ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে: মাহমুদুর রহমান
https://parstoday.ir/bn/news/event-i155126-ভারত_বাংলাদেশের_বিরুদ্ধে_অঘোষিত_যুদ্ধ_ঘোষণা_করেছে_মাহমুদুর_রহমান
আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির প্রতিবাদে আজ (সোমবার) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত ‘সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ’ তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি অবিলম্বে জাতিসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ উত্থাপন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 
(last modified 2025-12-15T12:36:35+00:00 )
ডিসেম্বর ১৫, ২০২৫ ১৮:৩২ Asia/Dhaka
  • জুলাইযোদ্ধাদের শপথ বাক্য পাঠ করার মাহমুদুর রহমান
    জুলাইযোদ্ধাদের শপথ বাক্য পাঠ করার মাহমুদুর রহমান

আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির ওপর গুলির প্রতিবাদে আজ (সোমবার) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত ‘সর্বদলীয় প্রতিরোধ সমাবেশ’ তিনি এ কথা বলেন। এসময় তিনি অবিলম্বে জাতিসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ উত্থাপন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

ভারত সরকারের প্রতি সরাসরি আহ্বান জানিয়ে মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে “খুনি হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং হাদির ওপর হামলাকারীদের ফিরিয়ে দিন।” অন্যথায় তিনি শপথ করে বলেন, “এই দেশে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

মাহমুদুর রহমান বলেন, "আন্তর্জাতিক আইন বলে আপনি যখন আপনার দেশে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে তাদের মাধ্যমে অন্যদেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবেন তার অর্থ হচ্ছে- আপনি সেই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন।" তিনি অবিলম্বে জাতিসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ উত্থাপন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। 

মাহমুদুর রহমান বলেন, "ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি ঘটেনি। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পর্যাপ্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও তৎপরতার ঘাটতি স্পষ্ট। ফলে অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে শুধু এসব সংস্থার ওপর নির্ভর করে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মরিয়া খুনের কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ক্রমবর্ধমান এ হুমকি রুখতে হলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে সর্বস্তরে জননিরাপত্তার নিজস্ব সংস্থা গড়ে তুলতে হবে।"

এ লক্ষে আগামীকাল থেকে দেশের সবগুলো ওয়ার্ডে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার গণকমিটি’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান আমার দেশ সম্পাদক। এসব কমিটির কাজ হবে-

এক. ফ্যাসিস্ট রাজনীতির নেতাকর্মী ও তাদের সমর্থক এবং অনুচরদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা এবং এদের মধ্যে যাদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে, এদের ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা। এক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ওপর সব ধরনের শারীরিক নির্যাতন থেকে বিরত থাকবেন।

দুই. স্থানীয় প্রশাসনের ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই পতিত সরকারের সহযোগী ও অনুচর হিসেবে গোপনে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা যেনো কোনোভাবেই এসব সন্দেহভাজন অপরাধীকে ছেড়ে দিতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।

তিন. স্থানীয় আদালতগুলোর আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানাতে হবে, যাতে তারা বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব অপরাধীর জামিনের ব্যবস্থা করা বা তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা দুর্বল করার মতো কোনো অসৎ কার্যকলাপে জড়িয়ে না পড়েন। একই সঙ্গে স্থানীয় আদালতের সার্বিক কার্যক্রমের ওপরও কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশের আদালতে প্রমাণিত সবচেয়ে বড় অপরাধী, মহাসন্ত্রাসী ও দুর্ধর্ষ খুনি শেখ হাসিনাকে ভারত যেভাবে আশ্রয় দিয়ে রেখেছে, তা এ মুহূর্তে বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাকে ফিরিয়ে এনে আইন, বিচার ও শাস্তির মুখোমুখি করা না গেলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষিত রাখা সম্ভব হবে না। কারণ, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ বছরের পর বছর, এমনকি যুগের পর যুগ ধরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও নাগরিকদের বিরুদ্ধে যেসব অপরাধ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেগুলোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক, সর্বাত্মক সহযোগী ও প্রশ্রয়দাতা হিসেবে ভারত ভূমিকা রেখেছে এবং বর্তমানেও তারা এই ঘাতকের পেছনে অবস্থান করছে।

তিনি বলেন, খুনি হাসিনাকে যদি ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা না যায়, তবে রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অস্তিত্ব গুরুতর ঝুঁকির মুখে পড়বে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে নির্বাচিত প্রতিটি সরকারকে ভারত ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে নিজেদের শর্তে বাংলাদেশ পরিচালনা করতে বাধ্য করবে—এমন আশঙ্কাও অমূলক নয়। তাই আমাদের দ্বিতীয় কর্মসূচি হবে, ভারতীয় নরেন্দ্র মোদি সরকারকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া যে আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে খুনি শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে হবে।

মাহমুদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সরকারের হাতে এই ঘাতককে তুলে দেওয়ার দাবিতে আজ থেকেই সারা দেশে সভা, সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু করুন। আমরা ২৬ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করে খুনি হাসিনাকে ধরে আনার পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।”

মাহমুদুর রহমান সমাবেশে শরিফ ওসমান হাদির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলেন, “হাদি এতক্ষণে হয়তো সিঙ্গাপুর পৌঁছে গেছে, আল্লাহ আমাদের হাদিকে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন।” বক্তৃতার শেষে মাহমুদুর রহমান সমাবেশে উপস্থিত সবাইকে শপথ পাঠ করান।#

পার্সটুডে/এমএআর/১৫