নিম্ন আয়ের মানুষ চাপে রয়েছে
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আছে ৪ চ্যালেঞ্জ আর ৩ ঝুঁকি: বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংক বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বর্তমানে চারটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলো হলো উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি, আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং আর্থিক খাতের ঝুঁকি। এসব কারণে বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে যে চলতি বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যেতে পারে।
গতকাল (মঙ্গলবার) বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে ঐ চারটি চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এ বছর প্রবৃদ্ধি কমে হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। তবে সরকার চলতি অর্থবছর প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করেছে সাড়ে ৭ শতাংশ।
এর পাশাপাশি অর্থনীতিতে তিনটি ঝুঁকি বিরাজমান বলেও মনে করে সংস্থাটি। প্রথম ঝুঁকি হলো, মুদ্রা বিনিময় হার সংস্কার বিলম্ব হওয়ায় তা বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি এবং আমদানি নিয়ন্ত্রণকে দীর্ঘস্থায়ী করছে।
দ্বিতীয়ত, জিনিসপত্রের বাড়তি দামের কারণে উচ্চ মূল্যস্ফীতি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহত থাকা। আর তৃতীয় ঝুঁকি হলো সমন্বিত সংস্কার কর্মসূচি না নেওয়ায় তা আর্থিক খাতের চলমান ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
সম্প্রতি দুটি ব্যাংক একীভূত করার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা নিয়েও মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, আন্তর্জাতিক রীতিনীতি মেনে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা দরকার।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল্লায়ে সেক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা আছে। তবে কোনো সন্দেহ নেই-এ দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। মজুরি অনেকটা এক জায়গায় থেমে আছে। ফলে এখানে নিম্ন আয়ের মানুষ চাপের মুখে আছে। এ ছাড়া আর্থিক খাতেও নানা ধরনের ঝুঁকি আছে।
সংস্থাটি বলেছে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে মোট ঋণের ৮ দশমিক ২ শতাংশ খেলাপি ছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ শতাংশে। এটি ব্যাংক খাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি ছিল ৪৭০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশে বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতি কঠোর করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপণ্যের শুল্ক কমানোর কথা বলেছে সংস্থাটি। রাজস্ব আহরণে মোটা দাগে তিনটি সমস্যা আছে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক। এগুলো হলো কর আদায় যথাযথভাবে না হওয়া, কর ফাঁকি ও করছাড় এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে করের সঙ্গে বিদ্যমান নানা ধরনের প্যারা-ট্যারিফ। কর আদায় বাড়াতে তিনটি সুপারিশ করেছে বিশ্বব্যাংক।#
পার্সটুডে/জিএআর/৩