে এটা প্রত্যাশিত ছিল। বরং অতি তুচ্ছ শাস্তি প্রয়োগ করে তিনি বিভাগীয় মামলাটি ‘নিষ্পত্তি’ করলেও ‘ইনসাফ’ করেননি, এমনটা বলা যায়। এতে আমরা ক্ষুব্ধ ও হতাশ।

এরপর থাকছে একটি জেলার একজন সাবেক নারী জেলা প্রশাসকের কথা। প্রত্যাশিত যে নারী হয়ে তিনি কর্মক্ষেত্রে অযাচিত কার্যক্রম থেকে নিজেকে এবং পাশাপাশি গোটা জেলা প্রশাসনকে রাখবেন দূরে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি। তাঁর অধীন একাধিক কর্মকর্তা রাতের বেলা এক সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে এসে ডিসি অফিসে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে শাস্তি দেন। সাজাপ্রাপ্ত ভদ্রলোক একজন সাংবাদিক। প্রশাসনের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না।

হতেই পারে। আর সে সাংবাদিকও করতে পারেন কোনো অন্যায্য কাজ। তবে প্রতিকার কি এভাবে করতে হবে! এতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় গোটা জেলা শহরে। যা-ই হোক, সে সময় সূচনাতে প্রশাসন সক্রিয় ছিল। বিভাগীয় মামলা ও তদন্ত হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে জেলা প্রশাসকের দুটি বেতন বৃদ্ধি স্থগিত করার সাজা দেওয়া হয়। এটাও লঘু দণ্ড বলে বিবেচিত। এর মধ্যে কিছুদিন পরই আমরা দেখলাম, রাষ্ট্রপতি সে দণ্ডিত কর্মকর্তার আপিল গ্রহণ করে সাজা মার্জনা করেছেন। আমাদের শাসনব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি কীভাবে সিদ্ধান্ত নেন, তা অনেকের জানা। সবশেষে আসছি দেশের উত্তরাঞ্চলের একটি উপজেলার একজন ইউএনও রাতে তাঁর সরকারি বাসভবনে দুর্বৃত্ত দ্বারা আক্রান্ত ও গুরুতর জখম হন। স্বাভাবিকভাবে সহানুভূতি পান তিনি। সরকারও নেয় ত্বরিত পদক্ষেপ। হেলিকপ্টার পাঠিয়ে ঢাকায় এনে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় তাঁর।

বদলিক্রমে স্বামীসহ তাঁকে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। উল্লেখ্য, তাঁর স্বামীও অন্য ক্ষেত্রে একই পদে চাকরিরত ছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সব ইউএনওর নিরাপত্তা বিধানের বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সেটা যথার্থ। দীর্ঘদিন চলে আহত ইউএনওর চিকিৎসা। এর মধ্যেই আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জানতে পারি, তাঁর সরকারি বাসভবনে রক্ষিত আলমারির তালা যথাযথ ব্যবস্থাপনায় খুলে সেখানে রক্ষিত ৪০ লাখ টাকা নিয়ে যান তাঁর ভাই। ধারণা করা হয়েছিল, এ টাকার উৎস নিয়ে একটি তদন্ত হবে। কেননা সংশ্লিষ্ট ইউএনও নিছক নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের একজন মেয়ে।

বেতনের বাইরে তাঁর তেমন কোনো বৈধ আয় থাকার কথা নয়। আর বেতনের টাকার উদ্বৃত্ত এত টাকা হওয়া এবং তা ঘরের আলমারিতে রাখার কথাও নয়। সবাই চুপ মেরে গেলেন। কিন্তু যেখানে যা লিপিবদ্ধ থাকার কথা, সেখানে তো তা-ই আছে।

আক্রান্ত ও আহত ইউএনওর প্রতি আমাদের সহানুভূতি রয়েছে। সে মামলায় সংশ্লিষ্ট হামলাকারীর ন্যায়বিচার হোক, এটাও আমরা চাই। চাই সেই ইউএনওর পূর্ণ আরোগ্য, দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন। তবে তাঁকে টাকার হিসাব দিতে বলা তো একান্তই ন্যায্য। এমনকি দুদককে বিষয়টি দেখতে না বলার কোনো কারণও নেই। বিষয়টি তাঁর নিয়ন্ত্রণকারী কর্মকর্তারা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানে না, এমন বলা অসংগত হবে। আর ব্যাপারটা এভাবে ছেড়ে দেওয়া হবে সম্ভাব্য দুর্নীতিকে রীতিমতো প্রশ্রয় দেওয়া। জনপ্রশাসনের কোনো কোনো অঙ্গ জনগণের আস্থায় নেই, এটা বলা মোটেই বাড়াবাড়ি হবে না।

সংবাদমাধ্যমের খবরে আমরা দেখছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কোনো উপাচার্য নিয়োগ–বাণিজ্যে জড়িত। ছাত্রী হলে সিট জোগাড় করতে সতীর্থদের দিতে হয় টাকা, তাঁদের কথামতো অন্যায় কাজে লিপ্ত হতে হয়, এমনটাও শুনে চলছি। মানুষের জানমালের রক্ষক পুলিশের কেউ কেউ নিজেরাই ছিনতাই, ডাকাতি করে, এটাও দেখে চলেছি।

হতে পারে জনপ্রশাসনের কর্তারা কোনো বিচ্ছিন্ন দ্বীপের বাসিন্দা নন। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হলে প্রতিকারের কিছু উদ্যোগ আমরা অতীতে দেখেছি। সেগুলো ক্রমান্বয়ে লোপ পেতে চলেছে। দৃশ্যমান অন্যায় করে পার পেয়ে যাবে সবাই? আর শাস্তি দেওয়া হবে নামমাত্র লোকদেখানো! সময় এসেছে পেছনে ফেরার। আর তা না হলে জনপ্রশাসন সময়ান্তরে তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলতে পারে।

দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬২%-কালের কণ্ঠ

গত এক বছরে দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন ৬২.৩২ শতাংশ বেড়েছে। একই সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে মূল্য বেশি দেখানো বা ওভার ইনভয়েসিংয়ের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি অর্থপাচার হচ্ছে।

বাংলাদেশ ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) প্রকাশিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

বস্ত্রশিল্পে GST প্রত্যাহারের দাবিতে উত্তাল তেলেঙ্গানা, মোদিকে চিঠি লক্ষ লক্ষ শিল্পীর-সংবাদ প্রতিদিন

নরেন্দ্র মোদিই (PM Modi) ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যিনি বস্ত্রশিল্পেও কর বসিয়েছেন। এই অভিযোগ তুলে বস্ত্রশিল্পকে জিএসটির (GST) আওতা থেকে মুক্ত করার দাবিতে উত্তাল তেলেঙ্গানা (Telangana)। লক্ষ লক্ষ বস্ত্রশিল্পী পোস্টকার্ড লিখলেন মোদির উদ্দেশে। সোমবারই বস্ত্রশিল্পে জিএসটি চাপানোর প্রতিবাদে রাজ্যের নিজাম কলেজ চত্বরে একটি জমায়েত হয়। তারপর সেখান থেকে প্রতিবাদীদের মিছিল শুরু হয়। যা কলেজ চত্বর থেকে শুরু করে ডাকঘরে গিয়ে শেষ হয়।

‘ধার করে দেহ ফিরিয়েছি’, ক্ষোভে ফুঁসছে মোরবির দুর্ঘটনায় নিহত বাংলার যুবকের পরিবারের-সংবাদ প্রতিদিন

ছুটির দিনে বেড়াতে গিয়ে ভিনরাজ্যে প্রাণ হারাতে হয়েছে। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো এই খবরে এসে পৌঁছেছিল কালনার (Kalna) যুবকের বাড়িতে। শোক খানিকটা সামলে ছেলের মরদেহ ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন প্রিয়জনরা। কিন্তু সেই দেহ যেভাবে ফিরল, তাতে চমকে উঠলেন তাঁরা। মুখ রক্তাক্ত, চেনার উপায় নেই, পোশাক দেখে শুধু ছেলের দেহ বলে চিনতে পারছেন মা। আর তাতে শোক যেন আরও পাথরের মতো চেপে বসল। যাঁরা মৃত হাবিবুলকে সঙ্গে নিয়ে ফিরেছিলেন, তাঁদের অভিযোগ, কোনও সাহায্যই করেনি গুজরাট (Gujarat) সরকার। বিমান ভাড়া পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে ধার করে দেহ ফেরাতে হয়েছে।

সেতু-বিতর্কে তৃণমূলকে আগলালেন শোভন, বললেন, পোস্তা ব্রিজ এই সরকারের দায় নয়-আনন্দবাজার পত্রিকা

পুরনো দলের পাশে দাঁড়ালেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। গুজরাতের মোরবীতে সেতু ভাঙে পড়ার ঘটনায় হঠাৎই কলকাতার পোস্তার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার প্রসঙ্গ টানতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তার জবাব দিলেন তৃণমূলের প্রাক্তনী এবং বর্তমানে খাতায়-কলমে বিজেপিতে থাকা শোভন। কলকাতার প্রাক্তন মেয়র জানিয়ে দিলেন, পোস্তার ব্রিজ ভাঙার দায় কোনও ভাবেই তৃণমূল সরকারের উপর বর্তায় না। তার কারণ ওই ব্রিজ তৃণমূল সরকার তৈরিই করেনি। শোভন বলেছেন, ‘‘ব্রিজের বরাত দেওয়া তো বটেই, তার কাজও শুরু হয়েছিল তৃণমূলের আগের সরকারের আমলেই। সেই প্রক্রিয়ায় যে অনিয়ম হয়েছিল, তার দায় আগের সরকারেরই।’’

গুজরাতের মোরবীতে পায়ে চলা সেতু ভেঙে নদীতে পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৪১ জনের। ৬ বছর আগে কলকাতার পোস্তাতেও বিবেকানন্দ সেতু ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয়েছিল ২৭ জনের। শোভন বলেন, ‘‘ওই ঘটনা ২০১৬ সালের ৩১ মার্চে হলেও ওই ব্রিজ তৃণমূল সরকার তৈরি করেনি। তৃণমূল উত্তরাধিকার সূত্রে ওই ব্রিজের কাজের ভার পায়। তারা শুধু সেই কাজ শেষ করেছিল।’’

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১