বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবি: আরও ৩ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার

বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন এলাকায় মালয়েশিয়াগামী ট্রলারডুবির ঘটনায় আরো তিন রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযানকারী নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা আজ (বুধবার) সকাল ও মঙ্গলবার রাতে সেন্টমার্টিন দ্বীপের তীর থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় এদের উদ্ধার করে। তাদেরকে বর্তমানে সেন্টমার্টিন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সেন্টমার্টিন স্টেশন কমান্ডার লে. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোহিঙ্গা বোঝাই ট্রলারডুবির ঘটনায় দ্বিতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান শুরু করে নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড সদস্যরা। এ অভিযানে বুধবার সকালে সেন্টমার্টিনের স্থলভাগ থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় আরো একজন রোহিঙ্গা যুবককে উদ্ধার করা হয়েছে। সে কথা বলতে অক্ষম হওয়ায় তার নাম পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তাকে সেন্টমার্টিন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে আরো দুজনকে একইভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল। তাদেরও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

ট্রলার ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২ নারী ও ৩ শিশুসহ ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো ক্যাম্পে তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। উদ্ধার জীবিতদেরও স্ব স্ব ক্যাম্পে ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে ৭৪ জনকে। উদ্ধার হওয়া ৭৪ জনের মধ্যেও ৪৬ জন নারী। যাদের বয়স ২০-২২ বছরের মধ্যে। তারা কেউ স্বামীর কাছে যাচ্ছিলেন, আবার কেউ যাচ্ছিলেন রোহিঙ্গা যুবকদের সঙ্গে বিয়ের উদ্দেশ্যে।

এদিকে, ট্রলারডুবির ঘটনায় টেকনাফ থানায় ১৯ দালালের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার আটক চার দালালসহ তাদের সহযোগী আরো ১৫ জনকে মামলায় নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

ট্রলারে করে রোহিঙ্গা নারী-শিশুকে বিদেশ পাচারে সম্পৃক্ততার অভিযোগে মঙ্গলবার আটক চার দালালরা হলেন, টেকনাফের নোয়াখালী পাড়ার ফয়েজ আহম্মদ (৪৮), সৈয়দ আলম (২৭), উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আজিম (৩০) এবং বালুখালীর ওসমান (১৭)। তারাও সেই ট্রলারে ছিল।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার গভীর রাতে বাহারছড়া উপকূল থেকে রোহিঙ্গাদের নিয়ে দুইটি ট্রলার সাগর অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। সেন্টমার্টিন সংলগ্ন সাগরে ভোরের দিকে একটি ট্রলার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। ট্রলারে থাকা জনৈক ব্যক্তি ৯৯৯ নম্বরে কল করে বাঁচার আকুতি জানানোর পর কোস্ট গার্ড উদ্ধার অভিযানে যায়। ট্রলারে ১৩৮ জন যাত্রী ছিল বলে দাবি করেছে জীবিত উদ্ধাররা। সে হিসেবে এখনো অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/১২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।