উড়িষ্যায় আঘাত হেনেছে ‘ফণী’: বাংলাদেশে আসবে দুর্বল হয়ে
(last modified Fri, 03 May 2019 06:23:26 GMT )
মে ০৩, ২০১৯ ১২:২৩ Asia/Dhaka
  • ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের পুরী শহরে ‘ফণী’-র আঘাত। ছবি: রয়টার্স
    ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের পুরী শহরে ‘ফণী’-র আঘাত। ছবি: রয়টার্স

ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের পুরি উপকূলে আঘাত হেনেছে অতিপ্রবল সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’। এর গতিবেগ ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার।

উড়িষ্যা রাজ্যের বিশেষ ত্রাণ কমিশনার বিষ্ণুপদ শেঠি জানিয়েছেন, আজ (শুক্রবার) সকালে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে। আগামী তিন থেকে ছয় ঘণ্টা ধরে উড়িষ্যা উপকূলে থাকবে ‘ফণী’র প্রভাব। এর পর ক্রমেই উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হবে ঘূর্ণিঝড়টি। পরে আগামীকাল সকালে দুর্বল হয়ে পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে এটি।

ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া অফিসের অধিকর্তা এইচ আর বিশ্বাস জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র গতিপথে ওডিশার ১০ হাজার গ্রাম এবং ৫২টা শহর পড়েছে। যার মধ্যে ওডিশার গোপালপুর, পুরি, ভুবনেশ্বর, পারাদীপ, চাঁদবালি, বালাসোর ও কলিঙ্গপত্তনামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ‘ফণী’র প্রভাবে পুরির বিস্তীর্ণ এলাকা এরই মধ্যে পানিমগ্ন হয়ে পড়েছে। বহু গাছ উপড়ে পড়েছে। বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

আজ সকালে ঘূর্ণিঝড় উড়িষ্যায় আছড়ে পড়ার ভয়াল আওয়াজ ও আতঙ্কে কেন্দ্রাপাড়ার আশ্রয়শিবিরে এক বৃদ্ধা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।  

গ্রীষ্মকালীন ঝড় হিসেবে গত ৪৩ বছরে সবচেয়ে শক্তিশালী ‘ফণি’-র হাত থেকে বাঁচাতে ভারতীয় সরকার ১০ লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। এছাড়াও, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসেননি তাদেরকে ঘরের মধ্যেই অবস্থান করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ফণীর প্রভাবে ঢাকায় বৃষ্টি

এদিকে, বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে ‘ফণী’ আছড়ে পড়বে বাংলাদেশে। তবে বাংলাদেশে আসার পর তার গতিবেগ অর্ধেক হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামছুদ্দিন আহমেদ।

তিনি আজ বেলা ১১টার দিকে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে যখন আসবে, এর গতিবেগ প্রায় অর্ধেকের মতো কমে আসবে। মূল যে জায়গায় আছে, সেখানে আছে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটার। বাংলাদেশে যখন আসবে, সেটি ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটারে চলে আসবে। সে জন্য আইলার মতো কোনো কিছু হওয়ার শঙ্কা আমি কম দেখতে পারছি।’

মংলা বন্দর

আবহাওয়ার সর্বশেষ বার্তায় বলা হয়েছে, এটি আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৭০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত নাগাদ খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এলাকায় পৌঁছাতে পারে। খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আজ দুপুর থেকে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র অগ্রবর্তী অংশের প্রভাব শুরু হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২০০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৩