পশ্চিমা মিডিয়াকে দেয়া প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকার
'নির্বাচন করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের'
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আওয়ামী লীগ আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত তাদের নিজেদেরই নিতে হবে। পশ্চিমা একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তার এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা ও তার দল অংশ নেবে কিনা সে ব্যাপারটি এখনো পরিষ্কার নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে পরোয়ানা রয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক ইউনুস বলেন, 'তারা [আওয়ামী লীগ] করতে চায় কিনা, সেই সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। আমি সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় কে নির্বাচনে অংশ নেবে।'
অধ্যাপক ইউনুসের ভাষ্য, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। তিনি বলেন, 'যদি আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কারগুলো দ্রুত করা যায়, তবে ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আর যদি সংস্কারের দীর্ঘ প্রক্রিয়া থাকে, তবে আমাদের আরও কয়েক মাস লাগতে পারে।'
তিনি বলেন, 'আমরা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা থেকে উঠে এসেছি। দায়িত্ব গ্রহণের সাত মাস পরও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি না হওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, 'উন্নতি একটি আপেক্ষিক শব্দ। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি গত বছরের একই সময়ের সঙ্গে তুলনা করেন, তবে এটি ঠিক আছে বলে মনে হয়। এখন যা ঘটছে, তা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে আলাদা নয়।'
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য পূর্ববর্তী সরকারকে দায়ী করে তিনি বলেন, 'আমি বলছি না যে এই জিনিসগুলো ঘটা উচিত। আমি বলছি, আপনাকে বিবেচনা করতে হবে, আমরা কোনো আদর্শ দেশ বা আদর্শ শহর নই যা আমরা হঠাৎ তৈরি করেছি। এটি সেই দেশের ধারাবাহিকতা যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি, এমন একটি দেশ যা বহু বছর ধরে চলছে।'
বাংলাদেশে চলমান সহিংসতায় দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং সরকার উল্টো ন্যায্যতা দিচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ যে অভিযোগ তুলছে সে ব্যাপারেও প্রধান উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করে বিবিসি। জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আদালত আছে, আইন আছে, থানা আছে, তারা গিয়ে অভিযোগ করতে পারে, তাদের অভিযোগ নথিভুক্ত করতে পারে। …আপনি অভিযোগ করার জন্য থানায় যান এবং দেখুন আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে কিনা।'#
পার্সটুডে/জিএআর/৬