বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি:
সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলন: রূপরেখা নিয়ে আলোচনা অব্যাহত
বাংলাদেশে সরকার বিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে ২০ দলীয় জোটের শরীক বাংলাদেশ লেবার পার্টি ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেছে বিএনপি ।
দু'দলের সাথে সংলাপে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি আদায়ে আন্দোলনের ধরণ, নির্বাচন পরবর্তী জাতীয় সরকার, দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট সংসদসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।
বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, আমাদের আলোচনার প্রধান বিষয় ছিল জাতীয় ঐক্যের জন্য আমরা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সেই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের দাবিনামা চূড়ান্ত করা। আমরা যে খসড়া প্রস্তাবগুলো নিয়ে আলোচনা করেছি সেগুলোর বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি।
সংলাপে অংশ নিয়ে এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন: ‘যুগপৎ আন্দোলনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে বিশদভাবে আলোচনা হয়েছে। আমরা অবিলম্বে সংসদ বিলুপ্ত ও সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি।’
এ সময় লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, বাংলাদেশ লেবার পার্টি বিএনপির নেতৃত্বে ২০০৬ সাল থেকে আন্দোলন সংগ্রামে আছে। আজ জাতির এই দুঃসময়ে আমরা বেশ কয়েকটি পয়েন্টে একমত হয়েছি। আমরা সবার আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। খালেদা জিয়ার মুক্তি মানেই জনগণের মুক্তি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে পারলে সবকিছু সম্ভব হবে।
ইরান আরো বলেন, আর একটা বিষয়ে একমত হয়েছি। আমরা দেখেছি এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নি। আমরা ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচন দেখেছি। এই সরকার ২০২৩ সালের শেষের দিকে যে নির্বাচন সেটাও আবার নিজেদের করে নেয়ার চেষ্টা করছে। সেজন্য দেশে যে নির্বাচন হবে সেটা অবশ্যই একটি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে হতে হবে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ (বৃহস্পতিবার) সচিবালয়ে এক ব্রিফিংকালে বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি বিদ্যুৎবিহীন খাম্বার মতো আশাহীন ও অন্তঃসারশূন্য। বিএনপির মুখে সব সময় অনিয়ম-দুর্নীতির কথা শোনা যায়। বিএনপির কাজ হলো বাঁকা পথে চলা; অসত্য তথ্য ও বিভ্রান্তি ছড়ানো।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, প্রকৃতপক্ষে বিএনপির হাতে দেশ নিরাপদ নয়। তারাই দেশকে এবং দেশের সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।অপরদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা ও হয়রানির প্রতিবাদে আজ রংপুরে শোক র্যালি নিয়ে সড়কে নামতে পারেন নি দলটির নেতা-কর্মীরা। পুলিশি বাধায় র্যালি না করতে পেরে নগরের গ্র্যান্ড হোটেল মোড়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনে কালো পতাকা হাতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বিএনপি।
দলীয় কার্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্যসচিব মাহফুজ উন নবী।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সারা দেশে বিএনপিকে বিক্ষোভ মিছিল করতে দেওয়া হচ্ছে না। নেতা-কর্মীদের পুলিশ লাঠিপেটা করছে। বিএনপিকে শান্তিপূর্ণ মিছিলও করতে দেওয়া হচ্ছে না। আওয়ামী লীগের লেলিয়ে দেওয়া সন্ত্রাসী বাহিনী লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালাচ্ছে। এভাবে দমন–পীড়ন করে বেশিদিন টিকতে পারবে না এ সরকার। রাজপথের আন্দোলনেই এ সরকারের পতন হবে।
কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান গনমাধ্যমকে বলেন, রাজপথে বিক্ষোভ সমাবেশের অনুমতি নেই বলে বাধা দেওয়া হয়েছে।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/এনএম/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।