মণিপুরের সহিংসতা
বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চস্তরীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানাল কংগ্রেস
ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস মণিপুরে সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে বিভিন্ন দাবি সম্বলিত একটি স্মারকলিপি দিয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের নেতৃত্বে কংগ্রেস নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করেন। এ সময়ে প্রতিনিধি দলটি রাজ্যের পরিস্থিতি সম্পর্কে তাকে অবগত করান।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বা কর্মরত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি উচ্চস্তরীয় তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে দলের তরফে ১২ দফা দাবির উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার পাশাপাশি শান্তি ও সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকারকে অবিলম্বে সমস্ত জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ ও সীমাবদ্ধ করার জন্য সমস্ত সম্ভাব্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অবিলম্বে সমস্ত সশস্ত্র বেসামরিক গোষ্ঠীকে প্রতিহত করা নিশ্চিত করতে হবে। পার্বত্য এলাকার আশেপাশের উভয় সম্প্রদায়ের গ্রামে পূর্ণ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা শান্তি বিঘ্নিত করতে না পারে।
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়েছে, বাস্তুচ্যুত লোকদের তাদের নির্ধারিত স্থানে বা নিরাপদ স্থানে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি অনুযায়ী যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যার মধ্যে জীবন, সম্পত্তি এবং অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মণিপুর সহিংসতায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের অবিলম্বে শনাক্ত করে শেষকৃত্যের জন্য তাদের লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। বিপুল সংখ্যক নিখোঁজদের সন্ধানে বিশেষ অভিযান চালাতে হবে বলেও কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হয়েছে।
কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ আজ বলেন, ‘২২ বছর আগেও মণিপুর জ্বলছিল। অটলজি (অটলবিহারী বাজপেয়ী) তখন প্রধানমন্ত্রী। আজ আবার জ্বলছে মণিপুর, এখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর কারণ বিজেপির বিভাজনমূলক ও মেরুকরণের রাজনীতি। মণিপুর জ্বলছিল কিন্তু প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে ব্যস্ত ছিলেন।’
কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার চাইলে মণিপুরে সহিংসতা বন্ধ করতে পারত, কিন্তু সহিংসতা ঘটতে দেওয়া হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতায় থাকার মাধ্যম হয়েছে সহিংসতা বলেও মন্তব্য করেছেন মণিপুর প্রদেশ কংগ্রেস নেতা ভক্ত চরণ দাস।
বিজেপিশাসিত মণিপুরে গত ৩ মে থেকে শিক্ষা ও চাকরিতে সংরক্ষণ ও অন্যান্য সুবিধার জন্য ‘মেইতেই’দের তপশিলি উপজাতি মর্যাদা দেওয়ার প্রচেষ্টা হলে ‘কুকি’ ও ‘মেইতেই’ সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে সহিংসতা শুরু হয়। সহিংস ঘটনায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া শতাধিক বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। কমপক্ষে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ অন্যত্র পালিয়ে গেছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/জিএআর/৩০