‘বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের বেশি খেলবো না, এটা কখনোই বলিনি’
বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করলেন তামিম
ওপেনার তামিম ইকবালকে বাদ রেখে বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। আজ (বুধবার) বিকেলে বিশ্বকাপ খেলতে দেশ ছেড়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এরপরই নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সাম্প্রতিক সময়ে নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দেন তামিম ইকবাল।
১২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে নানা কথা বলেন বাংলাদেশের এই ব্যাটার, যার শিরোনামে ছিল ‘আমি চাইনি আপনারা ভুল কিছু জানুন’।
ভিডিওর শুরুতে তামিম বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় সঠিক জিনিসটা সবার জানা উচিত। আপনারা জানেন আমি পদত্যাগ করি। এটারও একটা কারণ ছিল। তারপর আমি প্রধানমন্ত্রীর কারণে ফিরে আসি। এরপর গত দুই মাস আমি অনেক কষ্ট করি। এই সময়টাতে আমি নিজেকে ফিট করার জন্য এমন কোনও কষ্ট নেই যা করিনি।’
নিজের চোট প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘ফিজিও ও মেডিকেল ডিপার্টমেন্টের সদস্যরা যখন যা বলেছে, আমি তা করার চেষ্টা করেছি। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৪ রান করে আমি খুবই খুশি ছিলাম। আমি এতদিন পর ফিরে বিশ্বকাপ নিয়েই স্বপ্ন দেখছিলাম। প্রথম ম্যাচেও আমি কিছুটা ব্যথা অনুভব করি। খেলা শেষ হওয়ার পর আমি ফিজিওকে আমার অবস্থা জানাই। এরপর তিন নির্বাচক ড্রেসিংরুমে আসেন। আমি নির্বাচকদের জানাই আমার শরীরের অবস্থা এখন এমন। আমার কিছুটা ব্যথা থাকবে, এটা মাথায় রেখে আমাকে সিলেক্ট কইরেন।'
ফিজিওর রিপোর্ট প্রসঙ্গে তামিম বলেন,‘আমার কন্ডিশন সম্পর্কে বলা হয় দুই ম্যাচের পর কেমন ছিল আমাদের অবস্থা। তবে মেডিকেল ডিপার্টমেন্ট জানায়, তৃতীয় খেলায় আমার না খেলা উচিত। কারণ তারা আমাকে বিশ্রাম দিতে চায়। যাতে আমি আরও সুস্থ হয়ে বিশ্বকাপে নামতে পারি।’
বিশ্বকাপে সুযোগ না পাওয়া প্রসঙ্গে তামিম বলেন, ‘আমাকে বোর্ডের একজন শীর্ষ কর্তা ফোন করে হঠাৎ করে বললেন, তুমি তো বিশ্বকাপে যাবা, তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলাতে হবে তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না। আমি বললাম ভাই এখনও কিন্তু ১০-১২ দিন বাকি বিশ্বকাপের, আমি তো ভালো কন্ডিশনে থাকব, তবে কেন আমি খেলব না। তখন তিনি আমাকে বললেন তাহলে আমরা তোমাকে নিচের দিকে ব্যাটিং করানোর কথা ভাবছি। আমি বলি আমার তো কোনো অভিজ্ঞতা নেই নিচে ব্যাটিং করার। আমি কিছুটা উত্তেজিত হয়ে যাই। বলি, ভাই আমি ১৭ বছর ধরে ওপেনিংয়ে খেলছি। প্রতিদিন একটা নতুন জিনিস ফেস করতে হয়। এই নোংরামির মধ্যে আমি থাকতে চাই না। আপনাদের আমাকে বিশ্বকাপে পাঠানোর দরকার নেই।’
তামিম বলেন, ‘বিশ্বকাপের সূচিই এমন ছিল, ফাঁকা সময় ছিল অনেক। এটা সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রে কিন্তু ইনজুরির ঝুঁকি থাকতে পারে। আমাকে যখন মূল্যায়ন করে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা ফিজিওর রিপোর্টে কী ছিল? ফিজিওর রিপোর্টে যা ছিল বলছি। কেউ যদি আমার সঙ্গে এই জিনিসটা নিয়ে চ্যালেঞ্জ করতে চান, তাদের মোস্ট ওয়েলকাম। আমার সাথে পাবলিক ফোরামে বসেন, আমাকে বলেন যে আমি ভুল বলেছি।’
তামিম আরও যোগ করেন, ‘যদি আমাকে কথাটা অন্যভাবে বলা হতো, হয়তো আমি মেনে নিতাম। কিন্তু হুট করে কেউ যদি এভাবে ফোন করে বলে, তাহলে স্বাভাবিক নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখা কঠিন। আমার সাথে গত ৩-৪ মাসে অনেক কিছু হয়েছে, যা ইচ্ছে করা হয়েছে। আমাকে মনে রাইখেন, এটা বলব দিনশেষে’।
নানা নাটকের পর আগের দিন গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সেই দলে শেষ পর্যন্ত রাখা হয়নি তামিমকে। তখন থেকেই নানা গুঞ্জন। নির্বাচকরা অবশ্য ইনজুরির দোহাই দেন। তবে আজ বুধবার সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন তামিম।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।