'অসমে বিভিন্ন সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে ‘জেহাদি’ ইস্যু খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে'
(last modified Sun, 31 Jul 2022 13:04:17 GMT )
জুলাই ৩১, ২০২২ ১৯:০৪ Asia/Dhaka
  • বিধায়ক আমিনুল ইসলাম
    বিধায়ক আমিনুল ইসলাম

ভারতে বিজেপিশাসিত অসমে এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে বলেছেন, রাজ্যে বিভিন্ন সমস্যা থেকে দৃষ্টি ঘোরাতে ‘জেহাদি’ ইস্যু খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে। অসমের মরিগাঁও জেলার মৈরাবাড়ির জামিউল হুদা নামে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষক এবং ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি মুস্তাফাকে জেহাদি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি গ্রেফতার করা হয়েছে। এরপর ওই মাদ্রাসাটিকে ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে এবং ছাত্রদের সাধারণ স্কুলে ভর্তি করা হয়েছে।

গত বুধবার রাতে রাজ্যের অন্যত্র পুলিশি অভিযানে সন্ত্রাসী অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মোট দশ জনকে। জিজ্ঞাসবাদের জন্য আটক করা হয়েছে ১১ জনকে। এ প্রসঙ্গে গতকাল (শনিবার) অসম রাজ্য জমিয়তে উলামার পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারের এ ধরনের তৎপরতায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ বসির আহমদ কাশেমি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সমগ্র মুসলিম সমাজকে জেহাদি বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা মোটেও শুভলক্ষণ নয়। আগেও অনেক মুসলিমকে জেহাদি বলে আটক বা গ্রেফতার করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে তারা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছে। তিনি বলেন, মক্তব বা মাদ্রাসাতে কোনও দেশদ্রোহী শিক্ষা দেওয়া হয় না, সেখানে সম্পূর্ণ ধর্মীয় শিক্ষা ও দেশপ্রেমের নীতি-আদর্শ শিক্ষা দেওয়া হয়। প্রমাণবিহীনভাবে কাউকে জেহাদি বলে ঘোষণা করা উচিত নয়। অন্যদিকে, এআইইউডিএফ বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেছেন, শুধু বিজেপি সরকারের আমলেই নয়, এমনকী কংগ্রেসের জমানাতেও দুর্নীতি, মূল্যবৃদ্ধির মতো ইস্যু থেকে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে দিতে ‘জেহাদি’ ‘সন্ত্রাসবাদী’ বা মৌলবাদী ইস্যু তুলে আনা হয়। ধিঙয়ের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘রাজ্য সাম্প্রতিক বন্যায় শতাধিক লোকের মৃত্যু হয়েছে। মূল্যবৃদ্ধির চাপ ভয়াবহভাবে বাড়ছে। আর্থিক বোঝায় জর্জরিত সরকার। এ সময়ে জেহাদির বিষয়টি সামনে এনে মূল সমস্যাকে আড়াল করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, পুলিশের সর্ববৃহৎ অভিযানে ধরা পড়েছে একঝাঁক জেহাদি। মৈরাবাড়িতে একটি কওমি মাদ্রাসার শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য এই প্রথম কোনও ধর্মীয় মাদ্রাসার শিক্ষককে জেহাদি-যোগের দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে সেই মাদ্রাসাকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বরপেটাতেও বড়সড়  জঙ্গি মডিউল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক, বিভিন্ন ধরনের লেনদেনের প্রমাণ মিলেছে। ধর্মীয় মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে পুলিশের সাঁড়াশি  অভিযান চলছে।

তাঁর দাবি- বাংলাদেশে অরজকতা সৃষ্টির কাজ করছে মৌলবাদীরা। সীমান্ত সংলগ্ন হওয়ায় অসমেও এর প্রভাব পড়ছে। জেহাদি নেটওয়ার্ককে ছিন্নভিন্ন করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। তার এধরণের মন্তব্যের পর থেকে মুসলিম নেতা ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তার প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।#

 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/৩১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।