রোহিঙ্গাদের অবশ্যই মিয়ানমারে ফিরতে হবে: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে জানাল বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রোহিঙ্গারা তাদের নিজ দেশে ফিরতে ইচ্ছুক হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত আন্তরিকভাবে তাদের প্রত্যাবাসনের পরিবেশ তৈরিতে কাজ করা।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের টেকসই সমাধান নিয়ে আলোচনার জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানকালে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে।
জাতিসংঘের ৭৫তম সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, সমস্যাটি মিয়ানমার তৈরি করেছে এবং এর সমাধান মিয়ানমারকেই খুঁজে বের করতে হবে।
আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) আজ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এক সম্মেলনে একত্রিত করে এবং তারা রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়দাতাদের সমর্থন করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আর এ বোঝা (রোহিঙ্গা) বহন করার মতো অবস্থানে নেই এবং রোহিঙ্গাদের অবশ্যই অবিলম্বে তাদের স্বদেশে ফিরে যেতে হবে। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে শক্ত পদক্ষেপ চান তিনি।
মিয়ানমারের নৃশংসতা ও সহিংসতার মুখে পালিয়ে আসা নিপীড়িত রোহিঙ্গাদের প্রতি নিঃশর্ত এবং অগাধ মানবিকতা প্রদর্শন করে প্রথম সহায়তাকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশই এগিয়ে এসেছিল বলে উল্লেখ করেন শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘যখন দ্বিতীয় কোনো দেশ রোহিঙ্গাদের দায়িত্ব নিতে রাজি ছিল না, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই কেবল দেশের সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন এবং লাখ লাখ রোহিঙ্গার জীবন রক্ষা করেছিলেন। গত তিন বছরে প্রত্যাবাসনের অগ্রগতির অভাবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মধ্যে ব্যাপক হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য তারা মানবপাচার, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে।’
নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জরুরি প্রত্যাবাসন বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান শাহরিয়ার আলম। তিনি আরো বলেন, এটিই হবে নিপীড়িত এ সম্প্রদায়ের জন্য সত্যিকারের এবং মূল্যবান পরিষেবা। দাতা সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এ সম্মেলনে রোহিঙ্গা এবং অন্য বাস্তুচ্যুত মানুষদের তাদের নিজ দেশ বা পছন্দসই জায়গায় স্বেচ্ছা, নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং টেকসই প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আলোচনা করেছেন যৌথ আয়োজকরা।
ভার্চুয়াল এ সম্মেলনে রোহিঙ্গা, তাদের আশ্রয়দাতা এবং মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের জন্য সহায়তা বাড়াতে দেশগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে আয়োজকরা।
জাতিসংঘ এ বছর বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক চাহিদা মেটাতে এক বিলিয়ন ডলারেরও বেশি সাহায্যের আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত অর্ধেকেরও কম অর্জিত হয়েছে।#
পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।