কথাবার্তা: ফিলিস্তিনে ঈদকালীন গণহত্যা ও জায়নবাদ, বাংলাদেশে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ
প্রিয় পাঠক/শ্রোতা! ১৩ মে বৃহষ্পতিবারের কথাবার্তার আসরে আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা প্রত্যেকে ভালো আছেন। আসরের শুরুতেই ঢাকা ও কোলকাতা থেকে প্রকাশিত প্রধান প্রধান বাংলা দৈনিকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু শিরোনাম তুলে ধরছি।
বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ খবরের শিরোনাম:
- ফিলিস্তিনে হামলা, কেন একশন নিচ্ছে না তুরস্ক?–যুগান্তর
- কোয়াড নিয়ে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিলেন চীনা রাষ্ট্রদূত-ইত্তেফাক
- মতামত-ফিলিস্তিন, ও ফিলিস্তিন: ঈদকালীন হত্যা ও জায়নবাদ- প্রথম আলো
- অবিলম্বে ফিলিস্তিনি গণহত্যা বন্ধের আহ্বান বাম গণতান্ত্রিক জোটের-সমকাল
- মিতু হত্যাকাণ্ড-রিমান্ডে বাবুল-মানবজমিন
- এদেশে কেউ নিরাপদ নয় : মির্জা ফখরুল-কালের কণ্ঠ
- ১৬ মে'র পর ফের কঠোর লকডাউন, বিচারিক ক্ষমতা পাচ্ছে পুলিশ-বাংলাদেশ প্রতিদিন
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের শিরোনাম:
- কাজ নেই, হাতে টাকা নেই, পরিযায়ী শ্রমিকরা বাঁচবেন কী ভাবে? কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের-আনন্দবাজার পত্রিকা-আনন্দবাজার পত্রিকা
- ‘ভারতে করোনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী বড় বড় ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সমাবেশ’, এবার সরব WHO-সংবাদ প্রতিদিন
- ভিনরাজ্যে ভেসে উঠছে দেহ, মালদহে ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় নজরদারি শুরু নবান্নের–আজকাল
- কোথাও মিলছে না ভ্যাকসিন,দিশেহারা রাজ্যবাসী-গণশক্তি
শ্রোতাবন্ধুরা! এবারে চলুন বাছাইকৃত কয়েকটি খবরের বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক।
মিতু হত্যাকাণ্ড-রিমান্ডে বাবুল-মানবজমিন

মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।বাবুলের আইনজীবী আরিফুর রহমান বলেন, পুলিশ যথাযথ তদন্ত না করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এখন উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আমরা উচ্চ আদালতে যাব। আশা করি সেখানে ন্যায়বিচার পাব।
সোর্স মুছায় আটকে গেলেন বাবুল আক্তার
বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে হত্যাকারীদের একজন ছিলো কামরুল ইসলাম সিকদার মুছা। ঘটনাস্থলের পাওয়া ফুটেজে তার ছবি স্পষ্টভাবে বুঝা যাচ্ছিল। এই যুবক ছিলো এই প্রাক্তন পুলিশ কর্মকর্তার সোর্স। ঘটনার সময়কার এই দৃশ্যটি তদন্ত কর্মকর্তারা বাবুল আক্তারকে দেখানোর পরও তিনি তাকে না চেনার ভান করেন।মূলত সেখান থেকে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সন্দেহ হয়।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতেই অনেক স্পর্শকাতর বিষয় উঠে আসে।এরমধ্যে মুসার সাথে একটি অপরিচিত নাম্বার থেকে বাবুল আক্তারের ৩০ সেকেন্ডের একটি কথোপকথন ফাঁস হয়। সব মিলিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা যে স্ত্রীকে হত্যার নির্দেশদাতা সেটি তদন্তকারী দলের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠে।
জানা যায়,ঘটনার দিন সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে সোর্স মুছাকে ফোন করেন বাবুল আক্তার।সালাম দিয়ে মুছা ফোনটি রিসিভ করতেই ওপার থেকে বাবুল আক্তার বলেন, ‘তুই কোপালি ক্যান?’ ৩ থেকে ৪ সেকেন্ড থেমে আবার বলেন, ‘বল তুই কোপালি ক্যান? তোরে কোপাতে কইছি?’ এর পর ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বাবুল আক্তার।
এদিকে চট্টগ্রাম পিবিআই সূত্রে জানা যায়, মূলত এক এনজিও কর্মীর সাথে পরকীয়ার এই খুনের সিদ্ধান্ত নেন বাবুল আক্তার। মূলত স্ত্রীকে হত্যা করে নিজেদের পথ পরিষ্কার করতে চেয়েছিলেন এক সময়ের এই চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা।
তবে এই এনজিও কর্মীর বিস্তারিত পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
জানা যায়,মিতুকে খুন করতে মুছাকে দিয়ে খুনিদের সাথে তিন লাখ টাকায় চুক্তি করেন বাবুল আক্তার। হত্যাকাণ্ডের পরের দিন চুক্তির এই টাকা বাবুলের নিকটাত্মীয় সাইফুলের মাধ্যমে মুছার এক আত্মীয়ের কাছে পৌঁছে দেন বাবুল।
সম্প্রতি পুলিশের কাছে আটক সাইফুল মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যগুলো জানিয়েছিলেন । তিনি শুধু পিবিআইয়ের কাছেই এসব তথ্য স্বীকার করেন নি। আদালতেও কিলিং মিশনের বিস্তারিত তুলে ধরেছেন।এই ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক আনোয়ার ও ওয়াসিমও জবানবন্দিতে মুছার নির্দেশে এই হত্যাকান্ড হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
এদিকে আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তের কাজে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠা সোর্স মুছাকে এখনো আটক করা যায়নি। তবে তার পরিবারের দাবি, হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিনের মাথায় মুছাকে বন্দর থানা এলাকায় এক আত্মীয়র বাসা থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোন সন্ধান পাচ্ছেন না তারা। এনিয়ে মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার স্বামীর সন্ধান চেয়ে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন।তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ দাবি নাকচ করে তিন মাস পর ২০১৬ সালের ৬ অক্টোবর সিএমপি তৎকালীন কমিশনার ইকবাল বাহার সোর্চ মুছার সন্ধান দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।যদিও এখনো তার কোন হদিস মেলেনি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ই জুন ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গিয়ে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের কাছে ওআর নিজাম রোডে নির্মমভাবে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার অজ্ঞাতপরিচয় তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
পরে এই ঘটনায় স্বয়ং বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততার বিষয়টি উঠে আসে গণমাধ্যমে। যার জের ধরে এসময় তাকে চাকরিও হারাতে হয়।সর্বশেষ আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানায় বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামী করে তার শ্বশুর একটি মামলা দায়ের করেন।
এদেশে কেউ নিরাপদ নয় : মির্জা ফখরুল-কালের কণ্ঠ
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে কেউ নিরাপদ নয়।

আজ বুধবার দুপুরে নিঁখোজ এম ইলিয়াস আলীর পরিবারের সাথে কথা বলার পরে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। ঈদ উপলক্ষে ইলিয়াস আলীর পরিবারের খোঁজ-খবর নিতে দুপুরে বনানীর বাসায় যান বিএনপি মহাসচিব।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘নো বড়ি সেভ ইন দিস কান্ট্রি। এদেশে কেউ নিরাপদ নয়। এখানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এমন পর্যায় চলে গেছে যে সেখানে সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকা এটা একেবারে…, রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের তো বটেই সাধারণ মানুষ কিন্তু আপনার জীবন বিপর্য্স্ত হয়ে পড়েছে।”
তিনি বলেন, ‘‘আমরা বার বার বলেছি, আবারো বলছি- সরকার এগুলো বন্ধ করুক। আমার তো মাঝে মাঝে মনে হয়, আসলে কী আওয়ামী লীগ দেশ চালায়? এটা আমার কাছে একটা বড় প্রশ্ন। আমি খুব সিনসিয়ারলি এই কথাটা বলছি- কে দেশ চালায়? এটাও বুঝতে পারে না আমরা সাধারণ মানুষ যারা আছি অথবা রাজনীতি যারা করি তারা বুঝতে পারি না। কার ইঙ্গিতে এসমস্ত ঘটনাগুলো ঘটছে?”বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ইলিয়াস আলীর গুমের ৯ বছর পার হয়ে গেছে। আমরা কিছুদিন আগে তার গুম দিবসও পালন করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে অত্যাচার-নির্যাতন-ত্রাস সৃষ্টি করবার যে একটা আতিয়ার সৃষ্টি করবার এই্ যে নতুন একটি ফেনোমেনা চৌধুরী আলম ও ইলিয়াস আলীর ঘটনা দিয়ে শুরু হলো। তারও আগে ১৯৭৫ সালে সেই সময়ে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় তারা কিন্তু এই ঘটনা ঘটিয়েছে, আগে অনেক রাজনৈতিক কর্মী ও সমাজ কর্মী গুম হয়ে গেছে।”
‘সরকার নয় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করছে বিএনপি’-ওবায়দুল কাদের-মানবজমিন
ঈদকে সামনে রেখে করোনাকালীন এই সংকটে রাজনৈতিক ব্লেম গেইম থেকে বিরত থাকা সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আজ সকালে তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এ মন্তব্য করেন।
বিএনপি মহাসচিব সরকারের সমালোচনার নামে এমন সব বিষয়ে অবতারণা করেন, যার জবাব আওয়ামী লীগকে দিতে হয় উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন যদিও যা জানতে চাই, তার জবাব তাদের কাছে পাইনা।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার ভূয়া জন্মদিবস নিয়ে জাতির কাছে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে, তার সঠিক জবাব বিএনপির পক্ষ থেকে আজও পাওয়া যায়নি।
বেগম জিয়া এখন অসুস্থ তাই ১৫ই আগস্টের মত নৃশংস হত্যা দিবসে তার ভূয়া জন্মদিন পালনের জন্য মির্জা ফখরুল ইসলাম জাতির কাছে ক্ষমা চাইবেন, এটাই মানুষ আশা করেছিলো বলেও মনে করেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি মহাসচিব তা না করে প্রতিদিনই এক একটা বিষয় নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে যাচ্ছেন।
সরকার নাকি বাংলাদেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করছে, বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার নয়, ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করছে বিএনপি। যেমনটি তারা ২০০১ সালে করেছিলো। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পর দেশের মানুষের উপর নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়েছিল বিএনপি সরকার। ২১ হাজার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে।
বিএনপির জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে আওয়ামী লীগের হাজারো নেতাকর্মীর রক্তে দেশকে মৃত্যু উপত্যকায় বানিয়েছিলো উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, গুম, হত্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের রূপান্তর করেছিলো তারা।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি বাবুনগরীর আহ্বান-যুগান্তরের খবর।
অবিলম্বে ফিলিস্তিনি গণহত্যা বন্ধের আহ্বান বাম গণতান্ত্রিক জোটের-সমকালের খবর। অবিলম্বে ফিলিস্তিনি গণহত্যা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি জনগণের আবাসভূমি তাদের ফিরিয়ে দেওয়ার এবং মার্কিন-ইসরায়েল সাম্রাজ্যবাদী জায়নবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিবেককে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এই জোট।
ফিলিস্তিনে হামলা, কেন একশন নিচ্ছে না তুরস্ক?-যুগান্তর
রমজান আসলেই ইসরাইল নামক ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রটি’ মুসলমানদের ওপর তার বর্বরোচিত হামলার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। আর মুসলিম বিশ্ব নীরব হয়ে দেখতে থাকে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া ফিলস্তিনি, নারী, পুরুষ, শিশু, যুবক বৃদ্ধসহ বহু মানুষ। আবারও রমজান। আবারও মসজিদে আকসা। আবারও সেই হৃদয়বিদারক দৃশ্য। ফিলিস্তিনিদের ওপর চলছে ইসরাইলের বর্বর হামলা।
ইসরাইল সেই ১৯৪৮ সাল থেকেই ফিলিস্তিনিদের ওপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালাচ্ছে। বিরামহীনভাবে চলছে সেই হামলা নির্যাতন।

প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফিলিস্তিনিকে ঘর থেকে বের করে তার ঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারো ভিটে মাটি কারো বা ফসলের জমি কেড়ে নিচ্ছে ইসরাইল।
আর যে কজনও নিজেদের ভিটে-মাটিতে বাস করছেন তাদের বসতবাড়ির চারিদিকে বিশাল উঁচু দেয়াল তৈরি করে সেগুলোকে এক রকম বন্দিশালায় পরিণত করে রেখেছে।
এ নিয়ে মালায়শিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মাদ খুব চমৎকার একটা কথা বলেছিলেন। আঙ্কারায় আমি তার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম।
মাহাথির মোহাম্মাদ বলেন, “পৃথিবীর সকল সন্ত্রাসের মূলেই হচ্ছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করে, সেখানের ৯০ ভাগ আরব জনগণকে উৎখাত করে ইসরাইলের নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টিই হচ্ছে আধুনিক সন্ত্রাসবাদের শুরু। ইসরাইলকে থামাতে না পারলে সারা দুনিয়াকে সন্ত্রাস মুক্ত করা যাবে না। কারণ ইসরাইল হচ্ছে সারা দুনিয়ার সন্ত্রাসের মূল উৎস।”
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্য যে এই বাস্তবতাটা আরব বিশ্বের নেতারা এখনও বুঝলেন না, বা বুঝতে চাইলেন না। অথবা বুঝেও না বোঝার ভান করে রইলেন। তা না হলে সৌদি আরব, আরব আমিরাত, মিশর, কুয়েত, জর্ডানসহ আরও যেসব আরব দেশ আছে। তারা কেন নিষ্ক্রিয়?
এ নিয়ে ফিলিস্তিনিদেরও অভিযোগের শেষ নেই। যে আরব বিশ্বের প্রতি তাকিয়ে আছে ফিলিস্তিনি মাজলুম জনতা সেই আরবরাই ফিলিস্তিনিদের দিকে মুখ তুলে তাকায় না।
এ নিয়ে ফিলিস্তিনি একাডেমিশিয়ান ড. আলী রেজেগ তার হতাশা এবং ক্ষোভের কথা আমার কাছে এভাবে ব্যাক্ত করেন, "দুর্ভাগ্যজনক হলো, আমরা আরব দেশগুলো থেকে যা প্রত্যাশা করেছিলাম সেভাবে কোনো পদক্ষেপেই নেয়নি তারা। ফিলিস্তিনিদের ওপর এবং আল আকসা মসজিদে হামলার বিরুদ্ধে শুধুমাত্র দু-তিনটি দেশে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
আমরা ফিলিস্তিনিরা আরব দেশগুলো থেকে আরো বেশি সহযোগিতা আরো বেশি একশন প্রত্যাশা করছি। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র জর্দান, সিরিয়া, লেবানন, মিশর এবং আলজেরিয়া থেকে । আমরা মনে করি সব আরব দেশ এবং মুসলিম দেশের ঐক্যবদ্ধ হওয়া দরকার। ফিলিস্তিনিদের এবং আল আকসা মসজিদ রক্ষায় তাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা দরকার।”
কিন্তু কী করছে এই আরব বিশ্ব? ইসরাইলের সাথে রঙ্গলীলায় ব্যাস্ত। অথচ প্রতিদিন জুলুম নির্যাতন হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের ওপর। হত্যা, হামলা, মামলা, উচ্ছেদ, ধরপাকড় সব কিছুই চলে সেখানে। অথচ এই বর্বরোচিত আক্রমণের বিরুদ্ধে কেউ কিছু করেছেন না, কেউ কিছু বলেছেন না?
শুধু আরব নেতারা না, প্রায় সব মুসলিম দেশের নেতারা তাদের গদি রক্ষায় ব্যাস্ত। ইসরাইলের বিপক্ষে সত্যিকার অর্থেই কোন পদক্ষেপ নিলে তাদের গদি হারানোর ভয় আছে যে? আর মুসলিম বিশ্বের সর্ব বৃহৎ সংস্থা ওআইসি। এটি তো একটি নাম সর্বস্ব সংগঠন। যে ওআইসির জন্মই হয়েছিল মসজিদে আকসা এবং ফিলিস্তিনের জন্য সেই প্রতিষ্ঠানটি গত ৫২ বছরে ফিলিস্তিনের জন্য কিছুই করলো না!
লোক দেখানো কিছু মিটিং ফিটিং আর দায়সারা গোছের বিবৃতি দিয়েই নিজের কর্তব্য পালন করলো। আর গত এক দশকে তো নেতৃত্বের লড়াইয়ে আরও অকেজো হয় পড়েছে এই সংগঠনটি।ওআইসিতে তুরস্কের নেতৃত্ব মেনে নিতে পারেনি সৌদি আরব। তাই ইচ্ছা করেই, তুরস্কের নেতৃত্বে থাকাকালীন ওআইসিকে মূলত নিষ্ক্রিয় করে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে।
এখন তুরস্ক নতুন করে এটিকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছে কিন্তু আসলে লোক দেখানো কিছু মিটিং ছাড়া কার্যকরী কোন ফল আসবে না ওআইসির সম্মেলন থেকে।
আর মুসলিম বিশ্বের আটটি দেশ নিয়ে ডি-এইট নামক যে সংগঠনটি তৈরি করেন তুরস্কের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিমুদ্দিন এরবাকান। সেটিকেও সুকৌশলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে আরব লিগ তো আরেক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে পশ্চিমা বিশ্বের ডাবল স্ট্যান্ডার্ড, দ্বিমুখীনীতি, মুসলিম বিদ্বেষিতা, ইসলামোফবিয়া এগুলো তো নতুন কিছু না। যেমন হামলা হলো ফিলিস্তিনিদের ওপর, তাদেরকে নির্বিচারে হত্যা করা হলো। অথচ পশ্চিমা সেই তথাকথিত মানবাধিকারের ফেরিওয়ালারা সুন্দর করে দোষ চাপিয়ে দিলেন ওই নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ওপর। ইউরোপ এবং আমেরিকার রাজনৈতিক নেতারা কি নির্লজ্জভাবে ফিলিস্তিনি সাধারণ জনগণকে দোষারোপ করলেন।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইদেন কয়েকদিন আগে তথাকথিত সেই আর্মেনীয় গণহত্যার স্বীকৃতিদানকালে কী বলেছিলেন। “আমি মানবতার এবং মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছি।সুতরাং সারা বিশ্বে মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নিতেই এই পদক্ষেপ।”
এখন ফিলিস্তিনে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে, কোথায় তার সেই মানবাধিকার?

তবুও তারা মানবতার ফেরিওয়ালা। আমাদের কাছে মানবতা আর মানবাধিকার ফেরি করে বেড়াবে আর আমরা আমাদের স্বকীয়তা,আমাদের ভ্রাতৃত্ব, নিজেদের সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য সব বিলিয়ে দিয়ে তাদের এই তথাকথিত মানবাধিকারকে লুফে নিতে ঝাঁপিয়ে পরব বার বার।
এবার আসি তুরস্কের বিষয়ে। যে তুরস্ক এতো হাঁকডাক, মজলুমের পাশে দাঁড়ানোর এতো নীতিকথা শোনালো সারা বিশ্বকে এতদিন সেই তুরস্ক কী করছে? যার ড্রোনের দাপটে কাঁপে সারা বিশ্ব।
যার সামরিক বাহিনী ন্যাটোর দ্বিতীয় বৃহত্তর শক্তি। যার নেতাকে দেখা হয় মুসলিম বিশ্বের নেতা হিসেবে, মুসলিম বিশ্বের কর্ণধার হিসেবে, মুসলিম বিশ্বের নতুন সালাহউদ্দিন আইয়ুবী হিসেবে। সেই তুরস্ক কী করছে এই ফিলিস্তিনিদের জন্য? এক কথায় যদি বলি তাহলে বলতে হবে কিছুই না।
নেতারা বিবৃতি বক্তৃতা দিচ্ছে, জনগণ মিছিল মিটিং করছে ঠিকই কিন্তু আসলে কার্যকর কোন পদক্ষেপই নেই তুরস্কের পক্ষ থেকে। তাহলে কোথায় সেই নতুন করে খেলাফত ফিরে আসার আষাঢ়ে গল্প আর নতুন আরেক সালাহউদ্দিন আইয়ুবির ফিরে আসার স্বপ্ন?
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন তুরস্ক কেন অ্যাকশনে যায় না? যে তুরস্ক, লিবিয়ায়, সিরিয়ায়, ইরাকে, আজারবাইজানে, সোমালিয়াতে এমনকি ইউক্রেনেও লড়াই করছে বিশ্বের অনেক পরাশক্তির বিরুদ্ধে সেই তুরস্ক, সেই এরদোগান কেন ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোন একশনে যাচ্ছে না? আর কতদিন অপেক্ষা করবে। আর কত রক্ত ঝরাতে হবে ফিলিস্তিনিদের?
আমি যতটুকু জানি তা হল, তুরস্ক তার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কিছু করার। তুরস্কের সরকার, জনগণ, বিরোধীদল, সেনাবাহিনী, সবাই এক কাতেরে। শুধুমাত্র এই ফিলিস্তিন ইস্যুতেই দেখলাম সব রাজনৈতিক দল তাদের কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিয়ে পার্লামেন্টে যৌথ বিবৃতি দিয়েছে। দ্ব্যর্থ কণ্ঠে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। সারা তুরস্কে মানুষ করোনার লকডাউনকে উপেক্ষা করে রাস্তায় নেমেছে,মিছিল করছে। সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। সরকার যেন আরও স্পষ্ট এবং সরাসরি একশনে যায়। কিন্তু সরকার সরাসরি একশনে যাচ্ছে না, যেতে পারছে না।
কারণ, ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুধু মাত্র ছোট্ট একটি দেশ বা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ না। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানে পুরো এক পশ্চিমা বিশ্বের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
অনেক সময় বলা হয়, আরবরা যদি খালি থুতু ফেলে তাতেই ইসরাইল তলিয়ে যাবে। কথাটিতে যুক্তি আছে। খুবই ছোট একটি দেশ ইসরাইল। কিন্তু এখানে ইসরাইল মানে আমেরিকা, ইসরাইল মানে ব্রিটেন, ইসরাইল মানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন,এমনকি ইসরাইল মানে ভারত। ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ মানে বিশ্বের সব বড় বড় পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ।
ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্যে এমন গলার কাঁটা করে রাখা হয়েছে যাকে না পারছেন তুলতে না পারছেন গিলতে। তাই এই ইসরাইল সমস্যার একমাত্র সমাধান মুসলিম বিশ্বের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। তুরস্ক কয়েকবার এ বিষয়ে পদক্ষেপও নিয়েছিল। কিন্তু সফল হয়নি। এখনও আবার নতুন করে সব মুসলিম বিশ্বের নেতার সাথে পরামর্শ করছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান। কিন্তু খুব একটা ফল আসবে বলে মনে হয় না।
আমার মতে, এই অঞ্চলে বা মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক দিক থেকে ইসরাইলের ওপরে আক্রমণ করতে পারবে,অর্থাৎ যুদ্ধ করতে পারবে এরকম একটি মাত্রই দেশ আছে, সেটা হচ্ছে ইরান।
মতামত-ফিলিস্তিন, ও ফিলিস্তিন: ঈদকালীন হত্যা ও জায়নবাদ-প্রথম আলো

ইসরায়েল মাত্র দুই সময় হত্যা চালায়—যুদ্ধে ও শান্তিতে। গাধা যখন বোঝা বয় তখনো সে গাধা, যখন বয় না, তখনো সে গাধাই থাকে। স্বাভাবিক কিংবা অস্বাভাবিক সব পরিস্থিতিতেই ইসরায়েল আগ্রাসী। ইসরায়েল এক দখলদার সামরিক যন্ত্র, যার কাছে মানবিকতা আশা করা ভুল। গত শতকের এক ইউরোপীয় কৌতুকের মধ্যে জায়নবাদীদের মানসিকতাটা ধরা পড়ে। এক ইহুদি যুবক প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তুরস্কের বিরুদ্ধে লড়তে যাচ্ছে। তো তার মা তার ব্যাগে খাবার-দাবার গুছিয়ে দিয়ে বলছে, ‘শোন বাবা, বেশি পরিশ্রম করবি না। একটা করে তুর্কি মারবি আর জিরিয়ে নিবি।’ তখন ছেলে বলছে, ‘মা, কিন্তু ওরা যদি আমাকে মারে?’ মায়ের উত্তর, ‘তোকে মারবে কেন, তুই ওদের কী ক্ষতি করেছিস?’ ইসরায়েল পবিত্র রমজান মাসে আল-আকসা মসজিদে মুসলমানদের যেতে দেবে না, জায়নবাদী ফ্যাসিস্টরা সেখানে আগুন দেবে। কিন্তু প্রতিবাদের নাম দেবে ‘সন্ত্রাস’। নারী-শিশুসহ নিরীহ মানুষ হত্যার জবাবে গাজা থেকে রকেট ছোড়া হলে শহরটার ওপর লাগাতার বোমাবর্ষণ করে বলবে, ‘এই হলো আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার।’ প্রেসিডেন্ট বদলায়, কিন্তু মার্কিন প্রশাসন তোতাপাখির মতো আওড়ে যায় ইসরায়েলের আত্মরক্ষার কথা।
ফিলিস্তিনিদের জমি দখল করে অবৈধ বসতি স্থাপন চলতে থাকবে, জেরুজালেম থেকে সব ফিলিস্তিনিকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে, ফিলিস্তিনের বৈধ রাজধানীকে নিজেদের রাজধানী বলে ঘোষণা করবে; তবুও আত্মরক্ষার অধিকার থাকতে পারবে না ফিলিস্তিনিদের! তারা কি মানুষ না?
আরব ও মুসলমানরা বেশির ভাগ সময় ইহুদিদের বন্ধু থেকেছে। কয়েকটি ঘটনা বাদ দিয়ে আরব কিংবা আন্দালুসিয়ার মুসলিম শাসনে ইহুদিরা সম্মানিত থেকেছে। ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগের ইতিহাসে ইহুদি ও মুসলমানদের হানাহানির ঘটনা বিরল।
মদিনায় আক্রমণকারী কুরাইশদের পক্ষ নেওয়ার জন্য ইহুদিদের শাস্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইহুদি নেতারাই ইহুদি আইন মেনে সেটা করেছিলেন। আরব ও মুসলিম অঞ্চলই ছিল ইউরোপ থেকে পালানো ইহুদিদের আশ্রয়। দ্বিতীয় উমাইয়া রাজত্বের গ্রানাডায় ইহুদিরা কেবল সম্মানিতই হতো না, মন্ত্রী, ব্যবসায়ী ও প্রশাসনিক কর্তাও ছিল। সে কারণেই গ্রানাডা পতনের পর বিজয়ীরা ইহুদিদের আদেশ দেয়, হয় খ্রিষ্টান হও নয়তো দেশ ছাড়ো। প্রায় ৭০ হাজার ইহুদি খ্রিষ্টান হয়ে থেকে যায় কিছুদিনের মধ্যেই আবারও বিচারের তোপে পড়ার জন্য, যাকে বলে ইনকুইজিশন। বাকিরা পর্তুগালে ও উসমানিয়া সাম্রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এর সাত বছর পর স্পেনের মুসলিমদেরও বলা হয়, হয় খ্রিষ্টান হও নয়তো দেশ ছাড়ো।
বরং ইউরোপ, খ্রিষ্টীয় চার্চ লাগাতারভাবে ইহুদিদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে, গণহত্যা করেছে। হিটলারের ইহুদি গণহত্যায় পরোক্ষে মদদ ছিল তখনকার রোমান ক্যাথলিক পোপের। ‘আমেন’ নামে তথ্যচিত্রে তার প্রমাণ রেখেছেন গ্রিক–ফরাসি চলচ্চিত্র পরিচালক কস্তা গাভরাস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক ইহুদি আশ্রয় নিয়েছিল সিরিয়ায়। তেমনি মধ্যযুগে ইউরোপের নির্যাতিত ইহুদিরা আশ্রয় পেয়েছিল মুসলিম স্পেনে। মুসলিম শাসন অবসানের পর অনেক ইহুদি আরবদের সঙ্গে দক্ষিণ আমেরিকায় চলে গিয়ে প্রাণ বাঁচায়।
হিটলার করেছিল গণহত্যা আর মিত্রশক্তি ইহুদিদের চালান করে দিয়েছিল মধ্যপ্রাচ্যের বুকের ওপর। পশ্চিমা প্রভুদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থে আরবের বুকে ইসরায়েলকে সাম্রাজ্যবাদী পাহারাদার হিসেবে বসানো এবং নিরন্তর শক্তিশালী করে যাওয়া হয়েছে। এখনো বিপুল মার্কিন তহবিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী পায়।
প্রশ্ন হলো, ঠিক এই সময়ে ইসরায়েল কেন ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হলো? চলমান ঘটনার শুরু পূর্ব জেরুজালেমে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে উচ্ছেদ দিয়ে হলেও, কারণটা রাজনৈতিক। ইসরায়েলের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা চলছে। ঘুষ নেওয়ার অপরাধে তাঁর জেলে যাওয়ার কথা। সাম্প্রতিক নির্বাচনেও তাঁর দল ভালো ফল করেনি। কোনো ইসরায়েলি নেতা রাজনৈতিকভাবে বেকায়দায় পড়লেই ফিলিস্তিনিদের নিশানা করে। এটাই তাদের রাজনৈতিকভাবে প্রাসঙ্গিক থাকার উপায়। পাশাপাশি ইসরায়েলের নাগরিকদের মধ্যে তীব্র ধর্মীয় মৌলবাদের বিস্তার ঘটেছে। তাদের চাপেও ইহুদিবাদী নেতাদের আগ্রাসী আচরণ দেখাতে হয়। নেতানিয়াহুও জনপ্রিয়তার ঘাটতি মেটানো এবং নিজেকে ইহুদিদের ত্রাতা হিসেবে দেখাতে ফিলিস্তিনি হত্যার পুরোনো কৌশল নিয়েছেন।
এবার ভারতের কয়েকটি খবরের বিস্তারিত:
‘ভারতে করোনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী বড় বড় ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক সমাবেশ’, এবার সরব WHO-সংবাদ প্রতিদিন
ল্যানসেট এবং নেচার পত্রিকার পর এবার ভারতে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য সরাসরি রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় সমাবেশকে দায়ী করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। WHO বলছে, ভারতের বর্তমান পরিস্থিতির কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে তাঁরা জানতে পেরেছেন, ভারতে সংক্রমণ বৃদ্ধির অনেকগুলি কারণের মধ্যে অন্যতম হল বড় বড় রাজনৈতিক জনসভা এবং ধর্মীয় জমায়েত।
ভিনরাজ্যে ভেসে উঠছে দেহ, মালদহে ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় নজরদারি শুরু নবান্নের-আজকাল
বিহারের বক্সা, উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরের বয়ে চলা গঙ্গা, যমুনার জলে ভাসতে দেখা গিয়েছে করোনা আক্রান্তের পচা-গলা দেহ। এই নিয়ে আতঙ্কও ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়। এবার সেই দেহ বাংলায়ও ঢুকে পড়ার আশঙ্কায় তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
বিহার থেকে যে মৃতদেহগুলি ভেসে আসছে সে করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ গঙ্গা দিয়ে ভেসে এসে মালদহতে ঢুকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেজন্য মৃতদেহগুলি মালদহে ঢোকার আগেই ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মালদহের জেলাশাসককে। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহের জেলাশাসককে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। আগামিকাল থেকে মালদহের মানিকচক ঘাটে ১০-১২ টি নৌকা নিয়ে তাদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
মালদহ প্রশাসন সূত্রে খবর, ঝাড়খণ্ডের গা লাগোয়া মালদহের মানিকচক। তারপর একটি দিকে বাংলাদেশ, আর একটি দিক কলকাতার দিকে আসে গঙ্গা হয়ে। তাই কোনওরকমভাবেই পরিস্থিতি যাতে আয়ত্তের বাইরে না যায়, তাই মালদহের জেলাশাসককে যত দ্রুত সম্ভব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তবে দেহগুলি করোনা আক্রান্ত কিনা নিশ্চিত নয়। তবে এর আগে এত দেহ একসঙ্গে কোথাও দেখা যায়নি। যার ফলে এই দেহগুলি করোনার বলেই ধরে নেওয়া হচ্ছে।
কাজ নেই, হাতে টাকা নেই, পরিযায়ী শ্রমিকরা বাঁচবেন কী ভাবে? কেন্দ্রকে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের-আনন্দবাজার পত্রিকা
কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। বেশ কয়েকটি রাজ্যে লকডাউন চলছে। সেই কারণেই উদ্বেগ শীর্ষ আদালতের। পরিযায়ী শ্রমিকরা যে কঠোর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে তা বিবেচনা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করেছে বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এমআর শাহের বেঞ্চ। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য নেওয়া কর্মসূচির বিষয়েও জানতে চেয়েছে আদালত। বেঞ্চের প্রশ্ন, ‘‘পরিযায়ী শ্রমিকদের হাতে কাজ নেই, টাকা নেই। কী ভাবে তাঁরা বেঁচে থাকবেন?’’
মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপালের পত্রযুদ্ধ: কী বলে প্রথা ও আইন? সংবিধানেই কি সীমার অস্পষ্টতা?-আনন্দবাজার পত্রিকা

ভোট-পরবর্তী ‘হিংসা পরিস্থিতি’ দেখতে বৃহস্পতিবার শীচলখুচি গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে। কিন্তু তার আগে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের সঙ্গে গণতান্ত্রিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রীর এক দফা পত্রযুদ্ধ হয়েছে। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, সরকারি ‘বিধি এবং রীতি’ ভেঙে একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে শীতলখুচি-সহ কোচবিহারের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের ১৯৯০ সালের ‘ম্যানুয়্যাল অব প্রোটোকল অ্যান্ড সেরিমনিয়ালস’-এর পরিপন্থী।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৩
- বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।