সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'ফণী': মংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত
(last modified Thu, 02 May 2019 11:03:42 GMT )
মে ০২, ২০১৯ ১৭:০৩ Asia/Dhaka
  • সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় 'ফণী': মংলা ও পায়রায় ৭ নম্বর বিপদ সংকেত

বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের ফলে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় 'ফণী' প্রবল শক্তি সঞ্চয় করে সাইক্লোনে পরিণত হয়েছে। প্রলয়ংকরী রূপ ধারণ করে ধেয়ে আসছে উপকূলের দিকে।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত আবহাওয়া অধিদফতরে এক ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির পরিচালক সামছুদ্দিন আহমদ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ফণী ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছিল। কিন্তু দুপুরের পূর্বাভাসে দেখা যাচ্ছে এখন গতি বেড়ে এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে।

তিনি পূর্বাভাস দিয়েছেন, বর্তমান গতিপথে থাকলে শুক্রবার বিকেল কিংবা সন্ধ্যা নাগাদ ফণী সরাসরি কিংবা ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। সাইক্লোনটি যদি উড়িষ্যার উপকূলে আঘাত হানে তবে তার প্রভাবে শুক্রবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম, খুলনা বিভাগসহ পুরো উপকূলীয় এলাকায় প্রচণ্ড ঝড়ো হাওয়ার সাথে তুমুল বৃষ্টিপাত হবে।

তবে গতিপথ পরিবর্তন হলে ফণী সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়ে সামছুদ্দিন আহমদ বলেন, এটি যদি সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানে তবে তা রূপ নেবে সুপার সাইক্লোনে। এরইমধ্যে মংলা ও পায়রা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত, চট্টগ্রাম বন্দরকে ৬  নম্বর বিপদ সংকেত ও কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতের আশঙ্কায় ঢাকার নদীবন্দর সদরঘাটসহ সারাদেশে নৌচলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)। বৃহস্পতিবার সকালে এক জরুরি বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত  অনুযায়ী  দুপুর ১২টা থেকে ঢাকা নদীবন্দরের সঙ্গে দেশের দক্ষিনাঞ্চলের ৪১টি রুটের যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাপ্তাহিক ছুটিও বাতিল করা হয়েছে।

তাছাড়া, দুর্যোগ মেকাবেলায় উপকূলীয় ১৯ জেলার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

মংলা বন্দর

এদিকে, সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় নৌবাহিনীর ৩২টি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর কারণে প্রলয়ঙ্ককারী দুর্যোগের আলামত সুস্পষ্ট হলেও সরকার তা মোকাবিলা করতে কোনো কার্যকর প্রস্তুতি গ্রহণ করেনি। তাই এই মূহুর্তে সকলকে বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে। সমগ্র উপকূল অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বিমান, তেল রিজার্ভার, বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র-এসব নিরাপদ করার এখনি সময়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের আগাম প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন দলীয় নেতা-কর্মীরা সকলেই  যেন উদ্ধারকর্মীর মতো প্রস্তুত থাকে। ঝড় আঘাত হানার পূর্বেই উপকূলীয় অসহায় মানুষকে নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানান রিজভী। একই সাথে তিনি উপকূলীয় এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীসহ উদ্ধারকর্মীদের প্রস্তুত থাকার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আহ্বান জানান।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/২