ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: সাবেক ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৩
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগের ঘটনায় তিন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে দুইজন হলেন- ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ এবং মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তোফাজ্জলকে সবচেয়ে বেশি আঘাত করেছেন ছাত্রলীগের হল শাখার উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক থেকে পদত্যাগকৃত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ। তার সঙ্গে আরও কয়েকজন এতে জড়িত।
তারা হলেন- মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ফিরোজ, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের আব্দুস সামাদ, ফার্মেসি বিভাগের মোহাম্মদ ইয়ামুজ জামান এবং পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনিস্টিউটের মোত্তাকিন সাকিন, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের রাশেদ কামাল অনিক, গণিত বিভাগের রাব্বি এবং সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের ওয়াজিবুল।
শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়টির তিন শিক্ষার্থীকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এ ঘটনায় তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে গ্রেফতার দেখানো হবে।
এর আগে তোফাজ্জল হত্যার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অ্যাডভাইজার আমানুল্লাহ বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার এজহারে বলা হয়, গতকাল রাত পৌনে ৮টায় ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র তাকে আটক করে। পরে হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে সে মোবাইল চুরি করেছে বলে এলোপাথাড়ি চর থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারে। পরে ওই যুবক মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়।এ ছাড়াও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে হল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে গতরাতে তোফাজ্জল নামে ওই ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু হয়।
ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, তোফাজ্জলকে হলের ভেতরে আটকে রেখে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। মব হামলার পর হল কর্তৃপক্ষ তোফাজ্জলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করে। তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার পরিবর্তে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়। পরে পুলিশের পরামর্শে তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম তোফাজ্জল। তার বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠাল তলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। জানা যায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিলেন।#
পার্সটুডে/এমএআর/১৯