বাংলাদেশের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ
ঢাকায় নিষিদ্ধ হচ্ছে হাউড্রোলিক হর্ণের ব্যবহার: শুধু ঘোষণা নয় বাস্তবায়ন চায় পবা
জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচির (ইউএনইপি) ২০২২ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে শব্দ দূষণের শহর বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা। আর চতুর্থ অবস্থানে বাংলাদেশেরই বিভাগীয় শহর রাজশাহী। দুইটি শহরেই শব্দের তীব্রতা ১শ ডেসিবেলের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ঢাকায় শব্দের সর্বোচ্চ তীব্রতা ১১৯ ডেসিবল এবং রাজশাহীতে এর মাত্রা ১০৩ ডেসিবল পাওয়া গেছে। বিপরীতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ১৯৯৯ সালের গাইডলাইন বলছে, আবাসিক এলাকার জন্য শব্দের গ্রহণযোগ্য সর্বোচ্চ মাত্রা ৫৫ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকার জন্য ৭০ ডেসিবল। ২০১৮ সালের সবশেষ হালনাগাদ গাইডলাইনে আবাসিক এলাকায় এই মাত্রা সর্বোচ্চ ৫৩ ডেসিবলের মধ্যে সীমিত রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তীব্র মাত্রার শব্দদূষণ মানুষের শারীরিক ও মানসিক উভয় স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর। এর ফলে দুশ্চিন্তা, উদ্বিগ্নতা, উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাতসহ নানা ধরনের ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটতে পারে। অর্থাৎ শব্দ দূষণের ফলে বধিরতাসহ প্রায় ৩০ ধরনের শারীরিক সমস্যা হয় বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় হাইড্রোলিক হর্ণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন জানিয়েছেন, শব্দদূষণ বন্ধে আগামী জানুয়ারির মধ্যে ঢাকায় যানবাহনের হাইড্রোলিক হর্ন বন্ধ করা হবে। আর এ কাজে সবার সহযোগিতা কামনা করেন পরিবেশমন্ত্রী।

এ বিষয়ে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান রেডিও তেহরানকে বলেন, নিঃসন্দেহে এটা সরকারের ভাল উদ্যোগ। কিন্তু এ উদ্যোগ, শুধু ঘোষণা পর্যায়ে না থেকে মাঠ পর্যায়ে এর বাস্তবায়ন জরুরি। তবেই সুফল পাবে দেশের মানুষ। শুধু পরিবহনের উচ্চমাত্রার হর্ণ নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ ও বিআরটিএকে যানবাহনে নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। নইলে আবারো ক’দিন বাদেই মুখ থুবড়ে পড়বে সরকারের এ উদ্যোগ। ক্ষতিগ্রস্থ হবে সাধারণ মানুষের শ্রবণইন্দ্রিয়সহ, মানসিক স্বাস্থ্য।#
পার্সটুডে/নিলয় রহমান/গাজী আবদুর রশীদ/৩০