ডিসেম্বর ০৬, ২০২২ ১৫:২৫ Asia/Dhaka

শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা!কথাবার্তার প্রাত্যহিক আসরে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আজ ৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবারের কথাবার্তার আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি। তারপর দুটি খবরের বিশ্লেষণে যাব। বিশ্লেষণ করবেন সহকর্মী সিরাজুল ইসলাম।

ঢাকার কয়েকটি খবরের শিরোনাম

  • টিআইবির বিবৃতি খাদের কিনারে ব্যাংক খাত-প্রথম আলো
  • বর্তমান সরকার ভূমি সেবায় আপসহীন ’-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • ভোট চুরি করলে জনগণ জানে কীভাবে সরকার উৎখাত করতে হয়: প্রধানমন্ত্রী-মানবজমিন
  • তিন স্তরে মজুদে অস্থির চালের বাজার-যুগান্তর
  • জ্বালানী তেল আমদানিতে ডলার সংকট-ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না বিপিসি-যুগান্তর
  • জামিন পেলেন হাজী সেলিম–ইত্তেফাক
  • ‘কোন আইনে একটি পরিবার এতগুলো ব্যাংকের মালিকানা পেল?’-কালের কণ্ঠ

কোলকাতার শিরোনাম:

  • OMR শিটে শূন্য, SSC’র তালিকায় ৫৩! ‘ভূতের কাজ নয়’, কড়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়-সংবাদ প্রতিদিন
  • বিজেপির এজেন্টদের মতো কাজ করছে পুলিশ, যোগীরাজ্যে উপনির্বাচনে অভিযোগ সপা-র-আনন্দবাজার পত্রিকা

শ্রোতাবন্ধুরা! শিরোনামের পর এবারে বিশ্লেষণে যাচ্ছি। 

বিশ্লেষণের বিষয়:

১. ‘বুধবার থেকে পাড়া-মহল্লায় পাহারায় থাকবে আওয়ামী লীগ’-ওবায়দুল কাদেরের উদ্ধৃতি দিয়ে এই শিরোনাম করেছে বাংলাদেশের অনেক পত্রিকা। কী বলবেন আপনি?

২. ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তেহরান টেকসই পরমাণু চুক্তি চায় এবং এ ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ হবে রেডলাইন। আসলে কী চুক্তি হবে?

বিশ্লেষণের বাইরের কয়েকটি খবর:

ইসলামী ব্যাংকসহ তিনটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ভুয়া ঠিকানা ও অস্তিত্ববিহীন কোম্পানির নামে কয়েক হাজার কোটি টাকা সরিয়ে নেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। বেসরকারি সংস্থাটি মনে করে, এই পরিস্থিতি খেলাপি ঋণ ও অর্থ পাচারে জর্জরিত ব্যাংক খাতকে খাদের কিনারে ঠেলে দিয়েছে।

সংস্থাটি আজ সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ব্যাংক খাতে আরও গভীর সংকট প্রতিরোধের লক্ষ্যে অবিলম্বে ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে ‘প্রকৃত মালিকানার স্বচ্ছতা’ আইন প্রণয়ন করতে হবে। একই সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের নজরদারি সহায়ক ‘কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ডে (সিআরএস)’ যুক্ত হওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।

টিআইবি

ব্যাংক খাতের এসব ঘটনা দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর জন্য ভয়ংকর উদ্বেগজনক মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাধারণ গ্রাহকদের ব্যাংক থেকে ন্যূনতম অঙ্কের ঋণ নিতে গেলে প্রচুর কাগজপত্র জমা দিতে হয়। সেখানে ভুয়া কিংবা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অবলীলায় হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে তুলে নেওয়া হচ্ছে। গত ১৪ বছরে পূর্বের তুলনায় মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বারবার খেলাপি ঋণের সংজ্ঞায় পরিবর্তন হয়েছে। পুনঃ তফসিল করেও খেলাপি ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না। প্রকৃতপক্ষে কারা এই বিপুল পরিমাণ অর্থের সুবিধাভোগী, তা দেশবাসীর জানার অধিকার আছে বলেও মন্তব্য করেন ইফতেখারুজ্জামান।

আলোচিত বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি, পি কে হালদারের ব্যাংক লুট ও অর্থ পাচারের পরও ব্যাংক খাতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফেরানোর লক্ষ্যে কোনো কার্যকর উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচারের নির্ভরযোগ্য বহু তথ্য প্রতিনিয়ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে চালান জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থ পাচারের ঘটনা ঘটছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিন স্তরে মজুতে অস্থির চালের বাজার০যুগান্তর

দুর্ভিক্ষের আতঙ্কে ভরা মৌসুমে চালের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। ব্যবসায়ী, কৃষক এবং ভোক্তা পর্যায়ে আপৎকালীন মজুতের প্রভাবে বাজারে চালের দাম বাড়ছে। গত এক মাসে মোটা চালের দাম কেজিতে ৪ থেকে ৬ টাকা বেড়েছে। একই সময়ের ব্যবধানে আটার দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভরা মৌসুমে চালের দাম বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে খাদ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মনিটরিং টিম।

চালের মূল্য বৃদ্ধি

খাদ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি গুদামে ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৮৪৯ মেট্রিক টন চাল ও ২ লাখ ৯৮ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন গম মজুত রয়েছে। চাল ও গমের মোট মজুত ১৫ লাখ ৯৪ হাজার ৯০২ মেট্রিক টন। এ মজুত থেকে আপৎকালীন যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকার রেশনিং করবে। তাছাড়া সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি, ওএমএস, বিভিন্ন সংস্থার রেশনিংও এই মজুত থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে।

অপর দিকে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানান, যত কথা বলা হোক না কেন আমরা ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছি। তারা যা চাইবে তাই হবে। আগামী বছর বিশ্বে দুর্ভিক্ষ হবে-এ ধরনের খবর প্রচার হওয়ার পর ব্যবসায়ীরা অবৈধ মজুত গড়ে তুলছে। তারা বেশি দামে ধান ক্রয় করছে। ফলে বাজারে চালের দাম বেড়েছে। তারা আরও জানান, তারা তো বেশি দামে ক্রয় করে কম দামে বিক্রি করবে না। অনেকে ব্যবসায়ী ঋণ করে ধান ক্রয় করছেন বলেও জানান তারা। অপর দিকে কৃষকরাও এ বছর সব ধান বিক্রি করছেন না। প্রয়োজনমাফিক বিক্রি করে বাকি ধান তারা মজুত করছে। ফলে বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। এ ছাড়া ভোক্তারাও প্রয়োজনের তুলনায় বেশি করে চাল কিনে মজুত করছেন। যার এক বস্তা দরকার সে আতঙ্কিত হয়ে দুই বস্তা ক্রয় করছে। এ সব মজুদের বিরূপ প্রভাব পড়ছে চালের বাজারে।

ভোট চুরি করলে জনগণ জানে কীভাবে সরকার উৎখাত করতে হয়: প্রধানমন্ত্রী-মানবজমিন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সব সময় জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এসেছে। কখনো ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসেনি। আমাদের বিরুদ্ধে সবসময় একটা অপবাদ দেয়া হয়- আমরা নাকি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছি। আমরা ভোট চুরি করতে যাবো কেন। জনগণ আমাদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দেয়। তিনি আরও বলেন, ভোট চুরি করলে জনগণ ছেড়ে দেয় না। জনগণ জানে সেই সরকার কীভাবে উৎখাত করতে হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)

আজ দুপুরে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। 

বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপিকে কেন মানুষ ভোট দেবে। তারা তো টাকা দিয়ে মনোনয়ন দেয়। মির্জা ফখরুল একজনকে মনোনয়ন দেয়, রিজভী আরেকজনকে দেয়, লন্ডন থেকে তারেক রহমান বেশি টাকা নিয়ে আরেকজনকে মনোনয়ন দেয়। বিএনপির দুজন নেতা আমার কাছে নালিশ দিয়েছে।

সিলেটের ইনাম আহমেদ চৌধুরী আমাকে বলেছেন, টাকা দেই নাই বলে আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। এটাই হলো বিএনপির চরিত্র।

গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গুজব ছড়াচ্ছে ব্যাংকে টাকা নেই। সেটা বলে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়ার হিড়িক পড়েছে। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে ঘরে রাখলে চোরের সুবিধা হবে। আমি আজও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে কথা বলেছি। অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। ইনশাআল্লাহ আমাদের ব্যাংকে টাকার কোন সমস্যা নেই। আপনারা গুজবে কান দেবেন না।

তিনি বলেন, বিজয়ের মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে। ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীকে বিজয়ের মাসের অভিনন্দন জানাচ্ছি। কারণ, এ দেশের প্রতিটি সংগ্রামেই ছাত্রলীগের অবদান রয়েছে। 

আলাউদ্দিন নাসিমের প্রশ্ন ‘কোন আইনে একটি পরিবার এতগুলো ব্যাংকের মালিকানা পেল?’-কালের কণ্ঠ

‘দেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী প্রতি পরিবার থেকে সর্বোচ্চ ২ জন ব্যাংকের পরিচালক হতে পারত। ৪ বছর আগে তা পরিবর্তন করে ৪ জন করা হয়। পরিবার বলতে এ ক্ষেত্রে মা-বাবা, ভাই-বোন, ছেলে-মেয়ে সবাইকে মিলে বোঝানো হয়েছে। কোনো ব্যাংকে একক নিয়ন্ত্রণে রেখে মালিকরা যাতে অনিয়মে না জড়িয়ে পড়ে, সে জন্য এই আইন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা লেখেন। তিনি কোনো ব্যাংক বা ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে লেখেন, ‘বাংলাদেশে একটি পরিবারের মালিকানায় ৭টি ব্যাংক এবং ২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানা এবং অনিয়ম সম্পর্কে কয়েক দিন ধরে দেশের সব সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম। কোন আইনে একটি পরিবার এতগুলো ব্যাংকের মালিকানা পেল সে সম্পর্কে কোনো আলোচনা দেখছি না কোথাও। ’

আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম লেখেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, এমনকি সুশীল সমাজের যাঁরা প্রতিনিয়ত আর্থিক খাতের দুর্নীতি-অনিয়ম সম্পর্কে বক্তব্য বিবৃতি দেন, তাঁদের থেকেও এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় না। তাহলে এক পরিবারের সর্বোচ্চ ৪ জন পরিচালক থাকার আইনটি কি কার্যকর নয়?’

আইনের ফাঁক নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি লিখেন, আইনের ফাঁকফোকর বের করে অনিয়মের মাধ্যমে একাধিক ব্যাংকের একক মালিকানা অর্জন করা হয়েছে কি না। তার ভাষায়, ‘ব্যাংকিং সেক্টরে একক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দুর্নীতি, অনিয়ম দূর করার জন্য এই বিষয়টির যথাযথ ব্যাখ্যা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ প্রয়োজন। ’

নির্বাচিত কলাম আমরা কি বর্বর অমানবিক যুগে বাস করছি?-মানবজমিন

২০২১ সালে সারা  দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৫ হাজার ৩৭১টি। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন এবং আহত হয়েছেন ৭ হাজার ৪৬৮ জন। নিহতদের মধ্যে ৮০৩ জন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রী। ফি বছর প্রকাশিত এই হিসাব মিলালে দেখা যাবে মৃত্যু কমছে না, বাড়ছেই। কথা হচ্ছে দায়িত্বশীল পদে যারাই আছেন তাদের কাছ থেকে রাষ্ট্র পরিচালনায় আরও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ কাম্য। একটি দুর্ঘটনা একটি পরিবারের জন্য সারা জীবনের কান্না। সেখানে মৃত্যু বাড়ছে না বরং কমছে এমন কথার চেয়ে জরুরি হচ্ছে দুর্ঘটনায় যেন আর একজন মানুষেরও মৃত্যু না হয় সে বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া।

একটি ফুটেজ ঘুরে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। একটি গাড়ির নিচে একজন নারী। আর সেই গাড়িটি হায়েনার মতো ছুটছে। কী অমানবিক! নির্মম! মর্মান্তিক! হৃদয়বিদারক! যে ভাষাতেই এই নির্মমতাকে লিখি না কেন মনে হচ্ছে তার পূর্ণ প্রকাশ হচ্ছে না।

কতোটা বর্বর হতে পারে মানুষ। একজন মানুষ গাড়ির নিচে পড়ে গেল আর তাকে রক্ষার চেয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করাই বুঝি অনেক বেশি জরুরি! আর এই গাড়িটির চালক একজন তথাকথিত শিক্ষায় (?) শিক্ষিত বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক। তথাকথিত বলছি এই জন্য যে, যিনি একজন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত এবং যে ধরনের জ্ঞান থাকলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন তাতে অন্তত মানবিক বোধ সম্পন্ন একজন মানুষ হওয়ার কথা। অথচ তিনি একজন আততায়ীর ভূমিকায়। সেদিন চালকের আসনে ব্যক্তির নাম আজহার জাফর শাহ্। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক। ২০০৭-২০০৮ সালের দিকে নৈতিক স্থলনের অভিযোগে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।

কতটা অমানবিক হলে চাকার নিচে একজন মানুষকে টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে গেছেন শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত পর্যন্ত। তাও প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা। কি অপরাধ ছিল রুবিনা আক্তারের। ২রা ডিসেম্বর তিনি বোনের স্বামীর  মোটরসাইকেলে করে হাজারীবাগ যাচ্ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে আসামাত্র একটি প্রাইভেটকার তাদের  মোটরসাইকেলে ধাক্কা দিলে ছিটকে ওই গাড়ির সামনে পড়ে যান রুবিনা। আর রাস্তার পাশে তার বোন জামাইও পড়ে যান। কিন্তু গাড়ির সামনে রুবিনা পড়লেও চালক গাড়ি না থামিয়ে চালাতে শুরু করেন। এতে করে রুবিনার ওড়না গাড়ির চাকার সঙ্গে  পেঁচিয়ে আটকা পড়ে যান। এভাবে ওই গাড়িচালক আটকে পড়া রুবিনাকে নিয়েই টিএসসি মোড় হয়ে নীলক্ষেতের দিকে  বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে  যেতে থাকেন। আর তার  পেছনে পেছনে প্রত্যক্ষদর্শীরা ছুটতে থাকেন। পরে নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ  থেকে পলাশী অভিমুখী সড়কের মুখে চালককে আটকে রুবিনাকে উদ্ধার করেন পথচারীরা। আর ওই চালককে দেন গণপিটুনি। পরে পুলিশ এসে চালক ও রুবিনাকে উদ্ধার করে ঢাকা  মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু রুবিনাকে আর বাঁচানো যায়নি। রুবিনার স্বামী মারা  গেছেন এক বছর আগে। একমাত্র সন্তান এখন এতিম। অথচ একটু সাবধানতা, সতর্কতা, সচেতনতা এ রকম একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে বাঁচাতে পারতো। নিজের রিপোর্টিং ব্যস্ততায় যতবার এই দুর্ঘটনার কথা ভুলতে চাই ততই আরও বেশি করে মনে পড়ছে। এই প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক লেখালেখি চলছে। পাঠকরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। কয়েকজন পাঠকের প্রতিক্রিয়া এখানে প্রকাশ না করে পারছি না।  

মোহাম্মদ সোহেল হাসান লিখেছেন, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা নেই বলেই জনগণ নিজের হাতে আইন তুলে নিতে বাধ্য হয়। চালকও  বেশ ভালোভাবেই জানতো  যে, কোনোভাবে গন্তব্যে   পৌঁছাতে পারলেই আমি মুক্ত। জনগণ নগদ নগদ  যে বিচার করেছে সেটাই চূড়ান্ত বিচার মনে করছি।

আশরাফ চৌধুরী লিখেছেন, এত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা একটা ট্রাফিক পুলিশ নাই  সেখানে? কী অদ্ভুত দেশ!  কোথায় মানবতা, কোথায় দয়া-মায়া, দায়িত্বপূর্র্ণ গাড়ি চাল না? এটার জন্য গাড়ির চালক, মালিক, প্রশাসন, সমাজ সকলে দায়ী। এটা ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দিয়ে ফেলে  দেয়ার দায় থেকে বাঁচার জন্য পলায়নের চেষ্টা। এগুলোর বিচারের দীর্ঘসূত্রতা না করে প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক উপযুক্ত ক্ষতিপূরণসহ সাজা দিতে হবে।

আরও অনেক প্রতিক্রিয়া এসেছে পাঠকমহল থেকে। যার বেশির ভাগই প্রকাশ সহনীয় নয়। সবাই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্ষুব্ধ। 

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

মেডিক্যালে উত্তেজনা, তালা ভাঙলেন রোগীর পরিজন! কোথায় পুলিশ? মামলা হাই কোর্টে-আনন্দবাজার পত্রিকার এ খবরে লেখা হয়েছে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। বিপাকে পড়ছেন রোগীর পরিজন। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ এনে হাই কোর্টে মামলা করেছেন এক রোগীর আত্মীয়। এ খবরে লেখা হয়েছে, হাসপাতালের অধ্যক্ষ-সহ বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানকে আটক করে রেখেছেন বিক্ষোভকারীরা। এর ফলে বিপাকে পড়ছেন রোগীর পরিজন। আরও অভিযোগ, প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাচ্ছেন না বলে ইট দিয়ে তালা ভেঙে প্রশাসনিক ব্লকের ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেছেন রোগীর আত্মীয়রা। অপর এক শিরোনামে লেখা হয়েছে, ৩০ ঘণ্টা ধরে আটকে আমরা, অসুস্থ হয়ে পড়ছি’, কাতর আর্জি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের।

OMR শিটে শূন্য, SSC’র তালিকায় ৫৩! ‘ভূতের কাজ নয়’, কড়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়-সংবাদ প্রতিদিন

নবম-দশমে আরও ৪০ বেআইনি চাকরি (SSC Scam) সুপারিশের হদিশ। এর আগে ১৮৩ বেআইনি সুপারিশে চাকরির খোঁজ পেয়েছিল সিবিআই (CBI)। মঙ্গলবারের মধ্যে এই ৪০ জনের নামের তালিকা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে। প্রকাশ করতে হবে OMR শিটও। এদিন বেআইনি চাকরি সুপারিশের প্রমাণ দেখে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় পর্যবেক্ষণ, “এটা কোনও ভূতের কাজ নয়, কমিশনের অফিসে যাঁরা কাজ করেন তাঁরাই করেছেন।”

বিজেপির এজেন্টদের মতো কাজ করছে পুলিশ, যোগীরাজ্যে উপনির্বাচনে অভিযোগ সপা-র-সংবাদ প্রতিদিন

উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) একটি লোকসভা ও দু’টি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল সমাজবাদী পার্টি (Samajwadi Party)। সবচেয়ে বেশি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ উঠেছে মইনপুরী লোকসভা আসনটি নিয়ে। সেখানে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন মুখ‌্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) স্ত্রী ডিম্পল যাদব (Dimpal Yadav)। এদিন, অখিলেশ ও ডিম্পল দু’জনেই অভিযোগ করেছেন, প্রয়োজনের সময় বহু চেষ্টা করেও তাঁরা প্রশাসনের কোনও কর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।#

পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৪

ট্যাগ