রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ: বিভিন্ন মহলের প্রতিক্রিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i75985-রাজাকারদের_তালিকা_প্রকাশ_বিভিন্ন_মহলের_প্রতিক্রিয়া
বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৪৮তম দিবসের প্রক্কালে এই প্রথম একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কালীন হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯ ১৭:০২ Asia/Dhaka

বাংলাদেশে স্বাধীনতার ৪৮তম দিবসের প্রক্কালে এই প্রথম একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ কালীন হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করেছে সরকার।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক গতকাল ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের এ  তালিকা প্রকাশ করে জানান, এদের  কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। এদের বিরুদ্ধে  খুন, ধর্ষন , অগ্নিসংযোগ এবং লুটতরাজ ছাড়া অন্য কোন মামলা হবে না। তবে একাত্তরে এদের ভূমিকা জাতির কাছে তুলে ধরার  জন্য এ প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।

আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, রাজাকারদের এই তালিকা নতুন কোনও তালিকা নয়। নতুনভাবে কাউকে তালিকা করতেও দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। ওই সময় ডিসি অফিসের রেকর্ড রুমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিজি প্রেসের প্রকাশিত গেজেটে যাদের নাম পাওয়া গেছে, তাদের নামই এই সংখ্যার মধ্যে রয়েছে। তবে এটি এখনও পরিপূর্ণ নয়।

রাজাকারের তালিকা প্রকাশে অনেকেই সন্তোষ প্রকাশ করলেও কেউ কেউ মনে করেন রাজনৈতিক বিবেচনায় যেনো কাউকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা হয়। এ সময় মুক্তিযোদ্ধাদের খসড়া তালিকাও প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।

তিনি জানান, দেশে মুক্তিযোদ্ধার দাবিদার ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ জন। তবে, এই ২ লাখ ৫১ হাজার ২৮৫ সংখ্যক তালিকার অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম একাধিক গেজেট বা দলিলে থাকায় বেশি মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে এ সংখ্যা ২ লাখ ১০ হাজারের বেশি নয়।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, একাধিক তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের চূড়ান্ত একক তালিকা তৈরির কাজ প্রক্রিয়াধীন। এই খসড়া তালিকা উপজেলা থেকে যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করে আগামী ২৬ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। ওদিকে, ভাষাসৈনিক আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছেন, রাজাকারদের লিস্ট করার আগে আওয়ামী লীগের ভেতরে থাকা রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা উচিত।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেন, আওয়ামীলীগের ভেতরে জামায়াতের লোকও আছে। এমনকি আমাদের জননেত্রী শেখ হাসিনার আশে পাশেও আছে। তাদের নাম বললে আমার আর ঢাকায় আসা হবে না। তাই আমি নাম বলতে চাই না।

এ প্রসঙ্গে  আইন বিচার ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক রবিবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে  বলেন, ‘প্রকাশিত রাজাকারদের তালিকা এখন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যাচাই-বাছাই করে দেখবে। তারা তদন্ত করে তাদের অপরাধের যদি প্রমাণ পায় তাহলে অবশ্যই তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হবে। সেখানে অপরাধের ধরন অনুযায়ী রাজাকারদের বিচার হবে।’

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের যে তদন্তকারী সংস্থাটি রয়েছে, তারা দেখবে যে কার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া উচিত। কার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আওতায় বিচার করা উচিত। তারা যদি তালিকায় থাকা রাজাকারদের বিষয়ে তদন্ত করে অপরাধের প্রমাণ পায় নিশ্চয় তাদের বিচার হবে।

দীর্ঘদিন পর রাজাকারদের তালিকা প্রকাশের বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ইতিহাসে সবকিছু পরিষ্কার হওয়া ভালো।  এসব রাজাকারের তালিকা এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে একটি সুন্দর শক্তিশালী এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করবে।#

পার্সটুডে/ আব্দুর রহমান খান /এমবিএ/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।