২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২৯ শতাংশ: জাতীয় দুর্যোগ বললেন বিশেষজ্ঞরা
(last modified Thu, 05 Jan 2023 13:06:16 GMT )
জানুয়ারি ০৫, ২০২৩ ১৯:০৬ Asia/Dhaka

২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে সারা দেশে দুর্ঘটনার হার ২৯ শতাংশ বেড়েছে বলে জানিয়েছে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)। সংগঠনটি তাদের এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে মোট ৭০২৪টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এর আগের বছর ২০২১ সালে ঘটেছে ৪৯৮৩টি। অর্থাৎ, ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে দুর্ঘটনা বেড়েছে ২০৪১টি। শতাংশ হিসেবে যা ২৯ শতাংশ।

নিসচার চেয়ারম্যান অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, সড়ক দুর্ঘটনা এখন শুধু নিছক কোনও দুর্ঘটনা নয়। বরং অনেকাংশেই এটা দুর্যোগের পর্যায়ে চলে গেছে। সড়কে এমন বিশৃঙ্খলা চলতে থাকলে সড়ক দুর্ঘটনা পূর্ববর্তী সময়ের চেয়ে অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। 

বিভিন্ন পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজার ছোট-বড় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। আবার সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা বিআরটিএ’র হিসাব মতে, প্রতিদিন সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান প্রায় ৩০ জন। সে হিসাবেও বছরে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ১০ হাজার ৮শ’ জন। আবার বিশ্বব্যাংকের হিসাবে বছরে ১২ হাজার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রেকর্ড অনুযায়ী ২০ হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। অন্যদিকে বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (এআরআই) এবং নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতি বছর ১২ হাজার মানুষ নিহত হন। বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যানে নিহতের সংখ্যা কিছু তারতম্য থাকলেও বছরে ১০-১২ হাজার মানুষ শুধু সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার তথ্য আমাদের পিলে চমকে দেওয়ার মতো। 

সড়ক দুর্ঘটনা (ফাইল ফটো)

এ বিষয়ে বুয়েটের অ্যাকসিডেন্ট রিসার্স ইনস্টিটিউট (এআরআইর) সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসনাত-ই- রাব্বি রেডিও তেহরানকে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যু হলেও যেখানে প্রশাসন বা চালকদের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। এটা ঠিক যে, পৃথিবীর সব দেশেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু সেসব দেশে যথাযথভাবে বিচারের মুখোমুখি হন চালকরা। এক্ষেত্রে আমাদের দেশে ব্যতিক্রম। তাই সড়কে চালকের যথাযথ প্রশিক্ষনের বিকল্প নেই। 

সব গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, প্রতিনিয়ত সড়কে বিশৃঙ্খলার দরুন প্রাণহানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। এমনকি বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে এই প্রাণহানি থেকে মানুষদের রক্ষা করা যায়নি। তাই সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাংলাদেশের সামনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো টেকসই ও নিরাপদ যানবাহনের ব্যবস্থা করা, দক্ষ চালক নিশ্চিত করা, চালকদের জন্য নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা, শহরগুলোয় নিরাপদ গতি ব্যবস্থাপনা, অবকাঠামোগত নিরাপত্তা ও নতুন প্রযুক্তি সংযোজন করা ইত্যাদি। পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কঠোরভাবে প্রয়োগ জরুরী বলেও মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।#

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ