নগরবাসীরও দায় আছে জলাবদ্ধতার পেছনে: উ.সিটি মেয়র
রাজধানীর ড্রেন পরিষ্কারে কর্তৃপক্ষের ঢিলেমি, বাড়ছে জলাবদ্ধতা
বাহান্না বাজার তেপ্পান্ন গলির তিলোত্তমা নগরী রাজধানী ঢাকা। যেখানে জলাবদ্ধতা নিরসনে বছরজুড়েই চলে নানা প্রকল্প। কিন্তু এরপরও সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে যায়। অথচ কীভাবে এই পানি জমে এর কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছে না ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।
গেল সপ্তাহের বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডিএসসিসির অনেক এলাকায় রাতভর ছিল পানি। এমনকি শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অনেক মার্কেট, দোকান, কাঁচাবাজার, মানুষের বাসাবাড়ি, রাস্তা-গলি ছিল পানির নিচে। যদিও এ বিষয়ে দুই সিটি কর্মকর্তারা মুখে কুলুপ এঁটেছেন। ঠিক কী কারণে অসহনীয় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় রাজধানীতে তা নিয়ে কোনও কথা বলেননি কর্মকর্তারা।
নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই সিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নতুন লাইন নির্মাণে আগ্রহী বেশি। এক্ষেত্রে কাজ দেখানোর প্রবণতা বেশি কাজ করে তাদের মধ্যে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাজে কোনও পরিকল্পনার ছাপ নাই।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে বর্ষা মৌসুমের আগে জলাবদ্ধতা নিরসনে তারা বেশকিছু কাজ করেছেন। ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর পর শাখা-প্রশাখাসহ ১১টি অচল খাল, বর্জ্যে জমাটবদ্ধ পাঁচটি বক্স কালভার্ট ও প্রায় ২০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নর্দমার মালিকানা নিয়েছে সংস্থাটি। দায়িত্বভার গ্রহণের পর এসব খাল, বক্স-কালভার্ট ও নর্দমা হতে বর্জ্য অপসারণ, সীমানা নির্ধারণ ও দখলমুক্ত কার্যক্রম শুরু করে তারা।

অন্যদিকে জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসি ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করার পাশাপাশি পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করেছে। এছাড়া খাল থেকে গত এক বছরে প্রায় ২ লাখ টন বর্জ্য অপসরণ করেছে। কল্যাণপুরে বেদখল হওয়া ৫৩ একর জায়গা উদ্ধারের পর এখন খনন কাজ চলছে। কল্যাণপুর রিটেনশন পন্ড থেকে অপসারণ করা হয়েছে ৩০ লাখ ঘনফুট স্ল্যাজ। এছাড়া ২৯টি খাল নিয়ে কাজ করেছে ডিএনসিসি। খালগুলোর নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চলমান আছে।
ডিএনসিসি সূত্রে জানা গেছে, উত্তরের মোট ১০৩টি স্থানে জলাবদ্ধতা সৃষ্টির পরিবেশ আছে। সেখানে অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। স্থানগুলো চিহ্নিত করে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে তারা।
জলাবদ্ধতা নিরসনের বিষয়ে উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলছেন, সংকট সমাধানে কাজ করে যাচ্ছেন তারা। তবে সংকটের পেছনে দায়ী সবাইকে সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই বলে জানান মেয়র আতিকুল ইসলাম।

এদিকে, নগর পরিকল্পনাবিদ ও ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (আইপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, সিটি করপোরেশন মূলত নতুন লাইন তৈরিতে ব্যস্ত। কিন্তু যে ড্রেনগুলো আছে সেগুলোর কোথায় কোথায় ব্লক হয়েছে তা পরিষ্কার করার ব্যাপারে তারা মনোযোগী নয়। ফলে বেশি কাজ দেখানোর জন্য নতুন করে ব্যাপক অর্থ খরচ করা হলেও পুরো নেটওয়ার্কিং না হওয়ায় সুফল মিলছে না।#
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/গাজী আবদুর রশীদ/২৫
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।