আসাদ-পরবর্তী সিরিয়ায় সংসদ নির্বাচন:
এক-তৃতীয়াংশ আসনে জন-প্রতিনিধি ঠিক করবেন জোলানি!
-
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান আল-জোলানি
পার্সটুডে- বাশার আল-আসাদের শাসনামলের পতনের পর সিরিয়া আগামীকাল (রবিবার) প্রথম সংসদীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে সংসদের মোট ২১০টি আসনের এক-তৃতীয়াংশ সরাসরি সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান আল-জোলানি কর্তৃক নিযুক্ত হবেন।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই নতুন এবং ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণের কারণ হিসেবে দেশের অস্থিতিশীলতাকে উল্লেখ করেছে।
সিরিয়ান পিপলস অ্যাসেম্বলির হাই ইলেকশন কমিটির মুখপাত্র নাওয়ার নাজমা আল জাজিরাকে বলেন: "নির্বাচন একটি নতুন কৌশলের ভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হবে যার লক্ষ্য হল জনসাধারণের ব্যাপক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যাতে সিরিয়ার সমাজের সকল গোষ্ঠীর প্রতিনিধি পরিষদে থাকতে পারে।"
রাজনৈতিক দল ও দলগুলোর অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কিনা সে বিষয়ে তিনি বলেন: "সিরিয়ার নির্বাচনী দৃশ্যপট বর্তমানে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি কারণ বাশার আল-আসাদের শাসনের পতনের পর, সিরিয়ায় দলীয় আইন প্রণয়ন করা হয়নি, এবং এই কারণে, নির্বাচন প্রক্রিয়াটি হচ্ছে ব্যক্তিগত বিবেচনায় ভোটদানকারী প্রার্থী-ভিত্তিক তথা স্বতন্ত্র প্রার্থী-ভিত্তিক।"
সংবাদ-মাধ্যম আল-আহদাস চ্যানেল বলেছে, আসাদ পরিবারের নেতৃত্বে ৫০ বছর ধরে চলা শাসনামলে সিরিয়ায় একাধিক দফায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল যেখানে সমস্ত সিরিয়ান নাগরিক অংশগ্রহণ করেছিলেন, কিন্তু আসাদের নেতৃত্বাধীন বাথ পার্টি সর্বদা এই নির্বাচনগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করেছিল, যে কারণে কেউ কেউ এসব নির্বাচনকে সরকার-নিয়ন্ত্রিত বলে অভিযোগ করেছিলেন।
সিরিয়ায় অগণতান্ত্রিক নির্বাচন
এই সংবাদ মাধ্যমটির মতে সিরিয়ার এই নির্বাচনকে পুরোপুরি গণতান্ত্রিক বলা যায় না, কারণ দুই তৃতীয়াংশ আসনে নির্বাচন হবে পরোক্ষভাবে তথা ইলেকট্ররাল কলেজের মাধ্যমে। অর্থৎ এইসব আসনে জনগণ সরাসরি ভোট দিতে পারবেন না। অন্যদিকে ৩০০টি আসনের এক তৃতীয়াংশ আসনে জনপ্রতিনিধি কে হবেন তা সরাসরি নির্ধারণ করবেন সিরিয়ার বর্তমান অস্থায়ী সরকারের প্রধান জোলানি নিজে।
কুর্দি নিয়ন্ত্রিত সিরিয়ার সুয়েইদা প্রদেশ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলগুলি বাদ দেওয়ার পর, নির্বাচন কমিশনের ৬,০০০ সদস্য কার্যকরভাবে ৫০টি অঞ্চলে প্রার্থীদের ভোট দেবেন।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকর্তারা সমস্ত রাজনৈতিক দল ভেঙে দিয়েছেন, যাদের বেশিরভাগেরই আসাদ সরকারের সাথে দৃঢ় সম্পর্ক ছিল এবং এখনও নতুন দল নিবন্ধনের জন্য একটি নতুন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি, তাই প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কর্মকর্তারা পরোক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কারণ ব্যাখ্যা করে বলেছেন যে যুদ্ধের কারণে লক্ষ লক্ষ সিরিয়ান নাগরিকের বাস্তুচ্যুতির আলোকে সঠিক ভোটার পরিসংখ্যান প্রদান এবং সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ-ভিত্তিক সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা অসম্ভব। এই সংসদের মেয়াদও হবে ৩০ মাসের এবং এই সময়ের মধ্যে সরকার ভবিষ্যতের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পরিবেশ তৈরি করবে।
অন্যদিকে, সুয়েইদা প্রদেশে প্রার্থীদের অনুপস্থিতি, যেখানে বেশিরভাগ বাসিন্দা দ্রুজ, সেইসাথে উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার প্রার্থীদের অনুপস্থিতির প্রেক্ষাপটে সংসদে সমস্ত সংখ্যালঘুদের উপস্থিতি না থাকায় নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। #
পার্স টুডে/এমএএইচ/০৪
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।