গণস্বাস্থ্যের করোনা কিট: বাংলাদেশে না হলে বিদেশে হবে রেজিস্ট্রেশন
https://parstoday.ir/bn/news/bangladesh-i79578-গণস্বাস্থ্যের_করোনা_কিট_বাংলাদেশে_না_হলে_বিদেশে_হবে_রেজিস্ট্রেশন
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’-এর সরকারি রেজিস্ট্রেশন বা অনুমোদন নিয়ে আরো কিছু কছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। তবে কিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নন তারা। বরং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা কিটের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন।
(last modified 2025-11-11T14:44:42+00:00 )
মে ০৩, ২০২০ ১৯:৫৭ Asia/Dhaka
  • কিট হাতে ড. বিজন কুমার শীল
    কিট হাতে ড. বিজন কুমার শীল

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’-এর সরকারি রেজিস্ট্রেশন বা অনুমোদন নিয়ে আরো কিছু কছু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা। তবে কিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নন তারা। বরং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা কিটের উজ্জ্বল সম্ভাবনা দেখছেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী আগেই জানিয়েছেন, তাদের প্রধান লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনে কিট উৎপাদন করা এবং স্বল্প মূল্যে তা ব্যবহারকারীদের জন্য সরবরাহ করা।

সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দেওয়া অনুমতি অনুযায়ী এক্সটার্নাল ভ্যালিডেশনের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় নথি, প্রটোকল, প্রেয়ার (আবেদনপত্র) ও প্রয়োজনীয়সংখ্যক কিট হস্তান্তর করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। তাদের ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ প্রকল্পের তিন বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল, ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার ও ড. নিহাদ আদনান শনিবার (২ মে) বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক  বৈঠকও করেছেন।

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ গতকালই এ কিটের এক্সটার্নাল ভ্যালিডেশনের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে এই কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কিটের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে বাংলাদেশ ঔষুধ প্রশাসন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা আশায় বুক বেঁধে আছেন, বিএসএমইউ থেকে এক্সটার্নাল ভ্যালিডেশন রিপোর্ট পাওয়ার পর খুব দ্রুততার সঙ্গে ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ কিটের রেজিস্ট্রেশন দেবে ঔষুধ প্রশাসন অধিদফতর। রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর তারা দ্রুত উৎপাদনে যাবেন। প্রথম অবস্থায় তাদের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ লাখ কিট।

এ প্রসঙ্গে ড. বিজন কুমার শীল গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সরকারি রেজিস্ট্রেশন না দেওয়ার কোনো কারণই নেই। প্রধানমন্ত্রী আমাদের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। আশা করি আমরা দ্রুতই রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাব।’

বক্তব্য রাখেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘বিএসএমএমইউ’র পরীক্ষায় আমরা পাস করব। ড্রাগস (ওষুধ প্রশাসন অধিদফতর) থেকে রেজিস্ট্রেশনও হয়ে যাবে- এটা আমাদের বিশ্বাস। আমরা এই মুহূর্তে নেতিবাচক কিছু ভাবতে চাই না।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে সরকারের অনুমোদন না পেলে ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ প্রকল্পের স্বত্ব অন্য কোনো দেশ, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কাছে বিক্রিতে বাধা থাকবে না গণস্বাস্থ্যের। তারা চাইলে যে কারও কাছে এই কিটের মেধাস্বত্ব বিক্রি করতে পারবে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে, সিঙ্গাপুরের ল্যাবে কর্মরত অবস্থায় ২০০৩ সালে ড. বিজন কুমার শীলের উদ্ভাবিত সার্স ভাইরাসের র‌্যাপিড টেস্ট পদ্ধতি রেজিস্ট্রেশন করেছিল চীন।

এ প্রসঙ্গে ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘বাংলাদেশে রেজিস্ট্রেশন না পেলে বাইরের দেশ এ কিটের রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে। তাতে কোনো বাধা থাকবে না। আর করোনা প্রকোপ খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে না। সেলুলজিক্যাল কিটের প্রয়োজনীয়তাও শেষ হবে না। তাছাড়া আমাদের কিটের মূল্য কম রাখা হবে। সুতরাং আমরা কিটের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত নই। তবে আমরা চাই এটা বাংলাদেশের মানুষের সেবায়  লাগুক।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘সিডিসি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইরানসহ অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। বাংলাদেশ সরকার যদি আমাদের কিট না নেয়,  সেক্ষেত্রে বিদেশি সরকার বা প্রতিষ্ঠানকে  দিতে কোনো অসুবিধা থাকবে না। তবে আমরা এটা বাংলাদেশের মানুষের জন্য বানিয়েছি। বাংলাদেশের মানুষই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

বিশ্বমহামারী করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর পরই গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে একদল গবেষক কোভিড-১৯ শনাক্ত করণে ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। গবেষক দলের অন্যরা হলেন- ড. ফিরোজ আহমেদ, ড. নিহাদ আদনান, ড. মো. রাইদ জমিরুদ্দিন ও ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার।#

পার্সটুডে/আবদুর রহমান খান/আশরাফুর রহমান/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।