ইসকনের বিষয়ে ভারত সরকার ও ভারতের মিডিয়া এতো উৎসাহী কেন: শায়খে চরমোনাই
ভারত ও আওয়ামী লীগের যৌথ প্রযোজনায় ইসকন তৈরি হয়েছে: মামুনুল হক
-
মামুনুল হক
ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে রিমান্ডে নিলেই সব ষড়যন্ত্র বেরিয়ে আসবে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মামুনুল হক। আজ (শুক্রবার) জুমা নামাজের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে 'ইসকন নিষিদ্ধের দাবি এবং চট্টগ্রামে তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যার প্রতিবাদে' আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মামুনুল হক বলেন, "ভারত এবং আওয়ামী লীগের যৌথ প্রযোজনায় এই ইসকন তৈরি হয়েছে। ভারত থেকে প্রেসক্রিপশন নিয়ে এসে চিন্ময় উসকানি দিয়েছে। ভারত যদি এখনো বাংলাদেশের মানুষকে অসম্মান করার চেষ্টা করে, তাহলে সেটা মেনে নেয়া হবে না।"
এ সময় ভারত বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, তারা মানুষ হত্যায় জড়িত হাসিনাকে প্রশ্রয় দিচ্ছে, আবার নিজেকে দাবি করে বাংলাদেশের বন্ধু!
মামুনুল হক বলেন, ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে কেউ গড়িমসি করলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে হেফাজতে ইসলাম।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার আহ্বান জানান। পাশাপাশি আইনজীবী সাইফুল ইসলাম হত্যায় মদতদাতাদের বিচারের আওতায় আনারও জোর দাবি জানান।
'ইসকনের বিষয়ে ভারত সরকার ও ভারতের মিডিয়া এতো উৎসাহী কেন'

এদিকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই বলেছেন, ভারতের কাছে আমার প্রশ্ন ইসকনের সদস্যরা কি বাংলাদেশের নাগরিক? তারা বাংলাদেশের নাগরিক হলে তাদের ভালো মন্দ, অধিকার ও বিচার বাংলাদেশ করবে। এই ইসকনের বিষয়ে ভারত সরকার ও ভারতের মিডিয়া এতো উৎসাহী কেন?
ঐতিহাসিক চরমোনাই বার্ষিক মাহফিলের তৃতীয় দিন জুমার নামাজ পূর্ব বয়ানে তিনি বলেন, "ভারত নিজেদেরকে বাঘ ভাবে কিন্তু আমি তাদেরকে কিছুই মনে করি না। অতীতে দীর্ঘ সময় মুসলমানরা ভারত শাসন করেছে। ভারত মুসলমানের দেশ। এই ভারত যুদ্ধের মাধ্যমে নয়, ষড়যন্ত্র করে মুসলমানদের হাত থেকে বৃটিশ দখল করেছে। ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠরা মুসলমানদের সাথে যুদ্ধ করে কখনো জয়ী হতে পারবে না।"
সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, "ভারতের তিন দিকে আমরা। আমরা ভারতের পেটের মধ্যে নয় বরং ভারত আমাদের পেটের মধ্যে। ভারতের সাথে আমরা মারামারি করতে চাই না। প্রতিবেশীর সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চাই। আমরা ভারতের গোলামী করতে চাই না। মুসলমান প্রয়োজনে ঘাস খেয়ে থাকবে কিন্তু ভারতের গোলামী করবে না। ভারত যদি বাংলাদেশে রক্তপাত করা বা ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টির অপচেষ্টা করে তবে ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিক ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্র ও দেশের মাটির জন্য ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব।"
তিনি বলেন, "ইসকনের সদস্যরা নিজেদেরকে এদেশের নাগরিক মনে করে কিনা এটা সন্দেহ। এদেশের ভারতের দালালরা সতর্ক হয়ে যান। আমরা মুসলমান সন্ত্রাস ও বৃটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা পিছু হবো না।"
অন্যদিকে, খুলনা জেলা ইমাম পরিষদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, "আমরা ইসকনের বিরুদ্ধে বারবার কথা বলেছি, সতর্ক করেছি। তবুও সরকার সজাগ হয়নি। তাইতো এবার সর্বোচ্চ আদালতের দিকে তাকিয়ে আছি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসকনকে নিষিদ্ধ করার। যদি ইসকনকে আদালত নিষিদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে আলেম সমাজই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।"
বক্তারা আরও বলেন, "ইসকন একটি জঙ্গি সংগঠন। ওই সংগঠনের কর্মকাণ্ড সাম্প্রদায়িক। সুতরাং তারা দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তারা প্রকাশ্যে মানুষ কুপিয়ে মারছে। দেশের পঁচানব্বই ভাগ মুসলমানের দেশে ইসকনের কর্মকাণ্ড চলতে পারে না। বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
আজ (শুক্রবার) বিকেলে নগরীর ডাকবাংলা মোড়ে এ সমাবেশ হয়।#
পার্সটুডে/এমএআর/২৯