বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে যা হচ্ছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক: চীনা রাষ্ট্রদূত
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে শান্তি বজায় রাখতে এবং সীমানা লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে বেইজিং নেপিদোর সঙ্গে যোগাযোগ করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সীমান্তে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি চলছে, তা ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গতকাল (সোমবার) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন বলেন চীনা রাষ্ট্রদূত। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের মধ্যে যে রকম কথা হয়, আমাদের মধ্যে সে রকম কথা হয়েছে। দ্রুত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনসহ একাধিক আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘পররাষ্ট্রসচিব আমাকে এ নিয়ে বলেছেন। সীমান্তে যা হচ্ছে তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমি মনে করি এটি একটি আলোচনার বিষয়।’
রাষ্ট্রদূতের পর গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব খুরশেদ আলম। রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বেইজিং নেপিদোর সঙ্গে আলোচনা করবে বলে রাষ্ট্রদূত আশ্বস্ত করেছেন।
খুরশেদ আলম বলেন, আমাদের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে চীন আগে থেকে ত্রিপক্ষীয় ব্যবস্থায় ছিল। এটা যেন ত্বরান্বিত হয়, সে বিষয়ে বলেছি। প্রত্যাবাসন নিয়ে তারা যেহেতু আগে একটি ইনিশিয়েটিভ নিয়েছিল, সেটির বিষয়ে আমরা অনুরোধ করেছি। তাদের বলেছি, আপনারা ইনিশিয়েটিভ নিন।
সীমান্তে চলমান পরিস্থিতির মধ্যে প্রত্যাবাসন সম্ভব কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রসবিচ বলেন, তারা যে জায়গায় নিয়ে যাবে, সেখানে কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না।
সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে চীনের আশ্বাসে ঢাকা আশ্বস্ত হতে পারছে কি না-এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা চীনের আশ্বাসে বিশ্বাস করি কি না করি, এতে কিছু আসে যায় না। কিন্তু চীন যেহেতু আমাদের বন্ধুপ্রতীম দেশ। আমরা মনে করি তাদের এটি বললে যথাস্থানে পৌঁছে দেবে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘাতের জেরে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নিক্ষিপ্ত মর্টার শেলের আঘাতে এক রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত এবং অপর পাঁচজন আহত হয়। এর আগেও কয়েক দফায় মর্টারশেল ও গোলা এসে পড়ে বাংলাদেশের ভেতরে। প্রতিবারই মিয়ানমার রাষ্ট্রদূতকে ডেকে প্রতিবাদ জানানো হয়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।