সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ
আয়কর রিটার্ন দাখিলের কড়াকড়িতে ভোগান্তিতে কম আয়ের বিনিয়োগকারীরা; সংস্কার দাবি
সুদের হার হ্রাস ও নানা কড়াকড়ি আরোপের পরও বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ ছিল সঞ্চয়পত্র। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বাজারে সব নিত্যপণ্যের দাম চড়াসহ পরিবহন, শিক্ষা, চিকিৎসার খরচ বেড়েছে। এতে মানুষের সঞ্চয় করার ক্ষমতা কমে গেছে। এর প্রভাবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে নেমে এসেছে।
এর মধ্যে আবার সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এসেছে নতুন নিয়ম। ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে গেলে সেখানে আয়কর রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে হবে। সর্বশেষ পরিপত্রে বলা হয়েছে, ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে শুধু টিআইএন সার্টিফিকেট দাখিল করলেই হবে না। বরং বিনিয়োগকারীকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের প্রমাণ দিতে হবে। সরকার মনে করছে, যারা সঞ্চয়পত্র ক্রয় করেন তাদের অনেকেই আয়কর রিটার্ন জমা দেন না। আয়কর রিটার্নে ব্যক্তির আয়, ব্যয় এবং সম্পদের বিবরণ থাকে। আয়কর রিটার্ন জমা দেবার কাগজ বাধ্যতামূলক করার ফলে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বুঝতে পারবে যারা পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনছেন তাদের আয়-ব্যয়-সম্পদ কেমন।
এমন পরিস্থিতিতে আবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল আইএমএফ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর পরামর্শ দিয়ে গেছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন কম আয়ের সাধারণ মানুষ।
এই সামান্য সঞ্চয়ের টাকায় হয়ত অনেকের সংসার খরচ চলে, কারো বা ওষুধের খরচ যোগান আসে এই সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশের আয় থেকে, তারা আজ বড় সংকটে। সঞ্চয়পত্র বিভাগের ব্যাংক কর্মকর্তারাও স্বীকার করলেন কর্পোরেট গ্রাহকদের কারণে আজ ভোগান্তিতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
এমন পরিস্থিতিতে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পদ্ধতিতে সাধারণ মানুষের বিশেষ করে যারা কম আয়ের তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা চালুর দাবি করেছেন আয়কর কনসালটেন্ট মোঃ রাকিবুল হাসান। রেডিও তেহরানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সঞ্চয়পত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল নিশ্চিত করতে পারলে দেশে অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগ কমে আসবে। শৃঙ্খলায় ফিরবে দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে সরকারের নীতি নির্ধারকদের বিশেষ কোন ব্যবস্থা চালু করতে প্রয়োজনে পদ্ধতি সংস্কারের পরামর্শ এই ট্যাক্স কনসালটেন্টের।#
পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/১৯