বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i102102-বাংলাদেশে_করোনার_সংক্রমণ_বাড়ছে_স্বাস্থ্যবিধি_না_মানলে_ভয়াবহ_পরিস্থিতির_আশঙ্কা
বাংলাদেশে করোনা সংক্রমনের দু’বছরের মাথায় এসে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা সাড়ে ছয়শ' ছাড়িয়ে গেছে। তিন মাস পর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হার আবার ৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
(last modified 2025-10-27T13:35:51+00:00 )
জানুয়ারি ০৪, ২০২২ ১৮:৩৪ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে করোনা সংক্রমনের দু’বছরের মাথায় এসে ফের সংক্রমণ বৃদ্ধির ধারা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। দেশে দৈনিক শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা সাড়ে ছয়শ' ছাড়িয়ে গেছে। তিন মাস পর নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হার আবার ৩ শতাংশ ছাড়িয়েছে।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে করোনার ডেলটা ভ্যারিয়্যান্টে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়লেও আগস্ট থেকে গণটিকা কার্যক্রমের পর তা কমতে শুরু করে। ধীরে ধীরে কমে এই সংক্রমণের হাড় সর্বশেষ গত ডিসেম্বরে এক শতাংশের ঘরে ছিল। গত দু’ সপ্তাহ ধরে সেই সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বগতি নিয়েছে।

এদিকে, গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত হওয়ার পর থেকে পুরো বিশ্বেই সংক্রমণ আবার বাড়ছে। ইতোমধ্যে আমেরিকা, ইউরোপ ও ভারতসহ বিশ্বের অন্তত ১০৬টি দেশে পৌঁছে গেছে ওমিক্রন। রোববার পর্যন্ত বাংলাদেশে ১০ জনের শরীরে ওমিক্রন শনাক্তের তথ্য জানা  গেছে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেন, যেহেতু পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে ওমিক্রন ব্যাপক হারে হানা দিয়েছে, তাই বাংলাদেশ অনেক ঝুঁকিতে আছে।

কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি কমিটির সভাপতি ডাক্তার মোহাম্মদ শাহিদুল্লাহ বলেছেন, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করা হলে ভয়াবহ পরিণতি সামনে অপেক্ষা করছে। তবে এখুনি লকডাউন দেবার পরামর্শ দিচ্ছে না কারিগরি কমিটি।

করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এবং দেশে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হবার প্রেক্ষাপটে গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘লকডাউনের বিষয়ে আমরা সুপারিশ করিনি। লকডাউনের পরিস্থিতি এখনো হয়নি। ফের লকডাউনের পর্যায়ে যাতে যেতে না হয়, সে জন্যই গতকালের এ প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এখন আমরা জোর দেব প্রতিরোধের বিষয়ে।’

কোন কোন ক্ষেত্রে কেমন ধরনের কড়াকড়ি আসছে, তা ১৫ দিনের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ থেকে প্রজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মাস্ক না পরলে জরিমানা করা হবে। টিকা না নিয়ে থাকলে রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না। সেখানে খেতে হলে টিকা সনদ দেখাতে হবে। টিকা সনদ ছাড়া কাউকে খাবার পরিবেশন করলে সেই রেস্তোরাঁকে জরিমানা করা হবে’।

গত সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আরো যেসব আলোচনা হয়েছে সেগুলো হলো, স্থল, সমুদ্র ও বিমানবন্দরে স্ক্রিনিংয়ের সংখ্যা বাড়ানো, বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের পুলিশ পাহারায় কোয়ারেন্টাইনে রাখা, সামাজিক, রাজনৈতিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জনসমাগম সীমিত করা, গণপরিবহনে যাত্রী সংখ্যা কমিয়ে আনা এবং মসজিদসহ সব স্থানেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা।

এদিকে, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন জানিয়েছেন, আগের মতো এখনও ডেলটা ধরনেই নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলার ফল এই সংক্রমণ বৃদ্ধি ঘটছে বলে জানান এ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। 

ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বাড়ছে কি না, এমন এক প্রশ্নে তাহমিনা শিরিন বলেন, ‘ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণ বৃদ্ধি শুরু হয়েছে, তা এখনই বলা মুশকিল। চলমান সংক্রমণবৃদ্ধির প্রবণতা ডেলটার কারণে হচ্ছে। গত বছরের নভেম্বর মাসে একশ ভাগ রোগী ডেলটা ধরনে আক্রান্ত ছিলেন। এক মাসে তো তা উবে যাবে না। তাই আমরা বলতে পারি না যে, ওমিক্রনের জন্যই সংক্রমণ একটু একটু করে বাড়ছে। তবে, পরবর্তীকালে ওমিক্রমনে সংক্রমণ বাড়বে না সেটাও বলা যাবে না।’

আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, ওমিক্রন নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তবে সতর্ক থাকতে হবে। সারা বিশ্বে যেভাবে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে বাংলাদেশও ঝুঁকিতে আছে। এখন জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। সবাইকে টিকা দিতে হবে। মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।