'দেশবিরোধী' চুক্তি বাতিল ও আবরার হত্যার ঘটনায় বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা
ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি বাতিলের দাবি ও আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামী শনিবার ১২ অক্টোবর ঢাকাসহ দেশের সকল মহানগরে জনসমাবেশ এবং আগামী রোববার ১৩ অক্টোবর দেশের সকল জেলা সদরে জনসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
আজ (বৃহস্পতিবার) নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচির ঘোষণা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হয়ে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয় এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে। তখন তার পরিণতি দেশ ও দেশের জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকারক হয় তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল। এতে বোঝা যায়, রাষ্ট্রীয় সফরের আগে সরকার যথাযথ প্রস্তুতি নেয়নি, দেশের জনগণকে কিছু জানতেও দেয়নি। এসব নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র।
মোশাররফ আরও বলেন, ইতোমধ্যেই দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থবিরোধী এসব চুক্তির প্রতিবাদে দেশবাসী ফুঁসে উঠেছে। সচেতন ছাত্র সমাজ আন্দোলনে সোচ্চার হয়েছে।
তিনি বলেন, সমালোচনায় ভীত সরকার তার দলীয় লাঠিয়ালদের দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার জন্য বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে খুন করেছে। কিন্তু এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড আন্দোলনের আগুনে ঘৃতাহুতি দিয়েছে মাত্র। কাউকে ভীত করতে পারেনি। আজ গোটা দেশের জনগণ এই সরকারকে দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিসর্জনকারী এক ক্ষমতালিপ্সু শাসক বলে মনে করে। জনগণ মহান মুক্তিযুদ্ধের সোনালী ফসল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে এই দূরাচারী শাসকের পতন চায়।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, গতকাল প্রধানমন্ত্রী ভারত সফরের মাধ্যমে দেশের বিপুল লাভ ও উন্নয়নের বর্ণনা দিতে গিয়ে নানা অবান্তর বিষয়ের অবতারণা করেছেন। অসত্য তথ্য ও ইতিহাস বর্ণনা করে তিনি ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। অনেক বিষয়ের মধ্যে আমরা আজ শুধু গঙ্গা চুক্তি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ভারত সফর নিয়ে তিনি যেসব তথ্য দিয়েছেন সে সম্পর্কে সত্য তথ্য জানাতে চাই। প্রকৃতপক্ষে ’৭৫-এর আগে গঙ্গার পানি নিয়ে কোনো চুক্তি হয়নি, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল। চুক্তি হয়েছে ১৯৭৭ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে। এই চুক্তিতে যে গ্যারান্টি ক্লজ ছিল তা ১৯৯৬ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক স্বাক্ষরিত চুক্তি থেকে বাদ দেয়া হয়। যার ফলে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া ভারত সফরের সময় গঙ্গার পানির কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তাও অসত্য। তাই দেশ ও দেশের মানুষকে বাঁচাতে আমরা দল-মত নির্বিশেষে সমগ্র দেশবাসীকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে এবং অবৈধ সরকারের পতনের মাধ্যমে আগামী দিনের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ।#
পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।