পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ, মৃত্যু হল গণধর্ষণে মূল অভিযুক্তের
স্কুলছাত্রী গণধর্ষণের ঘটনায় উত্তাল অসম, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইলেন কুণাল ঘোষ
কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় সমগ্র ভারত যখন উত্তাল তখন অসমে এক স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আর এই ঘটনায় বিজেপি শাসিত রাজ্যটির পুলিশি ব্যবস্থা এবং মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার পদত্যাগের দাবি করলেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
আজ (শনিবার) নিজের এক্স হ্যান্ডেলে আসামের ঘটনাটি প্রসঙ্গে একের পর এক টুইট করেন কুণাল ঘোষ। একটি টুইটে তিনি লেখেন, ‘ছাত্রীকে গণধর্ষণ। অভিযুক্তের পুলিশ হেফাজতে রহস্যমৃত্যু। বাকি নাম ধামাচাপার চেষ্টা? তদন্ত হবে না? আসামের রাত দখল, আসামের জন্য কলকাতায় রাতদখল, প্রবাসী আসামবাসীর বিক্ষোভ, আসামের বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি, হবে না? RGKar বিচার আমরাও চাই। কিন্তু সর্বত্র এক প্রতিবাদ হবে না কেন’?
অপর একটি টুইটে কুণাল ঘোষ আরও লেখেন, ‘অসমে গণধর্ষণ। দুষ্কৃতীদের রাজনৈতিক মদতের অভিযোগ। একজন গ্রেপ্তার। তারপর তাকে পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে নিয়ে যাওয়ার সময় পুকুরে পড়ে তার মৃত্যু। অভিযোগ, বাকি নাম আর ওপরের মাথাদের পরিচয় গোপন রাখার অপারেশন। সব অভিযোগের তদন্ত, ন্যায়বিচার হবে তো? নাকি পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুতেই শেষ’?
উল্লেখ্য, আসামের নগাঁও জেলার ধিংয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়ে সাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল দশম শ্রেণীর এক ছাত্রী। এসময় মোটরসাইকেল আরোহী তিন দুষ্কৃতি তাকে গণধর্ষণ করে পুকুর পাড়ে রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে একজনকে আটক করা হয়। শুক্রবার গভীর রাতে পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন অভিযুক্ত। দীর্ঘ ক্ষণ পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশির পর আজ (শনিবার) সকালে ওই পুকুর থেকেই উদ্ধার হয় তার দেহ। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার স্বপ্ননীল ডেকা।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, “তদন্তের জন্য গত রাতে অভিযুক্তকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেই সময়েই ওই অভিযুক্ত যুবক পুলিশের হাত থেকে পালানোর চেষ্টা করেন এবং কাছেই একটি পুকুরে ঝাঁপ দেন। পুলিশকর্মীরা তাঁকে খুঁজতে সঙ্গে সঙ্গে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছিলেন। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সহযোগিতায় শনিবার সকালে ওই পুকুর থেকে অভিযুক্তের দেহ উদ্ধার হয়।” তবে কীভাবে ওই অভিযুক্ত পুলিশের হেফাজত থেকে পালালেন, সে বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনাটির প্রতিবাদে এবং বাকি দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধের ডাক দিয়েছে স্থানীয়রা। সমাজের নানা স্তরের বিপুল সংখ্যক মানুষ গতকাল (শুক্রবার) অসমের নানা জায়গায় বিক্ষোভ দেখান। দোষীদের কঠোর শাস্তি এবং নারীদের সুরক্ষার দাবিতে ফুঁসছেন অসমের মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন এবং এটিকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, কোনো অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবে না। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই রাজ্যের ডিজিপিকে এই ঘটনার তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভারতের সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, গত দুই মাসে অসম কেবল মহিলাদের উপর ২২টি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটেছে।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৪