সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা ব্যর্থ: টেকনাফে ৪ শতাধিক রোহিঙ্গা উদ্ধার
-
ফাইল ফটো
বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের হলবনিয়াপাড়া ঘাট থেকে চার শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। উদ্ধার হওয়া প্রত্যেকেই উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শিবির থেকে সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
টেকনাফ স্টেশন কোস্ট গার্ডের কর্মকর্তা লে.কমান্ডার এম সোহেল রানা বলেন, রোহিঙ্গা ভর্তি একটি বড় জাহাজ টেকনাফ জাহাজপুরা ঘাট দিয়ে ওঠার সময় বুধবার রাত ৯টার দিকে চার শতাধিকের মত রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা বেশ কিছু দিন আগে সাগর পথে মালয়েশিয়া যাত্রা করেছিল। কিন্তু সেখানে ভিড়তে না পেরে আবার চলে আসে। তবে সংখ্যাটা কম বেশি হতে পারে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসাম বলেন, চার শতাধিক রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তারা মালয়েশিয়া যেতে না পেরে ফেরত আসে। তবে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে বেশির ভাগ নারী ও শিশু ছিল।
তিনি জানান, "উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের বাহারছড়া কোস্টগার্ড স্টেশনে জড়ো করা হচ্ছে। আগে তাদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে।"

ইউএনও বলেন, "করোনা সংকটের এ সময়ে এসব রোহিঙ্গারা যেহেতু মালয়েশিয়া ভিড়তে না পেরে ফেরত এসেছে বলছে; তাদের ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উদ্ধার হওয়া টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা মোহাম্মদ জোবাইর বলেন, মাসখানেকের বেশি আগে প্রায় ৩/৪শ রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার সাগরপথে মালয়েশিয়ার উদ্দ্যেশে রওনা দেয়। সেখানে পৌঁছলেও দেশটিতে কড়াকড়ির কারণে ভিড়তে পারেনি।
তিনি বলেন, "এতদিন সাগরে ভাসমান অবস্থায় ছিলাম। অনেক চেষ্টার পরও ট্রলারটি মালয়েশিয়ার উপকূলে ভিড়তে পারেনি। দীর্ঘদিন সাগরে অবস্থানের সময় অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন মারা গেছে। পরে ট্রলারটি বাংলাদেশে ফেরত আসতে বাধ্য হয়েছে।"
ভালো চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দালালেরা রোহিঙ্গাদের মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়ায় পাঠানোর চেষ্টা করে। এজন্য তাদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অংকের টাকা। ২০১৯ সালের ১ মার্চ থেকে চলতি বছরের ৩ মার্চ পর্যন্ত সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মহেশখালী, উখিয়া, রামু, টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিন থেকে ৪৬ দফায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা ১১৪০ জন রোহিঙ্গা নারী, শিশু ও পুরুষকে উদ্ধার করেছে। এদের মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ নারী। এসময় ৪৯ জন দালালকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ৯ সন্দেহভাজন মানব পাচারকারী নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে তিনজন রোহিঙ্গা ও ছয়জন বাংলাদেশি।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।