রোহিঙ্গা শরণার্থী:
বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া ১৮০ রোহিঙ্গার সাগরে মৃত্যুর আশঙ্কা ইউএনএইচসিআরের
বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়া রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে অন্তত ১৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর)। নভেম্বরে ওই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশ ছাড়ার পর কয়েক সপ্তাহ সাগরে আটকে ছিলেন।
অসমর্থিত সূত্রের বরাত দিয়ে সংস্থাটি শনিবার টুইটারে ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, নিখোঁজ ওই ‘সমুদ্রযাত্রায় অনুপযোগী’ নৌকাটি সম্ভবত ডুবেই গেছে। ইউএনএইচসিআর-এর বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, “নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর রোহিঙ্গাদের দুর্বল ওই নৌকাটি টানা কয়েক সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে আটকা পড়ে ছিল। কমপক্ষে ১৮০ জন রোহিঙ্গাকে বহনকারী নৌকাটি এই মাসেই ডুবে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
রয়টার্স বলেছে, তৃষ্ণা, ক্ষুধা ও রোগের ভয় নিয়ে উদ্বেগ এবং খাদ্য, চাকরি ও আশ্রয়ের আশায় রোহিঙ্গা শরণার্থীরা প্রায়ই এশিয়ার অন্য কোনও দেশে পৌঁছাতে বাংলাদেশ ছেড়ে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রা করে।
গত সপ্তাহে, মিয়ানমারের দু’টি রোহিঙ্গা অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ভারতের উপকূলে দুই সপ্তাহ ধরে সমুদ্রে আটকে থাকা একটি নৌকায় ক্ষুধা বা তৃষ্ণায় ২০ জন মানুষ মারা গেছে। কমপক্ষে ১০০ জন লোক নিয়ে নৌকাটি মালয়েশিয়ার জলসীমায় ছিল বলে জানা গেছে। এছাড়া এই মাসের শুরুর দিকে, শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী ভারত মহাসাগরের এই দ্বীপটির উত্তর উপকূলে ১০৪ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে।
ইউএনএইচসিআর এই অঞ্চলের দেশগুলোকে মানবিক সংকট প্রশমনে সাহায্য করার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। অন্যদিকে নিজেদের দুর্দশার কথা ভুলে না যাওয়ার জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন করেছে শরণার্থীরা।
২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্মম নিপীড়নের মুখে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আসা কয়েক লাখসহ ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে অবস্থান করছে।
বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের নাগরিকত্ব তো দেওয়াই হয় না, উল্টো তাদেরকে অনুপ্রবেশকারী, দক্ষিণ এশিয়া থেকে যাওয়া অবৈধ শরণার্থী হিসেবে দেখা হয়। বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে থাকাদের কাজ পেতেও হয় ব্যাপক কষ্ট।
এই সুযোগে মানবপাচারকারীরা তাদেরকে মালয়েশিয়ার মতো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কাজ জুটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাগরে ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রায় প্রলুব্ধ করে।
এশিয়ার অন্যত্র খাবার, কাজ ও চাকরি পাওয়ার আশায় বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল ছাড়া ওই শরণার্থীদের বেশিরভাগ যাত্রারই ইতি ঘটে আন্তর্জাতিক জলসীমায়, তীব্র ক্ষুধা-তৃষ্ণা ও রোগ নিয়ে তারা অনেকদিন ধরে সমুদ্রে ভাসতে থাকে।#
পার্সটুডে/এমএআর/এনএম/২৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।