কাঁচা খেজুরের রস খেয়ে ৩ জনের মৃত্যু, সচেতন হওয়ার পরামর্শ আইইডিসিআরের
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i118924
বাংলাদেশে খেজুরের কাঁচা রস পান করা পুরোনো সংস্কৃতি ও গ্রামীণ ঐতিহ্য। তাই এখনো শীতের ছুটিতে গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে ছেলে বুড়ো সবাই চেষ্টা করেন খেজুরের কাঁচারস খেতে। বিশেষ করে দীর্ঘ দিন বিদেশ যাত্রার পরে দেশে ফিরে আসা মানুষও চান অন্তত শীতের ভোরে খেজুরের কাঁচা রস পান করতে। কিন্তু সব আশায় এখন বাদ সেধেছে বাদুড়। কারণ বাদুড় কাঁচা খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়াচ্ছে।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ ১৫:৪৯ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে খেজুরের কাঁচা রস পান করা পুরোনো সংস্কৃতি ও গ্রামীণ ঐতিহ্য। তাই এখনো শীতের ছুটিতে গ্রাম-গঞ্জে গিয়ে ছেলে বুড়ো সবাই চেষ্টা করেন খেজুরের কাঁচারস খেতে। বিশেষ করে দীর্ঘ দিন বিদেশ যাত্রার পরে দেশে ফিরে আসা মানুষও চান অন্তত শীতের ভোরে খেজুরের কাঁচা রস পান করতে। কিন্তু সব আশায় এখন বাদ সেধেছে বাদুড়। কারণ বাদুড় কাঁচা খেজুরের রসে নিপাহ ভাইরাস ছড়াচ্ছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় শহর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিপাহ ভাইরাসে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া পাবনা ও নওগাতেই আরো দু'জনের মৃত্যুর খর এসেছে। এরপরই নড়েচড়ে বসেছে আইইডিসিআর।

জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি রাজশাহী জেলার বাসিন্দা। চলতি বছরের প্রথম ১০ দিনের মধ্যে এই ভাইরাসের আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। এছাড়া পাবনা নওগাঁতেও খেজুরের রস খেয়ে মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, রাজশাহীতে মৃত ওই নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন কিনা তা চিকিৎসার শুরুর প্রথম দিকে বোঝা যায়নি। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর চিকিৎসকরা ওই রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার আইইডিসিআরে পাঠায়। সেই রিপোর্ট আসতেও ৭ দিন সময় লেগে যায়। আর রোগ শনাক্ত হাওয়ার পরপরই তার মৃত্যু হয়। সুনির্দিষ্টভাবে এখনও নিপাহ ভাইরাস প্রতিরোধে কোনো ভ্যাকসিন বা ওষুধের আবিষ্কার হয়নি।

আইইডিসিআর বলছে, এ দেশে বাঁদুড়ের লালা বা প্রস্রাবের মাধ্যমে নিপাহ ভাইরাস ছড়ায়। মানুষ যখন দূষিত কাঁচা খেজুরের রস পান করে তখন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়। সেই ব্যক্তি থেকে তার পরিবারের সদস্য বা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমন অবস্থায় চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছে, কাঁচা খেজুরের রস এবং অর্ধেক খাওয়া যেকোনও ফল ভক্ষণ করা উচিত নয়। আইইডিসিআর জানায়, নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত ৭১ শতাংশ মানুষ মারা যায়। তাই কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে সবাইকে।

এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. হাবিবুল আহসান জানিয়েছেন, তারা ইতোমধ্যে পাড়া-মহল্লার সকল মসজিদে ইমাম মুয়াজ্জিনদের মাধ্যমে জনগণকে এ বিষয়ে তথ্য জানানোর কাজ শুরু করেছেন। আর আইইডিসিআর-এর গবেষকদের মতে, খেজুরের রস গরম করার পর পান করা নিরাপদ। গুড়ও নিরাপদ। প্রতিষ্ঠানটি খেজুরের রস সংগ্রহকারীদের কাজ শেষে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শও দিয়েছে।#

পার্সটুডে/নিলয় রহমান/আশরাফুর রহমান/২৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।