গাজায় মানবিক বিপর্যয়
গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রতিবাদে ক্ষুদ্ধ বাংলাদেশের মানুষ; সরকারি প্রতিবাদ দাবি
ইসরাইল-ফিলিস্তিনি সংঘাতে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। বছরের পর বছর ধরে চলে আসা এ সংঘাতে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন অনেকে। এই দুই সম্প্রদায়ের সংঘাতের বীজ বোনা হয়েছিল এক শতাব্দীরও বেশি সময় আগে পরিচালিত একটি ঔপনিবেশিক কর্মে।
১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর ব্রিটেনের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব আর্থার বেলফোর ব্রিটিশ ইহুদি সম্প্রদায়ের একজন সদস্য লিওনেল ওয়াল্টার রথচাইল্ডকে সম্বোধন করে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিটি ছিল মাত্র ৬৭ শব্দের। কিন্তু এর তাৎপর্য এত বেশি তা এখনো ধারণ করতে হচ্ছে পৃথিবীকে।
ইসরাইল জাতিসংঘ পরিকল্পনায় বরাদ্দ ফিলিস্তিনের জন্য জায়গার অনেকটাই দখল করে নেয়। এরপর যে সামান্য জমি পড়ে ছিল, সেটা আবার ভাগ করে নিয়েছে মিসর ও জর্ডান। এভাবেই যুগের পর যুগ ধরে বার বার আলোচিত হচ্ছে ইসরাইলের পাশাপাশি একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনের প্রশ্ন। কিন্তু বিভিন্ন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের দখলদারি মনোভাবের কারণে কোনো সমাধান হচ্ছে না, শুধু সহিংসতাই বাড়ছে।
ফিলিস্তিনিরা মুসলিম বলেই ইসরাইলি বাহিনীর গণহত্যা নিয়ে বিশ্ব চুপ করে থাকে, বিশেষ করে আমেরিকা। আমেরিকা বিশ্বের যেকোনো দেশে মানবাধিকার ক্ষুণ্ন হলেই কথা বলে কিন্তু ইসরাইল প্রশ্নেই শুধু নিশ্চুপ। এমনকি বিশ্বের প্রভাবশালী ইসলামি দেশগুলোও তেমনভাবে কোনো ভূমিকা না রাখায় এই সংকট নিরসনে কোন কাজ হচ্ছে না আজও।
ইহুদিবাদী ইসরাইল এবং হামাসের মধ্যে পারস্পরিক উত্তেজনা নিয়মিত ঘটনা। তবে গেল শনিবার হামাসের হামলা ছিল একেবারে অতর্কিত। কোনো ধরনের আগাম সতর্কবার্তা পায়নি ইসরায়েল। এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইসরাইল তাৎক্ষণিকভাবে বিমান হামলা শুরু করে। বিশেষ করে হামাসের বিভিন্ন অবস্থান লক্ষ্য করে তারা এই বিমান হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করে। এমন অবস্থায় গাজা উপত্যকাসহ ফিলিস্তিনে শুরু হয়েছে মানবিক বিপর্যয়। যেখানে মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র মদদ দেয়ার অভিযোগ তুলেছে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ। ফলে ফিলিস্তিনে বিশ্ব সন্ত্রাসী ইসরাইলি বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে ঢাকার রাজপথও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়ও প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী বিভিন্ন সংগঠনসহ রাজনৈতিক বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) বলেছেন, ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপর যে জুলুম নির্যাতন ও হত্যাযঞ্জ চলছে তার প্রতিবাদে রাজপথে থাকা অত্যাবশ্যকীয়। তিনি বলেন, আমেরিকা, ইউরোপসহ যেসব দেশ যুগ যুগ ধরে ফিলিস্তিনের মুসলমানদের উপর সন্ত্রাসী ইসরাইলি আক্রমণকারীদের পক্ষাবলম্বন করে মানবতাবিরোধী কাজ করছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের কোন প্রতিবাদ না করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম।
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স)বলেছেন, গত ৫০ বছরে গাজায় লক্ষাধিক ফিলিস্তিনিকে একটি ছোট এলাকায় এমন করে বন্দি করে রাখা হয়েছে, যা বিশ্বের বৃহত্তম উন্মুক্ত কারাগার হিসেবে বর্ণনা করা যায়। এ বিষয়ে মানবাধিকারের লংঘন দেখে না বিশ্ব মোড়ল আমেরিকা। একই সাথে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি হামলার ঘটনায় বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেন এই বাম রাজনৈতিক নেতা।#
পার্সটুডে/বাদশা রহমান/আশরাফুর রহমান/১১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।