জানুয়ারি ৩০, ২০২৩ ১১:৩৮ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা: আজ ৩০ জানুয়ারি সোমবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

বাংলাদেশের শিরোনাম :

  • আওয়ামী লীগ কখনও দেশ ছেড়ে পালায় না- শেখ হাসিনা-যুগান্তর
  • আর্থিক খাতের সংস্কারসহ অর্থনীতিতে ৫ চ্যালেঞ্জ -যুগান্তর
  • নদী দখল নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ -প্রথম আলো
  • বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি জটিল করছে ইউক্রেন যুদ্ধ: রিপোর্ট-ইত্তেফাক
  • দেশে ব্যবসায় দুর্নীতিই বড় বাধা -মানবজমিন
  • ২৭ দিনে প্রবাস আয় ১৬৭ কোটি ডলার -কালের কণ্ঠ
  • দূষিত শহরে আজ শীর্ষে ঢাকা, লাহোর দ্বিতীয় -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কোলকাতার শিরোনাম:

  • পুলিশ কর্মকর্তার গুলিতে ওড়িশার মন্ত্রী মারা গেছেন -এনডিটিভি
  • আপনারা কিসের ভিত্তিতে বলছেন বিরোধী শিবির ছত্রভঙ্গ? -সংবাদ প্রতিদিন
  • মন্ত্রীকে গুলি করা সেই পুলিশকর্মী মানসিক রোগী! আনন্দবাজার পত্রিকা

এবার বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

গণশুনানি লাগবে না, প্রজ্ঞাপনেই জ্বালানির দাম বাড়াতে পারবে সরকার-ইত্তেফাকসহ কয়েকটি দৈনিকের এ খবরে লেখা হয়েছে, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ জ্বালানির দাম বাড়ানো-কমানোর ক্ষমতা সরাসরি সরকারের হাতে নিতে সংসদে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন), বিল-২০২৩’ পাশ হয়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল রবিবার সংসদে বিলটি পাশের প্রস্তাব করলে এতে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির (জাপা) দুই জন ও গণফোরামের এক জন সংসদ সদস্য। তাদের আপত্তি-সমালোচনার মুখেই পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাশ হয়েছে।বিলটি পাশের প্রতিবাদে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান সংসদ থেকে কিছু সময়ের জন্য ওয়াক আউট করেন।

নদী দখল নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ-প্রথম আলো

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান হাওলাদার অভিযোগ করেছেন, কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর আত্মীয়স্বজন এবং তাঁকে যাঁরা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন, তাঁরা সবাই নদী দখলদার। এসব দখলদারকে আড়াল করতে তিনি নদী দখলদারদের তালিকা বাতিল করে দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে নদী রক্ষা কমিশন এ তালিকা তৈরি করেছিল।

রাজনীতির খবর: ইউক্রেন যুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছে। এর পাশাপাশি ঢাকার পক্ষপাতহীন পররাষ্ট্রনীতিকে পরীক্ষার মুখে ফেলেছে মস্কো-ওয়াশিংটনের বিরোধ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া উভয় দেশের সঙ্গেই বাংলাদেশের সুসম্পর্ক প্রয়োজন। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়ায় সেই সম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হবে। ইউরোপিয়ান ফাউন্ডেশন ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজ (ইএফএসএএস)-এর প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। ইত্তেফাকে খবরটি পরেবিশিত হয়েছে।

বিষয়টি জনসভায় ট্রেনভাড়া-২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের জনসভায় যাত্রী (নেতা-কর্মী) পরিবহনের জন্য রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল মোট আটটি বিশেষ ট্রেন ভাড়া দিয়েছিল। এসব ট্রেনে করে সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা ও জয়পুরহাট জেলার নেতা-কর্মীরা রাজশাহী শহরে এসে দলের সমাবেশে যোগ দিতে পেরেছিলেন। শুধু একটি ট্রেন নয়, গুনে গুনে আটটি ট্রেন রাজনৈতিক সমাবেশের জন্য ভাড়া দেওয়ার নজির সৃষ্টি করেছে রেলওয়ে। এতে রেলওয়ের আয় যেমন বেড়েছে, তেমনি গণতন্ত্রের জন্য ‘কিছুটা’ হলেও তারা অবদান রাখতে পেরেছে। সংবাদ বিশ্লেষণে প্রশ্ন করা হয়েছে, প্রথম প্রশ্ন—বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কি বিএনপির আবেদনে সাড়া দেবে?

দ্বিতীয় প্রশ্ন—রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্টের আশঙ্কায় বিএনপির আবেদনটি কি বিবেচনার অযোগ্য বলে খারিজ করে দেওয়া হবে?

বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ ছিল গত বছরের ৩ ডিসেম্বর। সেই গণসমাবেশের দুই দিন আগে রাজশাহীতে হঠাৎ পরিবহন ধর্মঘট শুরু হয়। তখন রাজশাহী বিভাগীয় পরিবহন মালিক সমিতি দাবি করেছিল, বিএনপির গণসমাবেশের সঙ্গে ধর্মঘটের কোনো যোগসূত্র নেই। বিষয়টি ‘কাকতালীয়’।বিএনপির সমাবেশ শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে আকস্মিকভাবে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। মাঝখানে তিন দিন চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।পুরোনো এই স্মৃতির কারণে অনেকে হয়তো বিশ্বাস করতে চাইবেন না যে আওয়ামী লীগের মতো সমাবেশের জন্য বিএনপিও ট্রেন ভাড়া করতে পারবে। প্রথম আলোর সংবাদভাষ্য এটি। দৈনিকটির অপর এক শিরোনাম এরকম-মতামত: রম্যকথন-বাহ, আওয়ামী লীগের সমাবেশের জন্য বিশেষ ট্রেন!

অর্থনীতির খবর:  যুগান্তরের শিরোনাম-আর্থিক খাতের সংস্কারসহ অর্থনীতিতে ৫ চ্যালেঞ্জ

বিস্তারিত খবরে লেখা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে অর্থনীতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সামনে ৫টি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো-আর্থিক খাতের সংস্কার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং বেসরকারি খাতের সম্প্রসারণ অর্থাৎ বিনিয়োগ বাড়ানো। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।

কালের কণ্ঠের খবরে লেখা হয়েছে,দেশে চলমান তীব্র ডলার সংকটের সময় প্রবাস আয়ে কিছুটা ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম ২৭ দিনে প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ১৬৭ কো‌টি (১ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার

দেশে ব্যবসায় দুর্নীতিই বড় বাধা-মানবজমিন

দেশে ব্যবসার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতে দুর্নীতিই প্রধান বাধা। একইসঙ্গে বড় দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো,   ঋণপ্রাপ্তির অপর্যাপ্ততা ও অদক্ষ প্রশাসন। এছাড়া যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিককালের উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার সংকট ও অস্থায়ী নীতি ব্যবসার পরিবেশকে আরও জটিল করে তুলেছে। এ ছাড়া ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে ব্যবসার পরিবেশের অবনতি হয়েছে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর বাংলাদেশ ব্যবসায় পরিবেশ ২০২২: উদ্যোক্তা জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে। চলমান অর্থনৈতিক বাস্তবতায় যোগ হয়েছে আরও নতুন ৩টি চ্যালেঞ্জ। 

এবারে কোলকাতার কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:

ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর দাস মারা গেছেন। রোববার রাজ্যটির ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরের গান্ধী চকের কাছে তাকে গুলি করেন এক পুলিশ কর্মকর্তা। গুলিতে গুরুতর আহত স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোরকে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেই মৃত্যু হয় তার। অভিযুক্ত ওই পুলিশ কর্মকর্তার পদ সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর। রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর দাসকে রোববার ঝাড়সুগুদা জেলার ব্রজরাজনগরের গান্ধী চকের কাছে একজন সহকারী সাব-ইন্সপেক্টর গুলি করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী নব কিশোর একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার পথে তাকে গুলি করা হয় এবং সেটি তার বুকে লাগে।

আর আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে লেখা হয়েছে, পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন ওড়িশার স্বাস্থ্যমন্ত্রী নবকিশোর দাস। তাঁকে খুনে অভিযুক্ত ওড়িশা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর মানসিক রোগী। দীর্ঘ দিন ধরেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে পিস্তল দেওয়া হয়েছিল, কেনই বা তাঁকে পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ পদে বহাল রাখা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

আপনারা কিসের ভিত্তিতে বলছেন বিরোধী শিবির ছত্রভঙ্গ?-আশার কথা রাহুলের মুখে-সংবাদ প্রতিদিন

এম কে স্ট্যালিন, সুপ্রিয়া সুলে, আদিত্য ঠাকরে থেকে ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতিরা ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’য় পা মিলিয়েছেন। কিন্তু এই যাত্রা থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অখিলেশ যাদবদের দল। কন্যাকুমারী থেকে শুরু করে কাশ্মীর পর্যন্ত প্রায় ৩৮৫০ কিলোমিটার পদযাত্রা আজ শেষ হল। যাত্রার শেষে আগামিকাল, সোমবার শ্রীনগরে শের-ই-কাশ্মীর স্টেডিয়ামে জনসভা। কংগ্রেসের তরফে ২১টি বিরোধী দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস নেতাদের হিসেবে, খুব বেশি হলে ১২টি রাজনৈতিক দলের নেতা বা প্রতিনিধি সেখানে হাজির থাকবেন। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টি (এসপি), তেলুগু দেশমের মতো দল হয়তো থাকবে না। আম আদমি পার্টির মতো অনেক দলকে আবার কংগ্রেস আমন্ত্রণই জানায়নি।

বিরোধী শিবিরের এই ছত্রভঙ্গ পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়েও আজ ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর পাল্টা প্রশ্ন, “আপনারা কিসের ভিত্তিতে বিরোধী শিবির ছত্রভঙ্গ বলছেন? বিরোধীদের বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির পরে বিরোধী ঐক্য তৈরি হয়। এটা মতাদর্শের লড়াই।” কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর পর্যন্ত ‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র রাজনৈতিক ফায়দা মিলবে কি না, তা নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে প্রশ্ন ছিল। এই যাত্রার শেষে কংগ্রেসের পিছনে বাকি বিরোধীরা এসে দাঁড়াবে কি না, প্রশ্ন ছিল তা নিয়েও। রাহুলের দাবি, “এই যাত্রার অবশ্যই রাজনৈতিক প্রভাব পড়বে। নির্দিষ্ট ভাবে কী প্রভাব পড়বে, তা এখনই বলতে পারব না।” বিরোধী জোট নিয়ে তাঁর দাবি, “বিরোধীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। কিন্তু কথাও হবে। বিরোধীরা ছত্রভঙ্গ নয়। বিরোধীরা অবশ্যই একজোট হয়ে দাঁড়াবে।”#

 পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/৩০

ট্যাগ