বিডিআর বিদ্রোহের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভাঙা: ফখরুল
বিডিআর বিদ্রোহের বিচার হয়েছে, রায়ও কার্যকর হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
২০০৯ সালে বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দফতরে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে এবং এখন রায়ও কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
পিলখানা ট্রাজেডির ১৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ (শুক্রবার) সকালে রাজধানীর বনানীতে সামরিক কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে তাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মন্ত্রী এ কথা জানান।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আপনারা বিচারের জন্য যেভাবে ধৈর্য ধারণ করে আসছেন, এভাবে ধৈর্য ধারণ করবেন, আপনারা এ ঘটনার বিচার দেখতে পারবেন।
তিনি বলেন, আপনারা এটাও দেখেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার বিচার করতে অনেক সময় লেগেছে। তারপরও আজ আমরা স্বস্তিতে নিঃশ্বাস নিতে পারছি। আমাদের থেকে কালো দাগ মুছে গেছে। আমরা অবশেষে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করতে পেরেছি। এভাবে নৃশংস ও হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটবে আমরা কল্পনাও করিনি। কতিপয় বিপথগামী বিডিআর সদস্যরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
বিচারকার্যের দীর্ঘসূত্রতার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচারকার্য দীর্ঘসূত্রতার কারণ হচ্ছে, আমাদের সব উপাদান সংগ্রহ করতে একটু সময় লেগেছে। এছাড়া সাক্ষী জোগাড় করতেও বেশ সময় লেগেছে। চাচ্ছিলাম এই ঘটনার সুন্দর, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার যেন হয়। বিচারকরা তাই করেছেন। আর যেই মামলার বিষয়টি চলমান রয়েছে, সেটা খুব শিগগিরই শেষ হবে। বিচার শেষ হওয়ার পরে আপিল করার একটি সুযোগ থাকে, সেটাও তারা করছেন। আমরা মনে করি, এই প্রক্রিয়া শেষ হলে তারা ন্যায়বিচার পাবেন।
'বিডিআর বিদ্রোহের উদ্দেশ্য ছিল সেনাবাহিনীর মনোবল ভাঙা'
এদিকে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, পিলখানা হত্যাখাণ্ডের পেছনে ষড়যন্ত্র ছিল সেজন্য তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হচ্ছে না।
আজ সকালে বনানী সামরিক কবরস্থানে পিলখানা ট্রাজেডিতে শহীদ সেনাকর্ম কর্তাদের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি গোটা জাতির জন্যে একটা অত্যন্ত শোকাবহ দিন। একই সঙ্গে একটা আতঙ্কেরও দিন এজন্য যে এই দিনে এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের সেনাবাহিনীর ৫৬ জন কর্মকর্তাকে হত্যা করা হয়েছিল। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এটা শুধুমাত্র একটা বিদ্রোহ ছিল না, এর পেছনে সুদূরপ্রসারী একটা ষড়যন্ত্র ছিল। তার মূল কারণটা ছিল সেনাবাহিনীর মনোবলটা ভেঙে দেওয়া।
তিনি বলেন, আমাদের দুর্ভাগ্য আজকে এত বছর পরেও তদন্ত করে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়নি। এর পেছনে কারা ছিল, কেন এই ঘটনা ঘটিয়েছিল তার বের হয়নি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধেও আমাদের এত কর্মকর্তা চলে যাননি। এ ঘটনায় ৫৬ জন কর্মকর্তা চলে যান। পরবর্তীকালে বিডিআর যে একটা ঐতিহ্যবাহী সীমান্ত রক্ষা বাহিনী ছিল সেটা ভেঙে নতুনভাবে তৈরি করা হয়েছে। বিডিআরের হাজার হাজার সৈনিকের বিচার করা হয়েছে। কিন্তু এর পেছনে কারা সত্যিকার অর্থে সেটা এখনও আমরা পাইনি। সেনাবাহিনী যে তদন্ত করেছিল তারও রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি।
২০০৯ সালের এই দিনটিতে নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল কিছু বিপথগামী সৈনিক। তৎকালীন বিডিআর সদর দফতরে তারা এক ধ্বংসলীলা চালান। তাদের সেই উন্মত্ততার শিকার হয়ে প্রাণ হারান ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা এবং নারী ও শিশুসহ আরও ১৭ জন। ২৫ ফেব্রুয়ারি পরিণত হয় ‘পিলখানা হত্যা দিবসে’। #
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৫