ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ; বিশ্লেষক মহলের প্রতিক্রিয়া
(last modified Tue, 20 Dec 2022 10:43:25 GMT )
ডিসেম্বর ২০, ২০২২ ১৬:৪৩ Asia/Dhaka

সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস কে ঘিরে যে অপ্রীতিকর অবস্থার উদ্ভব হয়েছে, তা গড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন অবধি। ফলে এ বিষয়কে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ সামান্যই। রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা নিয়ে যে উদ্বেগ তৈরি হওয়া, তা সাধারণ কোনো ঘটনা নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হিসেবে তো বটেই, এমনিতেও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী যেকোনো দেশের কূটনীতিকের নিরাপত্তা দেওয়া স্বাগতিক দেশের কর্তব্য। ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী, কূটনীতিকদের যেমন স্বাগতিক দেশ নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেবে, তেমনি তাঁদের পরিবারও এর সুরক্ষার আওতার মধ্যে পড়ে।

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনাটি ঘটেছিল ১৪ ডিসেম্বর। সেদিন তিনি 'মায়ের ডাক' সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির নিখোঁজ নেতার রাজধানীর বাসায় যান। তবে সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন 'মায়ের কান্না' নামে আরেকটি সংগঠনের সদস্যরা। তাঁরা সামরিক শাসনামলে মানবাধিকার লঙ্ঘন বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কিছুটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিরাপত্তাজনিত কারণে স্বল্প সময়ের মধ্যে মায়ের ডাকের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে বেরিয়ে যান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। এর পর তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জরুরি ভিত্তিতে দেখা করে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়ে উদ্বেগের কথা জানান।

এ বিষয়ে কূটনৈতিক মহলে তো বটেই বিশ্লেষক মহলেও দেখা দিয়েছে নানা প্রতিক্রিয়া। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির রেডিও তেহরানকে বলেছেন, এ ঘটনায় বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ উভয় দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বেশ ঘনিষ্ঠ। বলার অপেক্ষা রাখে না, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্র। অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্ক এখন বিস্তৃত ও গভীর বলে মনে করেন সাবেক এ রাষ্ট্রদূত।

অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ রেডিও তেহরানকে বলেন, কোন দেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতির বিষয়ে কোন দেশের কূটনীতিকের সংশ্লিষ্ট হওয়াটা যৌক্তিক বিষয় না। কারণ এতে করে দেশটির রাজনৈতিক মেরুকরণে বিভাজনের রেখা সৃষ্টি হয়। তাই কূটনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে থেকে কাজ করাকে বেশি গ্রহণযোগ্য বলেই মনে করেন এ বিশ্লেষক।

আর যুক্তরাষ্ট্রের আরেক সাবেক রাষ্ট্রদূত নাসিম ফেরদৌস রেডিও তেহরানকে বলেছেন, কূটনৈতিক বিধি মেনে চলা প্রত্যেক রাষ্ট্রদূতের মৌলিক শিষ্টাচার।

কূটনীতি উচ্চমাত্রার একটি সৃজনশীল কাজ। এখানে উচ্ছৃঙ্খল হওয়া এবং এ ক্ষেত্রে উচ্ছৃঙ্খলতার প্রশ্রয় উভয়ই পরিত্যাজ্য বলেই মনে করেন বিশ্লেষকরা। #

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/২০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ