সাবেক এসপি বাবুল আক্তার অত্যন্ত চতুর মানুষ: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
চট্টগ্রামে স্ত্রী হত্যা মামলায় বরখাস্ত পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তার 'অত্যন্ত চতুর মানুষ' বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধানসহ ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের অভিযোগ তদন্ত করা হবে।
আজ (শনিবার) রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের আয়োজনে "বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় ধর্মীয় সংখ্যালঘু নারীদের আর্থ-সামাজিক অবস্থান ও নিরাপত্তা: ভিশন ২০৪১ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নেওয়ার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ার আবেদন করেছেন বাবুল আক্তার। চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ জেবুন্নেছার আদালতে বাবুলের পক্ষে তাঁর আইনজীবী কামরুল ইসলাম চৌধুরী সাজ্জাদ আবেদনটি করেন।
আবেদনে বলা হয়, বাবুলকে পিবিআই চট্টগ্রাম কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে চোখ বেঁধে নির্যাতন করা হয়। স্ত্রী মাহমুদা খানমকে হত্যার করার কথা স্বীকার করতে তাঁকে পিবিআইয়ের প্রধান বনজ কুমারের নির্দেশে নির্যাতন করা হয়।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘বাবুল আক্তার যেসব কথা বলেছেন, তা বাস্তবসম্মত কি না, তা তদন্ত করেই বের করা হবে। পিবিআইয়ের ওপর ভরসা রয়েছে। তারা এখন পর্যন্ত সবকিছুই সূক্ষ্মভাবে তদন্ত করেছে। ৩০ বছর আগের মামলাও পিবিআই তদন্ত করে অপরাধী বের করেছে। আমি মনে করি, পিবিআই ভুল করবে না। বাবুল আক্তার যেসব প্রশ্ন তুলেছেন, তা তদন্তের পরই বের হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাবুল আক্তার অত্যন্ত চতুর মানুষ। তিনি কখন কী বলেন, সেটা উনার ব্যাপার। সে ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’
উল্লেখ, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম (মিতু)। এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। এক পর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে বাবুল আক্তারের নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধেই হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে হেফাজতে নেয় পিবিআই।
পরে গত বছরের ১২ মে বাবুল আক্তারসহ আটজনকে আসামি করে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। পরে তাকে চট্টগ্রাম কারাগারে পাঠানো হয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।