গাজায় শহীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ভয়ানক বিষয়: জাতিসংঘের কর্মকর্তার মন্তব্য
(last modified Fri, 16 Aug 2024 13:05:21 GMT )
আগস্ট ১৬, ২০২৪ ১৯:০৫ Asia/Dhaka
  • গাজায় শহীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ভয়ানক বিষয়: জাতিসংঘের কর্মকর্তার মন্তব্য

জাতিসংঘের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গাজায় শহিদের সংখ্যা ৪০ হাজার অতিক্রম করাকে একটি ভয়ানক বিষয়ক হিসাবে উল্লেখ করে বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করে গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত।

গাজায় হতাহতের সংখ্যা ৪০ হাজারে পৌঁছার বিষয়ে এক বিবৃতিতে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তুর্ক জোর দিয়ে বলেছেন যে, আজ সারা বিশ্বের জন্য এটি একটি তিক্ত ও বেদনাদায়ক ঘটনা। এই অকল্পনীয় পরিস্থিতির জন্য দায়ী মূলত শিশু-হত্যাকারী ইসরাইলের যুদ্ধংদেহী মনোভাব ও মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড। এতে কোন সন্দেহ নেই যে বেসামরিক নাগরিকদের উপর আক্রমণ করা এবং তাদের হত্যা করা যুদ্ধাপরাধী ইসরাইলের জন্য এটা যুদ্ধের বিজয় নয় এবং কোনো সাফল্যও নয়। তবে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও নজিরবিহীন অপরাধযজ্ঞ দখলদার ইসরাইল ও তার সমর্থক পাশ্চাত্য বিশ্বের জন্য কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে এবং ইতিহাস থেকে তা কখনো মুছে যাবে না।

ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলী জামালি বলেছেন, ইহুদিবাদী ইসরাইল গাজা যুদ্ধের চোরাবালিতে আটকা পড়েছে এবং এই অঞ্চলের জনগণ প্রতিরোধের মাধ্যমে ইসরাইলকে পরাজয়ের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু তার শাসনকে দীর্ঘায়িত করার জন্য এবং অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিচার এড়ানোর জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক সমর্থন নিয়ে গাজার বেসামরিক লোকদের হত্যা অব্যাহত রেখেছে।

শিশু-হত্যাকারী ইহুদিবাদী ইসরাইল পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করে এবং একাধিক ন্যাক্কারজনক লক্ষ্য নিয়ে গাজার জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদেরকে পরাজিত করা এবং এটা প্রমাণ করা যে, গাজা যুদ্ধে ইসরাইল বিজয়ী হয়েছে। ইসরাইলের দ্বিতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, অপরাধযজ্ঞ অব্যাহত রাখার মাধ্যমে গাজায় বসবাসকারী জনগণকে তাদের বাসস্থান ত্যাগ করতে বাধ্য করা। ইসরাইলের তৃতীয় লক্ষ্য হচ্ছে, গাজায় এমনভাবে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো যাতে এই এলাকা বসবাসের উপযোগী  না থাকে এবং যাতে আমেরিকার সহায়তায়  যেকোনো অশুভ পরিকল্পনা সেখানে বাস্তবায়ন করা যায়।এ কারণে বলা হয়, ইসরাইল গাজার জনগণের ওপর যে পরিমাণ বিস্ফোরক ফেলেছে, তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত বিস্ফোরকের চেয়েও বেশি।

গত ১০ মাসে গাজার জনগণের অব্যাহত প্রতিরোধের কারণে শুধু যে ইসরাইল পতনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে  তাই নয় একই সাথে খোদ ইসরাইলের বিভিন্ন মহলও তাদের পতনের সূচনার কথা বলছে। এমতাবস্থায় গাজার নিপীড়িত ও অরক্ষিত জনগণকে নিশ্চিতভাবে পরাজিত করার জন্য এবং তাদেরকে পুরোপুরি নির্মূল করার জন্য ইসরাইল গাজার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি এ অঞ্চলের একটি বড় অংশকে অচল করে দেয়া এবং খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে।  এই কারণে,আন্তর্জাতিক বিচার আদালত গণহত্যাসহ নানান অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ইসরাইলকে অভিযুক্ত করেছে এবং গাজায় তাদের নৃশংসতা দ্রুত বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু  তারপরও আন্তর্জাতিক এতো প্রতিবাদ ও নিন্দা সত্ত্বেও গাজায় বেসামরিক মানুষ হত্যা অব্যাহত রয়েছে। 

যাই হোক, আমেরিকা ও ইহুদিবাদী  ইসরাইলকে বর্বরোচিত এই গণহত্যা ও ধ্বংসলীলার জন্যে অবশ্যই একদিন ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং জবাবদিহিতা করতে হবে। গাজায় ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞে বিশ্ববাসীর কাছে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসরাইল বিশ্বের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অপরাধী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলের প্রতি তার সমর্থন অব্যাহত রেখে শুধু যে ইসরাইলের নৃশংসতার সহযোগী হয়েছেন তাই নয় একই সাথে তিনি মানবজাতির ইতিহাসে একজন জঘন্য ও কুৎসিত ব্যক্তিত্ব হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবেন। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের  ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।