এপ্রিল ০২, ২০২০ ১৮:০৯ Asia/Dhaka

সুপ্রিয় পাঠক/শ্রোতা! আজ ২এপ্রিল বৃহস্পতিবারের কথাবার্তার আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি বাবুল আখতার। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতে ঢাকা ও কোলকাতার গুরুত্বপূর্ণ বাংলা দৈনিকগুলোর বিশেষ বিশেষ খবরের শিরোনাম তুলে ধরছি।

প্রথমে বাংলাদেশে:                              

  • শনাক্ত নতুন আরও ২, মৃত্যু নেই: আইইডিসিআর-দৈনিক প্রথম আলো
  • ডাক্তাররা রোগী দেখবেন না, এই ধরণের অমানবিক বিষয় মেনে নেয়া যাবে না-বাংলাদেশ প্রতিদিন
  • সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মুখে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক কালেরকণ্ঠ
  • নিউইয়র্কে হাসপাতালগুলোতে যুদ্ধ ময়দানের অবস্থা- স্রোতের মতো আসছে রোগী * বারান্দায় দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা * ভেন্টিলেটরের জন্য কাকুকি-মিনতি চিকিৎসকদেরদৈনিক যুগান্তর
  • ত্রাণের জন্য অপেক্ষা-দৈনিক মানবজমিন-দৈনিক মানবজমিন

ভারতের খবর:

  • পুলিশ খুঁজছে হন্যে হয়ে, গোপন ডেরা থেকে অডিয়ো বার্তা নিজামউদ্দিনের মওলানার-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা
  • দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার আরেকটি খবর- এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বেগে হু-
  • লকডাউনের পর জনগণের ঘোরাফেরা ও সংক্রমণ রুখতে পরিকল্পনা নিন, মুখ্যমন্ত্রীদের পরামর্শ মোদির-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

শ্রোতাবন্ধুরা এবার বাছাইকৃত কিছু খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। আজও করোনা কেন্দ্রিক খবরগুলোই ভারত ও বাংলাদেশের পত্র পত্রিকায় প্রধান প্রধান শিরোনাম হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। দৈনিক প্রথম আলোর শিরোনাম- শনাক্ত নতুন আরও ২, মৃত্যু নেই: আইইডিসিআর বিস্তারিত খবরে বলা হয়েছে দেশে নতুন করে দুজনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ৫৬। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে কারও মৃত্যু হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) হাবিবুর রহমান আজ ব্রিফ করেন।

হাবিবুর রহমান

হাবিবুর রহমান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে নতুন যে দুই ব্যক্তির দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে, তাঁরা দুজনই পুরুষ। এঁদের একজনের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। আরেকজনের বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে। পত্রিকাটি অন্য একটি খবরে লিখেছে, এশিয়া মহাদেশ থেকে শুরু হলেও এখন ইউরোপের ওপর চেপে বসেছে নতুন করোনাভাইরাস। বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারির শিকার ৮১ শতাংশ রোগীই মাত্র ১০টি দেশের। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া মহাদেশে করোনার প্রকোপ চলছে কয়েকটি দেশে, যদিও তা এখনো উদ্বেগজনক নয়। আর আফ্রিকায় ভাইরাসটি তেমন সুবিধা করতে পারছে না। দক্ষিণ এশিয়াতেও এর অবস্থান বেশ দুর্বল।

ডাক্তাররা রোগী দেখবেন না, এই ধরণের অমানবিক বিষয় মেনে নেয়া যাবে না-বাংলাদেশ প্রতিদিন

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়েছি- অনেক হাসপাতালে রোগী চিকিৎসা নিতে গিয়ে ভর্তি হতে পারছে না, ডাক্তররা তাদের ঠিকমত দেখছে না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি চিকিৎকদের উদ্দেশ্যে বলেন, চিকিৎসা মহান পেশা এটা সেবামূলক পেশা। অপনাদের মানবতা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ

পাশাপাশি কে করোনা রোগে আক্রান্ত আর আক্রান্ত নয় সেটাও শনাক্ত করার দায়িত্ব আপনাদের। রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করবেন না, রোগী দেখবেন না এই ধরণের অমানবিক বিষয় মেনে নেয়া যায়না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া প্রশাসকের সভাকক্ষে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক জরুরি সভায় যোগ দেওয়া আগে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব উল আলম হানিফ ডাক্তারদের উদ্দ্যেশে এসব কথা বলেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মুখে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর-দৈনিক কালেরকণ্ঠ

দায়িত্ব পালনকালে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। এর আগে গত মঙ্গলবার সর্বশেষ ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ব্যক্তিগত সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছিলেন। 

ওই দিন দেশের ৬৪ জেলার জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, নিজের সুরক্ষা নিজেকেই নিতে হবে। কেউ এটা দিয়ে যাবে না। নিজের ভালোটা নিজেকেই বুঝতে হবে। তিনি বলেন, এটা কেউ না বুঝলে তাঁর নিজেরই ক্ষতি হবে। পরিবারের ক্ষতি হবে, প্রতিবেশির ক্ষতি হবে

নিউইয়র্কে হাসপাতালগুলোতে যুদ্ধ ময়দানের অবস্থা- স্রোতের মতো আসছে রোগী * বারান্দায় দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা * ভেন্টিলেটরের জন্য কাকুকি-মিনতি চিকিৎসকদের দৈনিক যুগান্তর

করোনা মহামারীতে নিউইয়র্ক হাসপাতালগুলোতে যুদ্ধ ময়দানের অবস্থা বিরাজ করছে। স্রোতের মতো আসছে কোভিড-১৯ রোগী। কোথাও তিলধারণের ঠাঁই নেই। ফ্লোরে বা মেঝেতেও আর জায়গা হচ্ছে না। বারান্দাতেও উপচেপড়া ভিড়।সেখানেই দেয়া হচ্ছে চিকিৎসা। একসঙ্গে এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডাক্তার-চিকিৎসক-নার্সরা। আইসিইউ-ভেন্টিলেটরের তীব্র সংকট।

Image Caption

ভেন্টিলেটর ও অন্যান্য মেডিকেল সরঞ্জাম সরবরাহের জন্য সরকার-প্রশাসনের কাছে কাকুকি-মিনতি করছেন চিকিৎসকরা।প্রতি মিনিটে মিনিটে মরছে মানুষ। আক্রান্ত হয়ে আসছে আর লাশ হয়ে যাচ্ছে কেউ কেউ। চোখের সামনে বিনা চিকিৎসায় মরতে দেখে কাঁদছে ডাক্তার-নার্স। নিউইয়র্ক এখন এক মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। হার মানাচ্ছে হরর সিনেমাকেও। বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্কের করোনা পরিস্থিতিকে যুদ্ধাবস্থা বলে বর্ণনা করছেন মার্কিন চিকিৎসক-নার্সরা। রয়টার্স।

ত্রাণের জন্য অপেক্ষা-দৈনিক মানবজমিন

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা। রাজধানীর ধানমন্ডি ২ নম্বরে হাজারো অসহায় মানুষের ভিড় জমেছে। পপুলার হাসপাতালের পক্ষ থেকে ত্রাণসামগ্রী দেওয়ার কথা। বিপুল সংখ্যক মানুষ জড়ো হওয়ায় শেষ পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ হয়নি। ত্রাণ নিতে আসা মানুষদের সরিয়ে দেয়াহয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যত লকডাউনে ঢাকায় দিনমজুর মানুষ হয়েছেন কর্মহীন। দৈনন্দিন রোজগার করতে না পেরে থমকে গেছে তাদের জীবনযাপন। কর্মহীন এই মানুষগুলো পেটের টানে সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও ত্রাণের খোঁজে ছুটছেন পথে পথে। ত্রাণের চেয়ে মানুষের সংখ্যা বেশি। দিন যত গড়াচ্ছে, দুর্ভোগ আরও বেশি হচ্ছে অসহায় মানুষদের। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফুটপাতে এখন সাহায্যপ্রার্থীর সংখ্যা আগের তুলনায় বেড়ে গেছে অনেকগুণ। প্রায় প্রতিটি সড়কেই একটু সাহায্যের আশায় বসে বসে ক্ষণ গুনছে অসহায় এই মানুষগুলো।

এবার ভারতের বিস্তারিত খবর তুলে ধরছি

পুলিশ খুঁজছে হন্যে হয়ে, গোপন ডেরা থেকে অডিয়ো বার্তা নিজামউদ্দিনের মওলানার-দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা

দেশে যত বেশি করোনা আক্রান্ত ধরা পড়ছে, ততই সন্দেহের তির ঘুরে ফিরে দিল্লির নিজামউদ্দিন মারকাজের তাবলিঘি জামাতের দিকেই যাচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত ওই কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত, মারকাজ নিজামউদ্দিনের মওলানা সাদ কান্ধালভির কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে। এর মধ্যেই অন্তরালে থেকে অডিয়ো বার্তায় মওলানা জানিয়েছেন, তিনি কোয়রান্টিনে রয়েছেন। সাদ কান্ধালভিও করোনায় আক্রান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।গত ২৮ মার্চ শেষবারের মতো দেখা গিয়েছিল কান্ধালভিকে। তার পর থেকে তিনি বেপাত্তা। মারকাজ নিজামউদ্দিনে জমায়েত করা ও থাকার জন্য তিনিই উৎসাহ দিয়েছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ। একশো বছরের বেশি বয়স নিজামউদ্দিনের ওই বাড়িটির। পুলিশ সূত্রে খবর, বাড়ি খালি করার জন্য নোটিসও দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ মওলানা সাদ তা অগ্রাহ্য করে গিয়েছিলেন। নিজামউদ্দিন কাণ্ডে মওলানা ছাড়াও, মারকাজের আরও ছয় কর্তাকেও খুঁজছে পুলিশ।

দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার আরেকটি খবর- এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে, কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্বেগে হু-

যে দ্রুত গতিতে কোভিড-১৯ এগিয়ে চলেছে, তা দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার। বুধবার তা নিয়ে বিশ্বকে ফের একবার সচেতন করলেন হু-র ডিরেক্টর জেনারেল। পাশাপাশি এই যুদ্ধে লড়ার জন্য এবং প্রতিটি মানুষের যাতে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত হয়, সে ব্যাপারে সমস্ত দেশকে সামাজিক কল্যাণমূলক কাজ করার অনুরোধ জানিয়েছেন। এবং এই সময়ে যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলি আর্থিক সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে পারে, তার জন্য ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটিগুলির কাছে তাদের ঋণ মকুবের আহ্বান জানিয়েছেন।কেন এতটা চিন্তিত হু-র ডিরেক্টর জেনারেল টেড্রোস আডহ্যানম গেব্রিয়েসাস? সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “কোভিড ১৯-কে অতিমারি ঘোষণার পর চার মাস হয়ে গেল। বিশ্বব্যাপী এই রোগ নিয়ন্ত্রণে আসার কোনও নাম নিচ্ছে না, উল্টে হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা। গত এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আর কিছু দিনের মধ্যেই ১০ লক্ষ ছুঁয়ে ফেলবে সংক্রমণের সংখ্যা, মৃতের সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলবে ৫০ হাজার।”

লকডাউনের পর জনগণের ঘোরাফেরা ও সংক্রমণ রুখতে পরিকল্পনা নিন, মুখ্যমন্ত্রীদের পরামর্শ মোদির-দৈনিক সংবাদ প্রতিদিন

আগামী ১৫ এপ্রিল লকডাউন উঠে যাওয়ার পর সাধারণ মানুষদের ঘোরাফেরা ও করোনার সংক্রমণ রুখতে পরিকল্পনা গ্রহণ করুন। বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে এই পরামর্শই দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জানালেন, লকডাউন উঠে গেল রাতারাতি আগের মতো সব চলতে আরম্ভ করে দিল। তা হবে না। কিছু প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই সঙ্গে শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে করোনা আক্রান্তদের খুঁজে বের করে সবার থেকে আলাদা করতে হবে। তারপর তাঁদের চিকিৎসা করে সুস্থ করতে হবে। তবেই করোনামুক্ত হবে ভারত।

পার্সটুডে/এমবিএ/২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

 

 

ট্যাগ