বাংলাদেশে ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রধানমন্ত্রীসহ ৪ মন্ত্রীর পরামর্শ
(last modified Sun, 09 Jan 2022 12:40:12 GMT )
জানুয়ারি ০৯, ২০২২ ১৮:৪০ Asia/Dhaka

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি বড় জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। 

রোববার দেশের আট বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এ বিষয়ে কথা বলেন।

লকডাউনের পরিকল্পনা এখনও নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

এদিকে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ জানিয়েছেন, ওমিক্রনের সংক্রমণ বাড়তে থাকলেও ফের লকডাউন দেয়ার কোনো পরিকল্পনা এখনও নেই।  তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আজ (রোববার) রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের টিকার বুস্টার ডোজ প্রদান কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি ওমিক্রনে আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে টিকা গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশের নাগরিকদের ক্রস বর্ডার চলাচলে নিরুৎসাহিত করছি। বিশেষ করে ভারতে। কারণ সেখানে করোনা সংক্রমণের হার খুবই বেশি। আর আমরা সব সময়ই আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মতো ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে গুজবে কান দেবেন না: শিক্ষামন্ত্রী

ওদিকে, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। 

আজ (রবিবার) সাভারের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, 'আমরা চেষ্টা করছি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুরক্ষিত রেখে সংক্রমণ কীভাবে এড়াতে পারি। যারা বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে বা হয়ে যাচ্ছে, তারা গুজব ছড়াচ্ছেন। সব সময়ই এমন গুজব ছড়ানো হয়। আপনারা গুজবে কান দেবেন না। তবে, এটাও ঠিক, যদি মনে হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে সংক্রমণ বাড়বে, তখন আমরা বন্ধ করে দেবো হয়তো।'

শিক্ষামন্ত্রী জানান, 'আজ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আমাদের মিটিং রয়েছে। শিক্ষার্থীদের করোনার টিকাদান কার্যক্রম জোরেশোরে চলছে। সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে এসে কিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যায়, সে চেষ্টাই করছি আমরা।'

এর আগে গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জনিয়েছেন, এক ডোজ টিকা ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসা যাবে না। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠক শেষে এ কথা জানান তিনি।

স্বাস্থ্যবিধি মানার আহ্বান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর

তবে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন, স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আজ (রোববার) দুপুরে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, টিকা সংক্রমণ কমায় না, মৃত্যুর হার কমায়। মাস্ক পরা ছাড়া, স্বাস্থ্যবিধি মানা ছাড়া সংক্রমণ কমানো যাবে না। এটা আমাদের সবাইকে মানতে হবে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘টিকার অভাব হবে না কিন্তু মানুষের টিকা নেওয়ার আগ্রহ কমে গেছে। সে কারণে বিভিন্নভাবে প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। টিকা দেওয়ার জন্য কমিউনিটি ক্লিনিক পর্যন্ত গিয়েছিলাম। ইউনিয়নে তিনটি ওয়ার্ডে টিকা দেওয়া হতো এখন সেখানে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে করা হচ্ছে। যাতে বেশি মানুষ টিকার আওতায় আসে।’

এছাড়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আশ্বস্ত করে বলা হয়েছে, ওমিক্রন নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনে আক্রান্তরা সবাই সুস্থ আছে। অনেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে। এখন যারা চিকিৎসাধীন তাদের মধ্যে কারো কোনো জটিলতা নেই।

রোববার দুপুরে দেশের করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ আশ্বসের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, দেশে বর্তমানে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২১ জন।

ওমিক্রনের ফলে দেশে করোনা রোগী বাড়ছে। এ কারণে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন। 

ট্যাগ