পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতার সামগ্রী
-
অন্তত ৩০টি আইটেমে দিয়ে তৈরি ইফতারি ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোংগা ভইরা লইয়া যায়’
প্রতিবছর রমজান এলেই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার প্রায় পুরো এলাকা হয়ে উঠে ইফতার বাজার। দুপুরের পর পরই স্থায়ী হোটেল-রেস্তোরাঁ থেকে ফুটপাতের অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমাণ ইফতার দোকান জমে উঠে। ছোলা, আলুর চপ, বেগুনী, জিলাপি, বুরিন্দা, হালিম ইত্যাদি ঐতিহ্যবাহী দেশীয় ইফতারি পাওয়া যায় এসব দোকানে।
পাশাপাশি প্রতিবারের মতো এবারও জমে উঠেছে পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী ইফতার বাজার। বাহারি ইফতারের পসরা সাজানো হয় ঢাকার এ প্রাচীন স্থানটিতে।

পুরান ঢাকার চকবাজারের ইফতার ঐতিহ্য ও বৈচিত্রের দিক থেকে আলাদা বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। রমজানের প্রতিদিন দুপুর থেকেই চকবাজার ছাপিয়ে পুরান ঢাকার অলিগলির বাতাসে ভাসে নানা স্বাদের মুখরোচক খাবারের মনকাড়া সুবাস। দুপুর থেকেই জমে উঠতে শুরু করে ইফতারি বাজার।

বাহারি ইফতারি তৈরিতে নগরীর চকবাজারের রয়েছে কয়েকশ’ বছরের ঐতিহ্য। মোগল আমল থেকে চকবাজারের এই ইফতারি ঐতিহ্য গড়ে ওঠে। রাজধানীর মানুষের কাছে চকবাজারের ইফতারি কেনা অনেকটা শখের। সব মিলেয়ে প্রতিবছর যেন বাহারি ইফতারির ঐতিহ্যে সাজে চকবাজার। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত ও ঢাকার বাইরে থেকেও প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক ক্রেতা ইফতারির জন্য ছুটে আসে চকবাজারে।

চকবাজারের ঐতিহ্যবাহী ইফতার মেন্যু হলো অন্তত ৩০টি আইটেমে দিয়ে তৈরি ‘বড় বাপের পোলায় খায়, ঠোংগা ভইরা লইয়া যায়’। প্রায় ৭৫ বছর ধরে প্রচলিত এই পদ পুরান ঢাকার ইফতারির অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে সমাদৃত হয়েছে।

এখানকার অন্যান্য ইফতার সামগ্রীর মধ্যে আস্ত মুরগির কাবাব, খাসির রান, কোয়েল-কবুতর ভুনা, পেঁয়াজু, বেগুনী, মোরগ পোলাও, পেল্লাই জিলাপি, পেস্তা বাদামের শরবত, মোরগ মুসাল্লাম, বটি কাবাব, টিকিয়া কাবাব, কোপ্তা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতি কাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, শাহী জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, লাবাং, কাশ্মীরি শরবতের মতো অসংখ্য মজাদার খাবার।

চকবাজারের পাশাপাশি সদরঘাট, বাবুবাজার, নবাবপুর রোড, কোর্ট-কাচারি এলাকা, ওয়ারি, চানখাঁরপুল, মিটফোর্ড, আরমানীটোলাসহ অন্যান্য প্রায় সকল এলাকায় রমজান মাসে ইফতারির সমারোহ লক্ষ্য করা যায়।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২৭